সকল মেনু

বিশ্বাস-আবিশ্বাসের দোলাচলে নরসিংদীর ১৯ দল

নরসিংদী, ২৫ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : সংস্কারপন্থীর অপবাদে দল থেকে দূরে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের সঙ্গে সখ্য থাকায় বেলাব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় সমর্থন পাননি যুবদল নেতা আহসান হাবিব। তবে তিনি মাঠ ছাড়েননি। ভোটের সময় সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলকে সামনে রেখে বড় ব্যবধানে বিজয়ী হন তিনি।

আর দলীয় সমর্থন পাওয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি অলিউর রহমান হন তৃতীয়। বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে ভোটের ব্যবধান ২৮ হাজার ৪শ’ ১৪। আর আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী সমসের জামান ভূঞার সঙ্গে জয়ী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ১১ হাজার ৩৫৭।

বড় দুই দলের মনোনীত প্রার্থী ধরাশায়ী হওয়ায় নতুন করে আলোচনায় চলে এসেছেন সংস্কারপন্থী নেতা সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে নরসিংদীর বেলাব ও পলাশ উপজেলার নির্বাচন হয়। পলাশে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবু বকর সিদ্দিককে এক হাজার ২০৯ ভোটে পরাজিত করেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সৈয়দ জাবেদ হোসেন। এ পরাজয়ের জন্য বিএনপি দায়ী করছে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতকে। কারণ, বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করে জামায়াত প্রার্থী দেয়। জামায়াতের প্রার্থী হেলাল উদ্দিন ভোট পান আট হাজার ৮৩০।

বিএনপির সক্রিয় কর্মী বেলাব সদরের হাসপাতাল সড়কের দোকানি কাদির মিয়া (৫২) বিএনপির পরাজয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, কি বলব, বলার তো কিছু নাই। বিসমিল্লাহই গলদ হলে বলার কী কিছু থাকে।’

লক্ষ্মীপুর গ্রামের বিএনপির সমর্থক ইসমাইল মিয়া (৪৮) বলেন, সর্বনাশ করেছেন জেলা নেতারা। তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে নিজেদের ইচ্ছার গুরুত্ব দেয়ায় হারের এ কলঙ্ক মাথায় নিতে হয়েছে।

যুবদল নেতা আহসান হাবিব বলেন, ‘চেয়েও পাইনি দলীয় সমর্থন। বড় ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জেলার নেতাদের বোঝাতে পেরেছি, আপনাদের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।’

তবে জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির বলেন, ‘হাবিব দলীয় সমর্থন চাননি।’ সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সংস্কারপন্থী এক নেতার পথ অনুসরণ করে বিএনপির প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটিয়েছেন হাবিব। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল সংস্কারপন্থী আলোচনাটি আর না তোলা। জনপ্রিয়তা থাকলে তাকে সমর্থন দিয়ে সরকারবিরোধী অবস্থান সুসংহত করা। কিন্তু এ জেলার বিএনপি এসবের কোনো নীতিই অনুসরণ করেনি। ফলে তাদের এমন ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে।’

সূত্রমতে, পলাশে শুরুতে জেলা বিএনপি সমর্থন দেয় জামায়াত নেতাকে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান জেলা বিএনপির এ সিদ্ধান্ত আমলে না নিয়ে দলের আবু বকরের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিলে জোটে অবিশ্বাস আর আস্থাহীনতা তৈরি হয়। অনেকে মনে করেন, উভয় প্রার্থী নিজেদের ১৯ দলের প্রার্থী দাবি করায় শুরুতে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। মঈন খানও এই বিভ্রান্তি দূর করতে কার্যকর উদ্যোগ নেননি।

জামায়াত নেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাকে সমর্থন দিয়ে বিএনপি মাঠে তাদের প্রার্থী রেখেছে। সর্বনাশ হওয়ার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই।’

বিএনপি নেতা আবু বকরের মতে, জামায়াত বিশ্বাসঘাতকতা না করলে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদটি থাকত ১৯-দলীয় জোটের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top