সকল মেনু

২৫ মার্চ : শোকের সেই রাতটি

ঢাকা, ২৫ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। বাঙালির ইতিহাসে রক্তাক্ত কালরাত। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আজ অনেক বছর। বদলে গেছে প্রজন্মও। অথচ সেই ৪৩ বছর আগে ঘটে যাওয়া সেই বর্বর ঘটনার কথা আজও ভোলেনি কেউ। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে গেছে ইতিহাস। কেঁপে উঠেছে হাজারো বুক সেদিনের ভয়াবহতায়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তান সরকারের পাঠানো একদল হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এ দেশের মানুষের ওপর। নিজেদের সুসজ্জিত বাহিনী আর তাদের এ দেশের দোসররা মিলে পিশাচের মতো হত্যা করেছে হাজার হাজার নিরস্ত্র মানুষকে। যে হত্যাযজ্ঞ আর অবিচার তারা করেছে তা আজও পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম ঘৃণিত ঘটনা।

সে রাতে এ দেশের যত মানুষ শহীদ হয়েছেন তার সমতুল্য কোনো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
২৫ মার্চের এই গণহত্যার রাত থেকেই স্বাধীন দেশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার আশার আলো দেখেছে ‘বাংলাদেশ’। রাত ১১টা ৩০ মিনিটে জলপাই রঙের ট্যাংক, কামান, বন্দুক আর ট্রাকভর্তি সৈন্যসহ হানাদার বাহিনী বেরিয়ে পড়ে ক্যান্টনমেন্ট থেকে। তারা আঘাত হানে জিরো আওয়ার বা রাত ১টায়। গণহত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বাস্তবায়নের জন্য প্রথমেই সাঁড়াশি অভিযান চালায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। শত্রুর সেই সুসজ্জিত বাহিনীর ভারী মেশিনগান আর ট্যাংকের সামনে যেখানে টেকাই দায়, সেখানে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেয় বাঙালি পুলিশ বাহিনী। সামান্য রাইফেল দিয়েই প্রতিহত করতে চেষ্টা করে পাকিস্তানি বাহিনীকে। প্রাণান্ত চেষ্টা করেন ওই বাহিনীকে আটকে রাখতে। কিন্তু তাতেও প্রাণ হারান অনেকেই।

বাঙালির স্বাধীনতার এই আন্দোলনের মূল কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপরও হামলা করে এই হায়েনারা। ইকবাল হল, জগন্নাথ হলে চালায় বর্বর অত্যাচার। এমনকি ছাত্রীদের রোকেয়া হলও এদের নৃশংসতা থেকে মুক্তি পায়নি। এক রাতে ৩০০-এর বেশি ছাত্রছাত্রী শহীদ হন। আর তাদের সঙ্গে শহীদ হতে হয় বিভিন্ন বিভাগের আরো অন্তত নয়জন শিক্ষার্থীকে।

পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের সদর দপ্তর পিলখানায়ও নৃশংস হত্যা চালায় পাকিস্তানি সেনারা। এখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ইপিআরের বাঙালি সদস্যরা।

পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের সদর দপ্তর পিলখানায়ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি সেনারা। এখানেও সামান্য সম্বল নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ইপিআরের সদস্যরা।

২৫ মার্চ কালরাত শুধু ১৯৭১ সালের জন্যই কালরাত ছিল না। সমস্ত বাঙালির জন্য আজও এ রাতের ভয়াবহতা আর শোক কোনো অংশে কম নয়। এ দেশের ইতিহাসে একটি স্বাধীন দেশ হবার সূত্রপাত তো এ রাতই ছিল। শুধু শহীদদের পরিবার বা স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আন্দোলন করা মানুষদের কাছেই নয়, এ দিনটির তাৎপর্য মিশে আছে সমস্ত বাঙালির অস্তিত্ব, প্রাণ, ভাবনা, বিশ্বাস আর ভালোবাসায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top