সকল মেনু

তিন মাসে ১৮ দলীয় জোটের নিহত ২৬১, গুম ৬০ জন

ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : জাতীয় নির্বাচনের আগে পরে পুলিশ, যৌথবাহিনী, র‌্যাব এবং আওয়ামী লীগ ‘সন্ত্রাসীদের’ গুলিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ২৬১ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। আর গুম হয়েছেন ৬০ জন।

গত বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে প্রায় তিন মাস সরকারবিরোধী আন্দোলন করেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। ওই আন্দোলনের সময় এ সব নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। সারা দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে  নিহত ও গুমের একটি তালিকা তৈরি করেছে বিএনপি।

তালিকাতে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি নিহত এবং গুম হয়েছে লক্ষ্মীপুরে। সেখানে নিহত হয়েছেন ২৯ জন এবং গুম হয়েছেন ৬ জন। সাতক্ষীরায় নিহত হয়েছেন ২৯ জন। গুম হয়েছেন ৫ জন।

গুমের সংখ্যা ঢাকা মহানগরীতে সবচেয়ে বেশি। এখানে গুম হয়েছেন ২১ জন। এর মধ্যে সবই বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। গুম হওয়াদের মধ্যে ১৫ জনই ছাত্রদলের। তবে মহানগরীতে মৃতের সংখ্যা তুলনামূলক কম। নিহত হয়েছেন জামায়াতের মহানগর মজলিসে শূরার একজন  সদস্য।

তালিকায় অনেক নিহতের নাম এবং পিতার নামও উল্লেখ রয়েছে। নিহতদের অনেকের পদও উল্লেখ রয়েছে। তবে কারো নামের পাশে পদবি বা তারা কোন দলের তার উল্লেখ নেই। কারো নামের সঙ্গে ঠিকানা ও ঘটনাস্থল রয়েছে। আবার কোথাও শুধু নাম রয়েছে।  । অবশ্য, দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতা বলেছেন, তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয়। এখনো কাজ চলছে।

২৬১ জনের মধ্যে জামায়াতের নিহত হয়েছেন অন্তত ৮১ জন। আর গুম হয়েছেন ৭জন। বাকিরা সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বলে দাবি করছে তথ্য সংগ্রহকারীরা।

গুমের তালিকাটি কূটনীতিকদের দেওয়া হবে। এছাড়া সমালোচকদের জবাব দিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তালিকা প্রকাশ করতে পারেন।

অন্যান্য জেলার মধ্যে সিলেটে গুম ১ জন। তবে কেউ নিহত হননি। ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত ৪, দিনাজপুরে ৮ জন। নীলফামারিতে নিহতের সংখ্যা ৬ ও গুমের সংখ্যা ৯। লালমনিরহাটে নিহত ৬, রংপুরে ২ ও কুড়িগ্রামে ১ জন নিহত হন। গাইবান্ধায় নিহত ৬ ও গুম ৫ জন। জয়পুরহাটে ১২, বগুড়ায় নিহত ৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৩, নওগাঁ ২, রাজশাহী ২, নাটোর ২, সিরাজগঞ্জে ১৫, পাবনায় নিহত ৭, মেহেরপুরে ৫, কুষ্টিয়ায় ৪, চুয়াডাঙ্গায় ২ জন নিহত হয়েছেন। ঝিনাইদহে নিহত ২ এবং গুমও ২ জন। যশোরে নিহত ৪ জন। মাগুরা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, কিশোরগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ ও বাগেরহাটে ১জন করে নিহত হয়েছেন। খুলনায় নিহত ৪, গুম ১ জন। কুমিল্লা উত্তর জেলায় নিহত ২জন। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলায় নিহত ২ এবং গুম ২ জন। চাঁদপুরে ২০, ফেনীতে ৮, নোয়াখালীতে নিহত ১৮, চট্টগ্রাম মহানগরে ২, চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় ১১, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলায় ৩ জন এবং কক্সবাজারে নিহত হন ১৯ জন।

দেশব্যাপী হত্যা ও গুম নিয়ে উদ্বিগ্ন খালেদা জিয়া গত ৪ ফেব্রুয়ারি হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সময় তিনি দাবি করেন ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পূর্বাপর ঘটনায় তাদের তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২৪২ জনকে হত্যা এবং ৬০ জনকে গুম করা হয়েছে। তবে তালিকায় দেখা যায়, নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন ২৬১ তে এসেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পালিয়ে থেকে গুমের কথা বলা হচ্ছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে অপর এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতমিন্ত্রী বলেন, দেশে বিচারবহির্ভূত কোনো হত্যাকা- হচ্ছে না। এটা বিএনপির অপপ্রচার। এর আগে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।

অবশ্য, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘বিরোধী আন্দোলন দমন করতে সরকার সারা দেশে হত্যা ও গুমের রাজনীতি করেছে। হত্যা ও গুমের যে পরিসংখ্যান বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া যাচ্ছে প্রকৃত অবস্থা তার চেয়েও ভয়াবহ।’

