সকল মেনু

৫ জানুয়ারিকে ঘিরে রংপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মুখোমুখি

Rongpurইকবাল হোসেন, রংপুর প্রতিনিধি : আগামীকাল সোমবার ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে রংপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপি এ দিনটিতে সভা সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। আর আওয়ামী লীগ বিএনপির জ্বালাও পোড়াও ও নাশকতা প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে। এনিয়ে সাধারন মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। তাদের ধারনা গত ৫ জানুয়ারি নিবার্চনের আগে ও পরে বিএনপির-জামায়াতের সহিংসতা আবার ঘটবে কী না সে আশংকা করছেন তারা। আইন শৃংখলা বাহিনীও রয়েছে সতর্কাবস্থায়।
৫ জানুয়ারিকে ঘিরে রংপুরের রাজনীতির মাঠে উত্তাপ বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন ওই দিনকে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস বলে আখ্যায়িত করে বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের নাশকতা রুখতে মাঠে থাকার ঘোষনা দিয়েছে। অপরদিকে ওই দিনকে গণতন্ত্র ভূলুন্ঠিত দিবস বলে বিএনপি’র পক্ষ থেকে সমাবেশ ডাকা হয়েছে। দু’প্রধান রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রংপুরের পরিস্থিতি। তারা একে অপরকে প্রতিহতর ঘোষনা দিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। ওইদিন নগরীসহ উপজেলাগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে ৫ জানুয়ারি দু’দলের মুখোমুখি অবস্থানে থাকলে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা নাশকতা চালিয়ে রংপুরকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এমন আশংঙ্কা রয়েছে প্রশাসনের। তারা গত  বছরের ৫ জানুয়ারির মত ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশংকা রয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত মিঠাপুকুর, পীরগাছা, রংপুর সদরের হাজীরহাট, দর্শনায় নাশকতার ঘটনা ঘটাতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারনা।
বিএনপি ও অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আগামীকাল সোমবার নগরীর বিভিন্ন স্থানে এবং প্রতিটি উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। তাদের সমাবেশে বাধা দেওয়া হলে সাধারন মানুষকে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আর আওয়ামী লীগ ও এর অংগ সংগঠন সোমবার বিএনপি জামায়াতের সকল নাশকতা জ্বালাও পোড়াও কর্মসুচি জনগনকে নিয়ে প্রতিহত করবে। গত ৫ জানুয়ারির মত আর নাশকতা করতে দেওয়া হবে না।
রিক্সাচালক হামিদ মিয়া জানান, সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচী হলে আমাদের মত খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। কারণ ওইসময় কাজ বন্ধ থাকে। লোকজন বাড়ির বাইরে বের হয় না। আমাদের রোজগারও কমে যায়।
মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিলন জানান, ৫ জানুয়ারি দু’দলের কর্মসূচীকে ঘিরে আমরাও উদ্বিগ্ন।
বিএনপির জেলা সভাপতি এমদুদুল হক ভরসা এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন জানান, আমরা অবশ্যই বিক্ষোভ সমাবেশ করব শান্তিপুর্নভাবে। একইভাবে উপজেলাগুলোতেও তা পালন করা হবে সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  তারা বলেন, আমাদের শাস্তিপুর্ন কর্মসুচিতে কোন ধরনের বাধা দেওয়া হলে জনগনকে সাথে নিয়ে আমরা তা প্রতিহত করব। কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
এব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও দফতর সম্পাদক তৌহিদুর রহমান টুটুল বলেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত রাখতেই রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন। নাশকতা প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগের এটা ফাইনাল খেলা বলেও উল্লেখ করেন তারা। বার বার হরতাল, অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের নামে বিএনপি-জামাাতের নাশকতা আর বরদাস্ত করা হবে না। নাশকতা রুখতে আওয়ামী লীগের সাথে রংপুরের সাধারণ জনগণ রয়েছে। জনগনকে সাথ নিয়ে আমরা এসব অরাজকতা প্রতিরোধ করব।
রংপুরের পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রধান দু’রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছে। নগরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে যা করণীয় তা করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
৫ জানুয়ারি সোমবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১ বছর পূর্তি হবে। গত বছরের এদিনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্র্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীর প্রেক্ষিতে বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতারা এ নির্বাচন বয়কট করে আন্দোলনে নামে। দফায় দফায় পুলিশ ও নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উপর হামলা, ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ বিভিন্ন সংহিসতায় চালায় তারা। এতে পুলিশ সাধারন মানুষসহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়। এতে করে ওই সময় রংপুর বিভাগ আতংঙ্কিত এলাকায় পরিণত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top