সকল মেনু

সরকারের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় সচিবরা

ঢাকা, ১২ মার্চ  (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : সাধারণত নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের প্রায় দুই মাস হয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবদের সঙ্গে কোনো বৈঠকে বসেননি। বৈঠক না হওয়ায় প্রশাসন চালানোর ব্যাপারে কোনো দিকনির্দেশনাও পাননি তারা। তাই নতুন সরকারের নীতি সম্পর্কে এখনো অন্ধকারে রয়ে গেছেন সরকারের লক্ষ্য ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব পালনকারী সচিবরা।

কয়েকজন সচিবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত মহাজোট সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ীই তারা এখনো তাদের কর্মকা- পরিচালনা করছেন। তারা নতুন সরকারের আগামী দিনের প্রশাসন পরিচালনা সম্পর্কে দিকনির্দেশনা চান। তারা আশা করছেন শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে বসবেন। বৈঠকে তারাও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইবেন। কারণ বিগত মহাজোট সরকারের সময় প্রশাসনের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত সমালোচিত হয়েছে।

গত ১২ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণের পর থেকেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবদের বৈঠক হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা গত ২৫ জানুয়ারি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। তিনি সময় দিলেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখনো তা হয়নি।

গত মঙ্গলবার যায়যায়দিনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সচিবদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকটি হবে। তবে এখনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী তার সুবিধামতো সময়ে বৈঠকটি করবেন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত মহাজোট সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পাঁচদিন পর ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি সচিবদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন এবং ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ পরিত্যাগ করে প্রজাতন্ত্রের কাজে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে পেশাদারি মনোভাব অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান।

এর আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তিনি সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করে দেশকে এগিয়ে নিতে ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ প্রশাসন গড়ে তুলতে সচিবদের নির্দেশ দেন। একইভাবে ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণের পরেই সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করে খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশ্য ও নীতি সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।

এ ব্যাপারে সরকারের একজন সিনিয়র সচিব যায়যায়দিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদিও আগের সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তারপরও তার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। কারণ পাঁচ বছর আগে যারা সচিব ছিলেন এখন তাদের অনেকেই নেই। অধিকাংশ সচিব নতুন। তাই প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা সচিবদের কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া গত পাঁচ বছরে প্রশাসনের অনেক সিদ্ধান্ত সরকারকে বিব্রত করেছে। এই বিষয়েও তিনি নতুন কোনো নির্দেশনা হয়তো দেবেন। তারাও (সচিবরা) কিছু বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবেন।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, গত পাঁচ বছরে পদোন্নতি নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। সরকার এবার পদোন্নতির বিষয়ে নতুন কোনো ফর্মুলায় এগুবে কিনা, সেটা জানা দরকার।

সচিবদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক বিলম্ব হওয়ায় প্রশাসনে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার যায়যায়দিনকে বলেন, প্রভাব তো অল্প কিছুটা হলেও পড়বেই। বৈঠকটি দ্রুত হওয়া দরকার। তবে প্রশাসন হওয়া দরকার দলীয় প্রভাবমুক্ত। কারণ দলীয় বিবেচনায় প্রশাসন চললে সৎ এবং নিরেপক্ষ প্রশাসন গড়ে উঠে না। আর তা না হলে দেশের উন্নয়নও আশা করা যায় না।(যায় যায় দিন)

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top