নিহতরা হলেন- ঠাকুরগাঁওয়ের মো. হারুণ, মো. জয়নাল, আবু হানিফ, মো. সেলিম। দিনাজপুরে সালাহউদ্দিন, বাবুল হোসেন, মাহফুজুল ইসলাম, মাসুদ রায়হান মাসুদ, ফয়েজ উদ্দিন, মোজাহেরুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল, আসাদুজ্জামান। নীলফামারিতে মমতাজ হোসেন, জাহাঙ্গীর, গোলাম রাব্বানী, আতিকুর রহমান, মোসলেম উদ্দিন, আবু বকর সিদ্দিক। লালমনিরহাটে মোবারক হোসেন ফারুক, ফারুক, নাসিম, মনিরুল ইসলাম মনি, আব্দুর রহিম, সাজু মিয়া। রংপুরে মিরাজুল ইসলাম, হাজীউজ্জামান সুজন। মো. বিপ্লব কুড়িগ্রামে। গাইবান্ধায় শাহাবুদ্দিন, নাজমুল হাসান, সোহানুর রহমান, আবু সুফিয়ান, নাজমুল হাসান সাকিব, জয়পুরহাটে আব্দুল হাকিম, নাসির উদ্দিন, মজনু, মজিদুল ইসলাম, হেসাব উদ্দিন, ফরমান আলী, ফিরোজ হোসাইন, আব্দুর রহমান, ইনসান আলী, শামীম হোসাইন, আসমা খাতুন, বদিউজ্জামান। বগুড়ায় রুকন উদ্দিন প্রমাণিক ইমরান, মো, ইউসুফ, ইমরান আবুল্লাহ আল বাকি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে মতিউর রহমান, নূরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, সালাহউদ্দিন, রুবেল, মজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, অলি উল্লাহ, রবিউল ইসলাম, বসির উদ্দিন, নজিবুর রহমান, আব্দুল খালেক। নওগাঁয় বাবুল হোসেন ও শোকবর আলী। রাজশাহীতে সুজন, রাশেদুল হক ঝন্টু। নাটোরে সাইফুজ্জামান সুজন ও বাসার। সিরাজগঞ্জে আব্দুল্লাহেল বাকী, আব্দুল জলিল, আলমগীর হোসাইন সুমন, মোক্তার হোসেন, রুহুল আমিন, আক্তার হোসেন, মামুন বিল্লা, ইউনুস আলী, আতাউর রহমান, আল মাহমুদ, ওয়াজেদ আলী, মনসুর আহম্মেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, আ: জামাল, আলী। পাবনায় জাহাঙ্গীর আলম, মানিক হোসেন, ইব্রাহিম চেয়ারম্যান, ফরিদ, আশরাফ, শরিফুল, শহিদ প্রমাণিক। মেহেরপুরে আব্দুল জব্বার, তারেক মো. সাইফুল ইসলাম, লাবলা, আলিম ও মিলন। কুষ্টিয়ায় মুন্সি রশিদুর রহমান, নুরি, রাশেদুল চেয়ারম্যান, নূর হোসেন দুলাল। চুয়াডাঙ্গায় আব্দুল হাই ও সুজন। ঝিনাইদহে ইসমাইল হোসেন ও এনামুল হক। যশোরে মতিয়ার রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাই সিদ্দিক, হাফিজুর রহমান হাফিজ ও কবির হোসেন পলাশ। মাগুরায় মারুফ, বাগেরহাটে আফজাল খান। খুলনায় মোস্তফা কামাল চেয়ারম্যান, সোহাগ, ইলিয়াস ও ইয়াসিন। সাতক্ষীরায় সফিকুল ইসলাম, আব্দুস সবুর সরদার, হাবিবুর রহমান হবি, সামসুল হক, হাফেজ হোসাইন আলী, আতিয়ার সরদার, আরিজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসাইন, শাহী বাবু, হাফিজুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম, আবু হানিফ ছুটন, আবুল কালাম আজাদ, মারুফ হোসেন, আজহারুল ইসলাম, রুহুল আমিন, মোস্তফা আরিফুজ্জামান, শামসুর রহমান, রুহুল আমিন, আরিফ বিল্লা, মাহবুবুর রহমান, আলী মোস্তফা, আব্দুল সালাম, সাইফুল ইসলাম, শাচীন আলম, রবিউল ইসলাম, মাহফুজুল হাসান, ইকবাল হোসাইন ও আনোয়ারুল ইসলাম। পটুয়াখালীতে আব্দুস সাত্তার, পিরোজপুরে শুক্কুর আলী, কিশোরগঞ্জে মোস্তাক আহম্মেদ, মুন্সিগঞ্জে কংকন। ঢাকা মহানগরীতে মাওলানা বেলাল হোসাইন। কুমিল্লা উত্তরে জাহাঙ্গীর ও আবু বেপারী। কুমিল্লা দক্ষিণে দেলোয়ার হোসেন, আনোয়ার হোসাইন। চাঁদপুরে বিল্লাল দেওয়ান, ছোট জামাল, বড় জামাল, শাহপরাণ, হাফেজ নাজমুল শাহাদাত রুবেল, ফারুক পাটওয়ারী, হাফেজ মনসুর, তাজুল ইসলাম রতন, মনোয়ার জাওয়াদ সিয়াম, আরজু ঢালী, দেলোয়ার হোসেন দুলাল, বিল্লাহ হোসেন, মাহফুজ খান, গফুর কারী, আরিফ হেসেন, বাবুল, জাহাঙ্গীর, লিমন ছৈয়াল, আবুল হোসেন, গোলাম মাওলা বিপুল। ফেনীতে আবুল কাশেম, জামশেদ, শহিদুল্লাহ, মিজানুর রহমান মিন্টু, নূরুল কায়সার, হাফেজ মো. আব্দুল্লাহ আল সালামত, হারুণ অর রশিদ, আব্দুর রহমান মানিক, নোয়াখালীতে মাহমুদুর হাসান, আব্দুস সাত্তার চান মিয়া, আব্দুর নূর রাসেল, মাহমুদুর হক মিশু. মতিউর রহমান সজিব, সাইফুল ইসলাম, আব্দুল আজিজ রায়হান, সাইফুল ইসলাম, হাফেজ জুবায়ের হোসেন, মামুন হোসাইন, মো, সোহাগ, খোকন, আব্দুল সালাম, খুরশিদ আলম, পারভেজ আলম, কুরবান আলী, তৌহিদুল ইসলাম, ইসমাইন হোসেন সুমন। লক্ষীপুরে মাহবুব আলম, সুমন, শিহাব, হরিপদ দেবনাথ, ফয়েজ আহম্মেদ, আসাদুজ্জামান বাবুল, আব্দুল মান্নান, সুমন, শাহাদাত হেসেন রুবেল, দিদার, আবুল হোসেন,  জাহাঙ্গীর আলম খোকন, আনোয়ার হোসেন, মনির হোসেন, মো. সেলিম, নজরুল ইসলাম লিটন, মোরশেদ, আজাদ, আবুল কাশেম মো. হানিফ, মো. মহসীন, মোসলেম উদ্দিন, মিজানুর রহমান, হারুল মেম্বার, রুবেল, মো. বাহার, মনির হোসেন, মো. রোমান, আবু তাহের। চট্টগ্রাম মহানগরে মো, নাসির ও রাজিব। চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় মোশারফ হোসেন, আব্দুল্লাহ আল রাসেল বাবু, আবু বকর সিদ্দিক পারভেজ, রেজাউল করিম রাসেল, আমিনুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম রাসেল, আমিনুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন, নূর হোসেন, নিজামুল করিম সজিব ও হাফেজ জসিম উদ্দিন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলায় এনামুল হক লালু, আব্দুল গফুর, জসিম, কক্সবাজারে মনজুর আলম, সাইফুল ইসলাম বাদশা, মিজানুর রহমান, আব্দুল হালিম, সাজ্জাদ হোসেন, জাকের হোসেন, আক্তার কামাল সাগর, ছৈয়দুল আমিন, শাহাজালাল, সরোয়ার ইসলাম, আমির হামজা, খোরশেদ আলম, আবু বকর সিদ্দিক, আব্দুল আজিজ, মো, ইসমাইল, আব্দুর রশিদ, নূরুল হক, তোফায়েল উদ্দিন ও আহম্মদ সালেহ।

