সকল মেনু

‍তারা হরতালে ঢাকায় থাকতে চায় না

 স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,হটনিউজ২৪বিডি.কম, ঢাকা: সারিবদ্ধ হয়ে এক সমান্তরাল রেখার মতন বসে আছেন তারা। যাবেন গ্রামের বাড়ি। তবে সবাই একই অঞ্চলের। উত্তরবঙ্গ। তাই কেউ যাবেন রংপুরে, কেউ লালমনিরহাট, কেউবা আবার বগুড়ায়। রাতে দূরের যাত্রায় কোনো বাস পাননি তারা। তাই এসেছেন কারওয়ান বাজারে। ট্রাকই তাদের একমাত্র ভরসা। বুধবার রাত ৩টার দিকে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা গেল প্রায় শ’খানেক দিনমজুর, রিকশাচালকসহ বিভিন্ন পেশার নিন্ম আয়ের মানুষ ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছেন।

কয়েকজন আগন্তুকের সাথে কথা বলে উত্তর পাওয়া গেল, ‘কী আর করবেন, টানা ‘চার দিনের’ হরতাল দিসে জামাত! তাই বুধবার রাইতেই যাইতে হবে বাড়িতে। হরতালে কাজ পাওয়া যায় না।

তাদের সাথে কথা বলতে বলতে দু’টি ট্রাক ছেড়েও গেল। পরের ট্রাকের যাত্রী সাইদুল মণ্ডল। গ্রামের বাড়ি রংপুরে যাবেন। বৃহস্পতিবার থেকে হরতাল বিধায় কাজ তেমন পাওয়া যাবে না। তাই আর ঢাকায় থাকতে চান না।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে নাকি চার দিনের হরতাল। তাই এসময় ঢাকায় থাকতে চাই না। ঢাকায় সাইদুল রিকশা চালান। সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছেন শুনে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন-সেটা জানালেন কিছুটা গর্বের সাথেই।

হারুন নামের একজন বললেন, হামাগরে জীবনের নিরেপইত্তে নাই। তাছারা ছাওল পাওল দেকবার পাবু বাড়িত গেলে। ঢাকাত এহন থাইকব্যার চাইনে মুই।’ হারুনও রিকশা চ‍ালান মগবাজার এলাকায়।

হরতাল তো চারদিন না। বৃহস্পতিবার ও রোববার-এ কথা জাননো হলে ঝটপট উত্তর-শুক্র, শনিও তেমন কাজ থাকে না। সব মিলিয়ে তো চারদিনই হলো। তাই ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জের বাড়িতে যেতে চান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দারোয়ান ইসমাইল। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা নাই। আবার বেশ সময়ও পাওয়া গেল। তাই বাড়িতে যামু।’

তবে এই ট্রাক জার্নির শুরুটা স্বচক্ষে দেখলে যে কোনো ব্যাক্তিই বুঝবেন ঢাকাকে মানুষ কতটা অরক্ষিত ও অনিরাপদ ভাবেন। নেহাত জীবন আর পরিবারকে নিয়ে কতটা ভয় থাকলে কেউ এতটা কষ্ট করে হলেও বাড়িতে যেতে চান। যেখানে ঠিকমত বসার ব্যবস্থা নেই, ঘুমানোর নেই কোনো উপায়। আবার রয়েছে বিরক্তিকর ঝাঁপি। হরতালের কারণে তারা এভাবেই ঢাকা ছাড়ছেন দেখলে বা শুনলে যে কারোরই প্রশ্ন জাগবে-ঢাকায় জীবনের নিশ্চয়তা কী!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top