সকল মেনু

হুমকির মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়!

হটনিউজ,ঢাকা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে ছিনতাই-চাঁদাবাজি। আবাসিক হলগুলোতে চুরির ঘটনা নিতনৈমিত্তিক।
ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে চলাচল করছে গণপরিবহন। রয়েছে ভিক্ষুক ও বহিরাগতদের উৎপাত। নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের এই সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।সম্প্রতি ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সুধাংশু শেখর রায় টিএসসি এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন।রিকশাযোগে জগন্নাথ হলে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীরা অস্ত্র ঠেকিয়ে তার মানিব্যাগে থাকা টাকা নিয়ে যায়। গত ২৪ নভেম্বর রাতে ফুলার রোডে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল সিকিউরিটি টিমের বিরুদ্ধে। ওই দিন রাতেই ভুক্তভোগীরা উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।ছিনতাইয়ের শিকার আবু সাইমুন জানান, তার এক বন্ধুকে নিয়ে রাতে ফুলার রোডের ঈসা খাঁ আবাসিক এলাকায় বসে ছিলেন তিনি। এ সময় সিকিউরিটি টিমের সদস্যরা আমাদের বসার কারণ জানতে চান এবং একপর্যায়ে তল্লাশি শুরু করেন। এ সময় তারা আমার মানিব্যাগ থেকে ছয় হাজার টাকা এবং বন্ধুর কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে নেন।এর প্রতিবাদ জানালে আমাদের ‘মাল’ দিয়ে থানায় দেওয়ার হুমকি দেন টিমের সদস্যরা। পরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এর আগেও ভিসি চত্বর, ফুলার রোড, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেতসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ল্যাপটপ ও ব্যাগসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। বেশির ভাগ সময় ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেলযোগে এসে চলন্ত অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র টান দিয়ে নিয়ে যায়। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় এসব ঘটনা ঘটছে বলে ভুক্তভোগী মহলের অভিযোগ। এসব ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে ব্যর্থ পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিয়মবহির্ভূতভাবে এখন সব ধরনের গণপরিবহন ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে চলাচল করছে। এ বাসগুলো অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চলাচল করে। ফলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ ছাড়া ভিক্ষুক যন্ত্রণায় রীতিমতো অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। ভিক্ষার ছলে এক ধরনের জিম্মি করে টাকা আদায় করে তারা। টাকা না পেলে অনেক সময় খারাপ আচরণের শিকার হতে হয় তাদের। এর সঙ্গে রয়েছে ফুল, চকলেট ইত্যাদি বিক্রির নামে পথশিশুদের উৎপাত। দিনদুপুরে ল্যাপটপ, মানিব্যাগ, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র চুরির ঘটনাও ঘটছে প্রায়শই। এদিকে টিএসসি, কলাভবন, কার্জন হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় রাতযাপন করে শতাধিক ছিন্নমূল মানুষ। রাতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত যাত্রী ছাউনিগুলো তাদের দখলে থাকে। এতে এগুলোর আশপাশে নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। হলে কিংবা রাস্তায় কোথাও কার্যকর নিরাপত্তা নেই। ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও চুরি ঠেকাতে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ বলেন, এ কথা সত্য যে আমরা বহুমুখী সমস্যায় আছি। তবে সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ছিনতাই-চাঁদাবাজি বন্ধ করতে আমাদের তৎপরতার অভাব নেই। কোনো অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করি।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসে প্রবেশের কয়েকটি রাস্তায় থাকা নিরাপত্তা বারগুলো ভেঙে যাওয়ায় এবং নিরাপত্তা কর্মীর অভাবে বাসগুলো অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাস দিয়ে চলাচল করতে পারছে। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করব। -বিডি-প্রতিদিন

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top