যারা গুম হলেন- নীলফামারীতে আশরাফ আলী, আব্দুর রহমান, বাবুল হোসেন, আজিজুল ইসলাম, ছকিন উদ্দিন মেম্বার, মহিদুল ইসলাম, আব্দুল মালেক কাজী, আব্দুল মালেক, রাহেদুল ইসলাম দোলন। গাইবান্ধায় নাজমুল হাসান শাকিব, মতিয়ার পারভেজ, মুসা আহম্মেদ, শাখাওয়াত, নুরুন্নবি, নবিন মিয়া, ঝিনাইদহে নজরুল ইসলাম ও  নাসির উদ্দিন। খুলনায় ইসলাম। সাতক্ষীরায় কাজী হাসান উদ্দিন, হাফেজ কাজী হেলাল উদ্দিন, হাফেজ কাজী আরাফাত, আনোয়ারুল হক ও আনু হানিফ ছুটন মিয়া। ঢাকা মহানগরে সাজেদুল ইসলাম সুমন, আবুল হালিম, সেলিম রেজা পিন্টু, সম্রাট মোল্লা, খালিদ হোসেন সোহেল, মাহাবুবুল হক সুজন, ফরহাদ হোসেন, লিটন, তরিকুল ইসলাম জন্টু, আসাদুজ্জামান রানা, মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আল আমিন, আশিক, জিয়াউর রহমান শাহীন, সোহেল, রানা, তানভীর, পারভেজ, জসিম, মো. সোহেল ও কাশেম। সিলেটে ইফতেখার আহম্মেদ দীনার, জুনেদ আহম্মেদ ও আনসার আলী। কুমিল্লা দক্ষিণে সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন পারভেজ। লক্ষীপুরে ইকবাল হোসেন জুয়েল, বেলাল হোসেন, আলমগীর হোসেন, রাজু, ওমর ফারুক, আব্দুল কাদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top