সকল মেনু

ব্যাংক-সংশ্লিষ্টদের লেনদেনে অনুমতি লাগবে পর্ষদের

ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : এখন থেকে ব্যাংক পরিচালকরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিশোধিত শেয়ার মূল্যের ৫০ শতাংশের বেশি ঋণ নিতে পারবেন না।

যে সব পরিচালকের ঋণসীমা ৫০ শতাংশের বেশি আছে তাৎক্ষণিকভাবে তা পর্ষদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাদের নিজ ব্যাংকের মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন না।

প্রজ্ঞাপনে, ‘আর্থিক লেনদেন’ বলতে ঋণ ও অগ্রিম প্রদান, ঋণপত্র ইস্যু, গ্যারান্টি এবং অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা ও অঙ্গীকার প্রদান, দ্রব্য, সেবা ও স্থাবর সম্পদ ক্রয় বিক্রয়, লিজ/ভাড়া প্রদান ও গ্রহণ করাকে বুঝিয়েছে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন-২০১৩ (সংশোধিত) অনুসারে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংক-কোম্পানির তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং আমানতকারীদের আস্থা অর্জন ও বজায় রাখার লক্ষ্যে ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে সম্পাদিত লেনদেন সুস্পষ্ট নীতিমালার আওতায় স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য এ নির্দেশনা জারি করা হযেছে বলে প্রজ্ঞাপন উল্লেখ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই প্রজ্ঞাপন জারি হওযার পর থেকে যে সব পরিচালকের ধারণকৃত ব্যাংকের শেয়ারের পরিশোধিত মূল্যের ৫০% এর অধিক আছে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অবহিত করতে হবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিচালকের প্রাপ্যতার অতিরিক্ত সুবিধা পরিশোধ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ৫০% সীমার অধিক ঋণ ও অগ্রীম, গ্যারান্টি এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধার নবায়ন বা এর মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে না।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজন (স্ত্রী, স্বামী, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন) ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সংখ্যাগরিষ্ঠের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে এবং ব্যাংকের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করতে হবে।

পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজনের প্রত্যক্ষ ঋণ ৫০ লাখ টাকা বা ততোধিক এবং প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ ঋণ ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধার সমন্বয়ে মোট এক কোটি টাকা বা ততোধিক প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

একই পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজন ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত ঋণ বা ঋণের অংশ এবং আয় খাতে নিট সুদ মওকুফ করা যাবে না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের পরিচালক/প্রাক্তণ পরিচালক, তার উক্তরূপ আত্মীয়-স্বজন ও নির্ভরশীল এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদত্ত ঋণের উপর অর্জিত সুদ বা সুদের অংশ মওকুফ করার পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। তবে, বর্তমানে ব্যাংকের কোনো শেয়ার ধারণ করছেন না এমন প্রাক্তণ পরিচালকদের ক্ষেত্রে তাদের পরিচালক পদে থাকার পূর্বে বা পরবর্তীতে গৃহীত ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকেই পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে সুদ মওকুফ করা যাবে।

সরকার মনোনীত ব্যাংক পরিচালকদের ঋণ সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত হওয়ার পূর্বে উক্ত পরিচালক, তার উক্তরূপ আত্মীয়-স্বজন ও নির্ভরশীল এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদত্ত ঋণের উপর অর্জিত সুদ মওকুফ বা পুনঃতফসিলিকরণ অথবা প্রদত্ত সুবিধার কোনো শর্তের পরিবর্তন করা যাবে না। ইতোপূর্বে প্রদত্ত ঋণ ও অন্যান্য সুবিধাদি নবায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সকল নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। প্রদত্ত ঋণ খেলাপী ঋণে পরিণত হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং অন্যান্য ব্যবস্থার মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে তা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে (অর্থ মন্ত্রণালয়) অবহিত করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top