সকল মেনু

গোদাগাড়ীতে কেঁচো সার উৎপাদনে তিন কৃষকের সাফল্য

 রাজশাহী প্রতিনিধি, ১০ নভেম্বর : xAg-----3020131110141330.jpg.pagespeed.ic.n7TX1pQThy এর ফলে জমির জৈব পদার্থ ও উর্বরতা শক্তি হ্রাস পেয়েছে। মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণে উৎপাদন কম হচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমাতে ও মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়াতে জমিতে জৈব সার ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। জৈব সারের মধ্যে কেঁচো সার ব্যবহার করলে ফসলি জমির উর্বরতা শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কৃষিবিদরা জানান, জমিতে রাসায়নিক সার কমিয়ে দিয়ে কেঁচো সার ব্যবহার করে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, জাপান ও মায়ানমার ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। বাংলাদেশের কিছু কিছু এলাকায় কেঁচো সার ব্যবহার শুরু হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কেঁচো সার উৎপাদন ও জমিতে ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেছে। উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের কৃষক কংগ্রেস টুডু, সোনাদিঘী গ্রামের কৃষক সইবুর রহমান ও গোপালপুর গ্রামের কৃষক আবদুল হান্নান চলতি বছর পরীক্ষামূলকভাবে কেঁচো সার উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন। কেঁচো সার উৎপাদনে গোদাগাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন এই তিন কৃষককে সহায়তা প্রদান করছে। কৃষক কংগ্রেস টুডু জানান, তিনি ৬০ দিনে প্রায় ১৫০ কেজি কেঁচো সার উৎপাদান করেছেন। নিজের চাষকৃত জমিতে উৎপাদিত কেঁচো সার ব্যবহারের পাশাপাশি তিনি প্রতিবেশী কৃষকদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতিকেজি কেঁচো সার উৎপাদনে খরচ হয় ৬ টাকা। আর তা পাইকারিভাবে প্রতিকেজি বিক্রি করেন ১৫ টাকায়। কেঁচো সার উৎপাদনে তাকে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতুন সরকার। উপজেলার সোনাদীঘি এলাকার কৃষক সইবুর রহমান জানান, জমিতে ভালো বীজ, রাসায়নিক সার ও সময়মতো সেচ দেয়ার পরও ধানের ফলন বিপর্যয় ঘটে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের পরামর্শ অনুযায়ী কেঁচো সার সংগ্রহ করে জমিতে ব্যবহার করে ধানের ভালো ফলন পেয়েছেন। চলতি বছর নিজেই কেঁচো সার উৎপাদন শুরু  করেছেন তিনি। কৃষক সইবুর আরও জানান, ৬০ দিনে তার ১১০ কেজি কেঁচো সার উৎপাদন হয়েছে। জমিতে ব্যবহার ছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদনের পরিকল্পনা করছেন তিনি। ইতোমধ্যে উৎপাদিত কেঁচো সার বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. সাইফুল আলম বলেন, ফসলি জমির মাটিতে ৫ ভাগ জৈব পদার্থ থাকতে হবে। কিন্তু বর্তমানে এ অঞ্চলের জমিতে জৈব পদার্থের হার কমে গিয়ে ১ ভাগের নিচে নেমে এসেছে। ফসলি জমিতে কেঁচো সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা শক্তি ও স্বাস্থ্য বজায় থাকে। জমির গুণাগুণও বৃদ্ধি পায়। পানি ও গাছের অন্যান্য খাদ্য ধরে রাখতে পারে। গাছের প্রতিশোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়ার কারণে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। জমিতে সেচ কম লাগে। ফলে উৎপাদন খরচও কমে যায়। কেঁচো সার মাটির অম্লতা সঠিক রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া কেঁচো সারের গুণাগুণ মাটিতে দীর্ঘদিন অবশিষ্ট থাকে বলে পরবর্তী ফসলে সারের পরিমাণ কম লাগে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top