সকল মেনু

চিনি থেকে তৈরি হতে পারে ভবিষ্যতের ব্যাটারি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ৩ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) :  শক্তি উৎপাদনে এখন এমন উপাদান ব্যবহার করার কথা বলা হচ্ছে যা পরিচ্ছন্ন, কার্যকর এবং পরিবেশ দূষণ করবে না, অথবা কম করবে। এ কারণে বিজ্ঞানীরা ঝুঁকছেন বায়োব্যাটারির দিকে। কি এই বায়োব্যাটারি? এগুলো হলো এমন শক্তি উৎপাদনে সক্ষম বস্তু যা জৈব শক্তিকে ব্যবহার করে। খুব বেশি শক্তি উৎপাদন করতে না পারলেও পরিবেশ রক্ষার জন্য এগুলো ভালো। তবে এখন এমন এক বায়োব্যাটারি তৈরি করতে পারা গেছে যা একই সাথে হালকা এবং তৈরি করতে পারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শক্তি। এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহার্য সেলফোনগুলোতেই। আর এই ব্যাটারির শক্তি যোগাবে চিনি!

ভার্জিনিয়া টেক এর গবেষক পার্সিভাল ঝ্যাং এবং ঝিগুয়াং ঝু এই নতুন বায়োব্যাটারি তৈরি করেছেন যা সাধারণ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিকে টেক্কা দিতে সক্ষম হবে। Nature Communications জার্নালে প্রকাশিত হয় এই গবেষনার তথ্য।

শরীরে মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়ার মাধ্যমে চিনি থেকে শক্তি উৎপাদন হয়। সেখানে চিনি থেকে তৈরি হয় কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি, আরও তৈরি হয় ইলেকট্রন। বায়োব্যাটারিতেও সেই একই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াতে তৈরি হওয়া ইলেকট্রন যোগাবে ব্যাটারির শক্তি। এই ব্যাটারি যেহেতু তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ জৈবিক উপাদান থেকে সুতরাং এগুলো হবে একেবারেই নিরাপদ এবং নবায়নযোগ্য। সাধারণত আমরা যেসব ব্যাটারি ব্যবহার করি সেগুলো তৈরি করতে এবং সচল রাখতে ব্যবহার করতে হয় বিভিন্ন ধাতু এবং কৃত্রিম রাসায়নিক যা পরিবেশের জন্য এবং মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এদের তুলনায় বায়োব্যাটারি অনেক ভালো শক্তির উৎস।

শুধু তাই নয়, এসব ব্যাটারির চার্জও থাকবে সাধারণ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির চাইতে বেশি সময় ধরে। আপনার বর্তমান ফোনের ব্যাটারি যদি রিচার্জ করার পর এক দিন চলে, তবে এই বায়োব্যাটারি ব্যবহারে ফোন ১০ দিন চলবে অনায়াসে!

কি করে এতটা কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে একটি বায়োব্যাটারি? এক্ষেত্রে কাজে আসছে আরও একটি জৈবিক প্রক্রিয়া। বিভিন্ন ধরনের ১২ টি এনজাইম ব্যবহার করে এই ব্যাটারির বিক্রিয়া স্থিতিশীল এবং কার্যকর রাখা হয়। আর মানব শরীরের চাইতে অনেক কম পরিমাণে এনজাইম এখানে ব্যবহৃত হয় বলে এই প্রক্রিয়াটি আরও বেশি শক্তিশালি।

তবে এই ব্যাটারি সবার ব্যবহারের জন্য আসতে আরও কিছুটা দেরি আছে। কারণ এখনও বড় দুটি বাধা অতিক্রম করতে হতে পারে বিজ্ঞানীদের। এক হলো, এই ব্যাটারির আয়ু অনেক কম, আর কিছু কিছু যন্ত্রে ব্যবহারের জন্য এগুলো এখনও উপযুক্ত নয়। এসব বাধা অতিক্রম করে উঠতে পারলেই চিনি দিয়ে চালিত এই ব্যাটারি আমরা ব্যবহার করতে পারবো দৈনন্দিন জীবনেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top