সকল মেনু

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশী ব্র্যান্ড

Walton Logo [Converted] অর্থনৈতিক প্রতিবেদক:  বিদেশী ক্রেতাদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশী ব্র্যান্ডের পণ্য। টাকার হিসেবে এসব পণ্যের রফতানি বর্তমানে এশিয়ার অনেক ব্র্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এর প্রধান কারন হচ্ছে বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি, প্রতিযোগীতায় টিকে থাকার প্রত্যয় এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। গতমাসে দুবাইতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ব্র্যান্ড এবং লিডারশীপ সম্মেলনে এশিয়ার ২০০ টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মধ্যে ওয়ালটন মোটরসাইকেল, বেক্সিমকো ফার্মা, শাইনপুকুর সিরামিকস সর্বাপেক্ষা প্রতিশ্রুতিশীল ব্র্যান্ড হিসেবে নির্বাচিত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশের উচিৎ দেশটির প্রতিশ্রুতিশীল পন্য যেমন, তৈরি পোশাক, ফ্রিজ ও টিভির মতো ইলেকট্রনিক্স পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, ঔষধ, সিরামিকস এবং অটোমোবাইল পন্যগুলোর ব্র্যান্ডিং এর প্রতি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মনোনিবেশ করা উচিত। যাতে করে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুততর হয়।

বেক্সিমকো র্ফামাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, এই স্বীকৃতির মধ্যে দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, আমরা শেষ্ঠত্ব অর্জনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি অবশ্যই বেক্সিমকোর ফার্মাকে আরো বেশি করে বিশ্ববাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছাতে সহায়তা করবে।

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, বেক্সিমকো ফার্মা এশিয়ার সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতিশীল ৩১ টি ব্র্যান্ডের তালিকায় এবং ঔষধ ক্যাটাগরীতে এক নম্বর পণ্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আশরাফুল আলম বলেন, নি:সন্দেহে এটি দেশের আটোমোবাইল শিল্পের জন্য একটা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তিনি এই স্বীকৃতিকে তার কোম্পানির জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এর মধ্যে দিয়ে ওয়ালটন বহুদুর এগিয়ে যাবে।

আশরাফুল আলম বলেন, আমাদেরকে এমন একটি সময়ে এই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে যখন বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি দেশের অন্যান্য উৎপাদনমূখি শিল্পকেও উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি এটি বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখবে। তিনি আরো বলেন, অটোমোবাইল ইলেক্টনিক্স এবং গৃহস্থালী পণ্য দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে আসছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা ওয়ালটনের বেশকিছু পণ্যকে ব্র্যান্ডিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ। মিয়ানমার ও অফ্রিকার দেশগুলোসহ বর্তমানে ১৭ টি দেশে ওয়ালটন তার পণ্য রফতারি করছে।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ( সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এই স্বীকৃতি একটি শুভ লক্ষ্মন। এটি অবশ্যই স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত পন্য ও দেশের ব্র্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে সহায়ক ভুমিকা পালন রাখবে। তারা বাংলাদেশের যে কয়েকটি পন্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে তা অবশ্যই একটি শুভ লক্ষ। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরো পণ্য যেমন তৈরি পোশাক, পাট এবং পাটজাত পণ্যের ব্র্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে উদ্যোগ তেমন দৃশ্যমান নয়।

এই গবেষকের মতে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের উচিৎ হবে ব্র্যান্ডিংকে ভবিষ্যতে ব্যবসার কৌশলগত দিকের একটি অংশে রুপান্তর করা। যদিও এক্ষেত্রে ঝুঁকি ও পুরষ্কার উভয়ই রয়েছে।

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, যখন একটি দেশকে ব্র্যান্ডিং এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয় তখন তা কেবল দেশটির ভাবমূর্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ন অবদানই রাখে না বরং তা নতুন বিদেশী ক্রেতা ও সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রেও অবদান রাখে। দেশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিশ্রুতিশীল রফতানি পন্যের ব্র্যান্ডিং বাড়াতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে ন্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top