সকল মেনু

নিজেই তৈরি করুন একটি দারুণ সূর্য ঘড়ি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ২৯ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : বাগান সাজাতে কী কী লাগে বলুন তো? অনেকে বিভিন্ন রকম গাছ দিয়েই দিব্যি সাজিয়ে ফেলেন নিজের এক চিলতে বাগান। কিন্তু এই বাগানের মধ্যেও যদি বৈচিত্র্য আনতে চান, তবে নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন একটি সূর্যঘড়ি বা সানডায়াল!

সূর্যের প্রাকৃতিক আলোকে কাজে লাগিয়ে সময় জেনে নেওয়ার এই প্রাচীন যন্ত্রটি একেবারেই সরল। আপনার বাগানে নতুনত্ব আনার পাশাপাশি বেশ মজা পাবেন এটি তৈরি করে। আর বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তো কথাই নেই, সূর্য কিভাবে সময় মেনে আকাশের একদিক থেকে আরেক দিকে যায় তা হাতেনাতে শিখে ফেলতে পারবে খেলার ছলে। দিনের বারো ঘণ্টার হিসেব যেমন এতে রাখতে পারেন, তেমনি বাচ্চার সকালের নাশতা, স্কুলে যাবার সময়, খেলার সময়, গোসলের সময় এগুলো নিয়েও তৈরি করতে পারেন এই সূর্যঘড়ি।

বিজ্ঞান মানেই কি কেবল ভারী ভারী বইয়ের মাঝে থাকা দুর্বোধ্য সব নিয়মনীতি? নাকি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা মানেই শুধু ফিটফাট ল্যাবরেটরি আর বোতলে বোতলে ভরা সব রাসায়নিক? কোনটাই নয়! একদম সাধারণ কিছু উপাদান দিয়ে আপনি নিজেই তৈরি করতে পারবেন মজাদার একেকটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা। আর এই কাজ টি করার জন্য কোনও ল্যাবরেটরি প্রয়োজন হবে না, আপনার নিজের রান্নাঘরটিই যথেষ্ট! ফুলের টব আর নানান রকমের ফেলনা জিনিসপত্র দিয়ে দিব্যি তৈরি করে ফেলুন মজার একটি সূর্যঘড়ি।

যা যা লাগবে

– ১৩ টা পোড়ামাটির টব। ( ৪টা বড়, ৯ টা মাঝারি)
– সুন্দর গোলাকার পাথর
– কাঠ, বাঁশ বা মেটালের একটা খুঁটি (৩/৪ ফুট লম্বা)
– রঙ, তুলি বা রঙিন চক
– নুড়িপাথর অথবা বড় চাকতির মতো করে কাটা পার্টিকেল বোর্ড
– সূর্যের আলোয় থাকতে ভালোবাসে এমন ফুলগাছ
– গাছ লাগানোর মাটি, খুরপি এবং আনুষঙ্গিক উপকরণ
– ঘড়ি

যা করতে হবে

১) ঘণ্টাগুলো এঁকে ফেলুন
ঘরিতে যেমন একেক ঘণ্টার জায়গায় একেকটি সংখ্যা স্থাপন করা থাকে, আপনার সেই ঘণ্টাগুলোর জায়গায় স্থাপন করা থাকবে একেকটি ফুলের টব। বড় ৪ টি টবের গায়ে এঁকে দিন ৩, ৬, ৯ এবং ১২ এই চারটি সংখ্যা। আঁকার জন্য বাংলা, ইংরেজি বা রোমান হরফ ব্যবহার করতে পারেন। এরপর মাঝারি ৮ টি টবেও এভাবে বাকি ৮টি সংখ্যা এঁকে ফেলুন। গাছ লাগাতে না চাইলে উল্টো করে লিখবেন। টবের বদলে পাথরেও এভাবে রঙ করে সংখ্যা লিখে নিতে পারেন।

২) গাছ লাগান
টবগুলোতে এবার ইচ্ছেমত গাছ লাগিয়ে ফেলুন। বড় টবগুলোতে এক রকম, মাঝারিগুলোতে আরেক রকম গাছ লাগালে ভালো হয়। সবচাইতে ভালো হয় যদি বড়গুলোতে বড়, ঝোপানো ধরণের গাছ আর মাঝারিগুলোতে ছোট ধরণের গাছ লাগানো যায়। ইচ্ছে করলে একই ফুলের বিভিন্ন রঙের প্রকরণ লাগাতে পারেন। এতো ঝামেলা করতে না চাইলে শুধু বড়গুলোতে গাছ লাগান আর ছোটগুলোকে উল্টো করে রেখে দিন।

৩) তৈরি করুন সূর্যঘড়ির ভিত্তি
ঘড়ির মতো গোলাকার একটা ভিত্তি যে লাগবে আপনার সূর্যঘড়িরও। বেশ রোদ আসে এমন জায়গায় সাদা নুড়িপাথর বিছিয়ে অথবা সাদা একটা গোল পার্টিকেল বোর্ড বিছিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন ভিত্তি। এর ওপরে হালকা রঙের ওয়াটারপ্রুফ রঙ করে নিতে পারলে ভালো। এর মাঝে আপনার রাখতে হবে Gnomon বা ঘড়ির কাঁটা।

একটা মাঝারি টবে এখনো কিছু করা হয়নি, তাই না? ওর ভেতরে মাটি বা নুড়িপাথর দিয়ে তাতে পুঁতে দিন খুঁটিটি। এই খুঁটির ছায়া ঘড়ির কাঁটার মতো কাজ করবে। এই টবটাকে রেখে দিন গোল ভিত্তির একবারে মাঝখানে।

৪) সময় ঠিক করুন

এবার হলো মজার কাজ, ঘড়ির সময় ঠিক করা! সকাল ৯টার সময়ে দেখুন ওই Gnomone এর ছায়া কোথায় আছে, এরপর ঠিক সেখানে ৯ চিহ্নিত করা বড় টবটি রেখে দিন। এভাবেই এক ঘণ্টা পর পর দেখুন ছায়া কোথায় আছে আর সেখানে একটা করে টব দিয়ে সময়টা চিহ্নিত করে ফেলুন। ব্যাস, হয়ে গেল!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top