সকল মেনু

প্রধানমন্ত্রী কাল মিয়ানমার যাচেছন

 কূটনৈতিক  প্রতিবেদক, ঢাকা, ২ মার্চ :  মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় ৪ মার্চ শুরু হচ্ছে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) তৃতীয় বৈঠক। ৩২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে আগামীকাল সোমবার মিয়ানমার যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এবারের বৈঠকে সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার বাণিজ্য-বিনিয়োগ, যোগাযোগসহ মোট ১৪টি বিষয়ে আলোচনা হবে। সেখানে সরকারপ্রধানদের মূল বৈঠকের পাশাপাশি বিশেষ বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেকার  অমীমাংসিত বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এবারের বিমসটেকে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সিনিয়র কর্মকর্তা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারপ্রধানদের মধ্যে তিন ধাপে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।  কর্মকর্তাদের মধ্যকার বৈঠকে যোগ দিতে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক বর্তমানে মিয়ানমারে অবস্থান করছেন। আর মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা  বলেন, ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সফরকালে দুই দেশের মধ্যকার অমীমাংসিত ইস্যুগুলোয় নিষ্পত্তিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সে বিষয়গুলোর হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, স্থল সীমান্ত চুক্তি, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ৮০ কোটি ডলার ঋণ, বাণিজ্যে ভারসাম্য তৈরির মতো ইস্যুগুলো আলোচনায় আসবে। এ বিষয়ে  এরই মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে বৈঠকে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার মিয়ানমার যাবেন। সেখানে ৪ মার্চ বিমসটেক সরকারপ্রধানদের বৈঠকে যোগ দেয়ার পাশাপাশি ভারত, মিয়ানমার, ভুটান ও নেপালসহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন তিনি।

এবারে বিমসটেকের বৈঠকে তিনটি বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। বিষয়গুলো হলো— ঢাকায় বিমসটেকের সদর দফতর, দিল্লিতে আবহাওয়া ও পরিবেশকেন্দ্র এবং থিম্ফুতে সংস্কৃতিকেন্দ্র স্থাপন। ঢাকায় বিমসটেক সদর দফতর স্থাপনের সিদ্ধান্তটি আগেই হয়েছিল। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকায় সদর দফতর স্থাপিত হবে এবং শ্রীলংকা থেকে নিয়োগ দেয়া হবে প্রথম মহাসচিব। সদর দফতরের জন্য বাংলাদেশ সরকার গুলশানে একটি ভবন বরাদ্দ করেছে আগেই।

এছাড়া এবারের বিমসটেক বৈঠকে ১৪টি বিষয়ের ওপর আলোচনা হবে। এর মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বিষয়গুলো হলো— বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, জ্বালানি, পর্যটন, প্রযুক্তি, মত্স্য, কৃষি, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য, জনগণের মধ্যে সম্পৃক্ততা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সন্ত্রাস দমন ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ। এবারের সরকারপ্রধানদের বৈঠকে সর্বশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনা করা হবে। পাশাপাশি যে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি, তার কারণও খতিয়ে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলংকা ও থাইল্যান্ডকে নিয়ে বিমসটেক গঠিত। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক সহযোগিতা সামনে রেখে ১৯৯৭ সালে এটি গঠন করা হয়। এ ফোরামের প্রথম বৈঠক ২০০৪ সালে ব্যাংককে ও দ্বিতীয় বৈঠক ২০০৮ সালে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top