সকল মেনু

বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা

 বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা। টানা তিনদিনের বিক্ষোভে উত্তাল দেশটি। শুক্রবার দিবাগত রাতে সরকার বিরোধীরা রাজধানী সারায়েভোয় প্রেসিডেন্ট ভবনের এক অংশে অগ্নিসংযোগ করেছে।

বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানায়, এ দিন পুলিশের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন। এ দিন বিরোধীরা তজুল্লায় একটি সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। তজুল্লা  কর্তৃপক্ষ সহিংসতা শুরুর আগেই সেখানকার স্কুলে ক্লাস বাতিল করে দেয়।   

এদিকে আজ শনিবার বিবিসি জানিয়েছে, দুই দশক আগে শেষ হওয়া যুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো এতো বড় আকারের অস্থিতিশীলতার কবলে পড়ল বসনিয়া-হার্জেগোভিনা। আর সরকার বিরোধী সেই অস্থিরতার আগুনে পুড়ছে অসংখ্য সরকারি ভবন আর নানা স্থাপনা। এ যাবৎকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই বিক্ষোভ সামলাতে বসনিয়ার পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও পানিকামান ব্যবহার করেছে। মূলত কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থা এবং বেকারত্বের প্রেক্ষাপটে জ্বলে ওঠা বিক্ষোভ আর হামলায় তিনদিনে শ’ শ’ মানুষ আহত হয়েছেন।

শুধু রাজধানী সারায়েভো নয়, বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে তজুল্লা, মোস্তার ও জেনিচা শহরেও। উত্তরের শহর তজুল্লায় বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সরকারের ভবনগুলোতে আগুন দিয়েছে। তাদের বিক্ষোভের মুখে হতভম্ব হয়ে পড়েন সেখানকার পুলিশ। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে বিক্ষোভ শুরু হয়।

মূলত স্থানীয় জনসাধারণের বড় কর্মক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন কারখানা বিক্রি ও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এখানকার মানুষ। সেই বিক্ষোভ বেশ দ্রুতই অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে বিক্ষোভকারীরা। সারায়েভোতে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করেছে।

বেলগ্রেড থেকে বিবিসির গাই দেলওনি বলছেন, যে হতাশা দীর্ঘসময় ধরে জমছিল হঠাৎ করেই তার বিস্ফোরণ ঘটেছে এখানে।

১৯৯২ থেকে ৯৫ পর্যন্ত যে যুদ্ধ এখানে হয়েছিল তারপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখ সরে গিয়েছিল বসনিয়ার ওপর থেকে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের চাহিদাগুলোর দিক থেকে সরকারের চোখও সরে যায়।

এখানকার প্রশাসনে সাম্প্রদায়িক বিভক্তি প্রকট এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বেশ চরমে। দেশটির আর্থিক অবস্থা এমনই খারাপ যে প্রতি ১০ জনে চারজন এখানে বেকার। বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় দু’টি অংশ যার একদিকে রয়েছে বসনীয়-ক্রোয়াট ফেডারেশন অফ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং অন্যদিকে রয়েছে বসনীয় সার্ব রিপাবলিক বা রিপাবলিকা স্রস্পকা। দুই অংশের আলাদা প্রেসিডেন্ট, সরকার, সংসদ, পুলিশ এবং পৃথক কর্তৃপক্ষ রয়েছে।

বেশ জটিল প্রশাসনিক কাঠামো এবং তীব্র বিভেদ একদিকে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্ম দিয়েছে, অপরদিকে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্নীতির মুখে ফেলেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top