সকল মেনু

আইএসবিরোধী অভিযানে দ্বিধায় বাংলাদেশ

 মেহেদি হাসান: আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমনে দ্বিধায় বাংলাদেশ। দেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়েদা, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, লস্কর-ই-তৈয়বার পর এবার বহুল আলোচিত জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অস্তিত্ব টের পেয়েছে ঢাকা। দেশে এসব আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আস্তানা গাড়লেও তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে অভিযানে অংশ নেবে কি না তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইসলামিক স্টেটের দুই জঙ্গি গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ার ঠিক আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশকে আইএসবিরোধী আন্তর্জাতিক জোটে অংশ নেওয়া আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে তাতে এখনো সায় দেয়নি বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইসলামিক স্টেটের (আইএস বা আইসিস) বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাঁচটি আরব রাষ্ট্রসহ ৫৪টি দেশ। এই জোটে অংশ নিতে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশকেও। তবে বাংলাদেশ তার জঙ্গিবিরোধী অবস্থান পরিষ্কার করলেও বৈঠকে অংশ নেয়নি। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রশিদ (অব.) বলেছেন, আইএসবিরোধী জোটে বাংলাদেশ যোগ দিলে জঙ্গিদের টার্গেটে পরিণত হতে পারে। আর বারাক ওবামা আইএসবিরোধী যে জোটের কথা বলছেন, সেখানে তার লক্ষ্য স্পষ্ট নয়। তাই অস্পষ্ট কোনো বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত না হওয়ার বাংলাদেশের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত সঠিক। সন্ত্রাসবিরোধী জোটে যোগ দেওয়ার আগে অতন্ত দুবার ভাবতে হচ্ছে ঢাকাকে।

তিনি বলেন, ‘সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযানে রাশিয়া এবং ভারতের নীতি ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এই দুই দেশের নীতিকে অনুসরণ করবে বলেই মনে হয়।’

তিনি এও মনে করেন, ‘বারাক ওবামা তার অবস্থান যত দ্রুত স্পষ্ট করবেন, তত দ্রুত আরো অনেক দেশ আইএসবিরোধী জোটে অংশ নেবে। আর বাংলাদেশকে তার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং জঙ্গি দমনে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা এবং তথ্য ব্যবহার করতে হবে। একই সঙ্গে সতর্কও থাকতে হবে বাংলাদেশকে।’

এদিকে আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে  আসিফ আদনান ও মো. ফজলে এলাহী তানজিল নামে দুই যুবককে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দারা। তারা সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। একই সঙ্গে বাংলাদেশে আইএসের কার্যক্রম বাড়ানোর অপতৎপরতায় লিপ্ত ছিল।

এর আগে, গোয়েন্দারা গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুল্লাহ আল-তাসনিম ওরফে নাহিদসহ সাতজনকে আটক করে। আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন বলে গ্রেফতারের পর জানিয়েছেন।

পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, দেশের জঙ্গিরা এখন আইএসের জঙ্গি তৎপরতার উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের দিকে ঝুঁকছে।

আইএসকে মোকাবিলায় বহুজাতিক জোট গঠনের পরিকল্পনার রূপরেখা দুই সপ্তাহ আগে ঘোষণা করেন বারাক ওবামা। জাতিসংঘ অধিবেশনে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনও আইএস নিয়ে তার উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন।

বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর সম্মতিতে ইসলামিক স্টেটে বিদেশি যোদ্ধাদের যোগদান নিষিদ্ধ করে শর্ত সাপেক্ষে একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top