সকল মেনু

ধর্মপুত্রকে মোদি মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেবেন

 কলকাতা প্রতিনিধি : এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জিৎ বাহাদুরের অভিভাবক ছিলেন তিনিই। সেই জিতের সঙ্গে তার পরিবারের পুনর্মিলনের ব্যবস্থাও করেছেন তিনিই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। ১৭ বছর পরে নেপাল যাচ্ছেন কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। কূটনৈতিক দিকের পাশাপাশি এই সফরের ব্যক্তিগত দিকটির কথা নিজেই টুইটারে জানিয়েছেন মোদি। তার কথায়, ‘বেশ কয়েক বছর আগে একটি বালককে উদ্ধার করেছিলাম আমি। তার নাম জিৎ বাহাদুর। সে ভারতীয় ভাষা জানতো না। কোথায় যাবে, কী করবে তা-ও জানা ছিল না।’ মোদি জানিয়েছেন, তিনি জিতের পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছিলেন। সে গুজরাতিও শিখে নিয়েছিল। তার পরিবারেরও খোঁজ চলছিল। শেষ পর্যন্ত নেপালে খোঁজ পাওয়া যায় জিতের পরিবারের। মোদি ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, নেপালের নওয়ালপরাসি জেলার কাওয়াসোতি পুরসভা এলাকার এক হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে জিৎ বাহাদুর মাগার। পেটের দায়ে ১৯৯৮ সালে বড় ভাই দশরথের সঙ্গে ভারতে আসেন তিনি। রাজস্থানে কিছু দিন কাজও করেছিলেন। কিন্তু কাজের চাপ সামলাতে না পেরে পালায় তিনি। নেপালে ফেরার জন্য উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরগামী ট্রেনে উঠতে চেয়েছিল তিনি। কিন্তু ভুল করে উঠে পড়ে আমদাবাদগামী ট্রেনে।

গুজরাতে এসে একেবারে অথৈ জলে পড়েছিল জিৎ। ভাগ্যক্রমে আমদাবাদ স্টেশনে তার সঙ্গে দেখা হয় মোদির সহযোগী এক মহিলার। তিনিই জিতকে মোদির কাছে নিয়ে যান। তখনও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হননি ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী।

টুইটারে মোদি বলেছেন, ‘ঈশ্বরের নির্দেশেই জিতের ভার নিয়েছিলাম আমি।’  ধর্মপুত্রের লেখাপড়ার সমস্ত ভার নিয়েছিলেন তিনি। এখন জিতের বয়স ২৭। আমদাবাদে ম্যানেজমেন্ট পড়ছেন তিনি। মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়ে দিল্লিতে চলে আসার পর থেকে জিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থাকেন। এক সাক্ষাৎকারে জিৎ বলেছেন, ‘মোদিজি আমার বড় ভাইয়ের মতো। ওঁর সাহায্য ছাড়া আমি যা হয়েছি তা হতে পারতাম না। এ বার পরিবারের সঙ্গে যখন দেখা হবে তখন বড় ভাইও সঙ্গে থাকবেন। এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।’

জিতের পরিবারের খোঁজ একদিনের জন্যও বন্ধ করেননি মোদি। ২০১১ সালে গুজরাতে ফিকির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন নেপালের ব্যবসায়ী বিনোদ চৌধুরী। মোদিকে নেপালে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি। মোদি তাকে জানান, তিনি যেতে রাজি। তবে চৌধুরীকে তার ধর্মপুত্রের পরিবারের খোঁজ দিতে হবে। ৩০ ঘণ্টার মধ্যেই সব খবর নিয়ে মোদির সঙ্গে যোগাযোগ করেন চৌধুরী। জিতের পায়ে ছ’টি আঙুল থাকায় শনাক্ত করার সুবিধে হয়েছিল বলে টুইটারে জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীই। জিতের খোঁজ পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিল তার পরিবার। মোদির চেষ্টায় ফের হারানো ছেলের কথা জানতে পারে তারা।

এ বার নেপাল সফরে গিয়ে জিতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান বলে আগেই জানিয়েছিলেন মোদি। তাই কাওয়াসোতি গিয়ে জিতের মা খাগিসারা, ভাই দশরথ, দশরথের স্ত্রী ও জিতের বোন প্রেম কুমারীর সঙ্গে দেখা করেন ভারতীয় দূতাবাসের অফিসাররা। তাদের ছবি ও নাগরিকত্বের প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়। আগামীকাল কাঠমান্ডু আসবেন ওই চার জন। জিতের সঙ্গে তার মায়ের পুনর্মিলনের সাক্ষী হতে চান মোদি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top