সকল মেনু

বিয়ের চাপ দেয়ায় হত্যা করা হয় কিশোরীকে

হটনিউজ ডেস্ক:

মাদারীপুরে ডাসারে বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় মুর্শিদা আক্তার নামে এক কিশোরীকে। এ ঘটনায় নিহতের ১১ মাস পরে কিশোরীর মরদেহ শনিবার রাতে প্রেমিক সাহাবুদ্দিন আকনের বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত সাহাবুদ্দিনের মা হাসিনা বেগম তার সন্তানের বিচার চেয়েছেন।

স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার পূর্ব বোতলা গ্রামের চাঁনমিয়া হাওলাদারের দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মুর্শিদা আক্তারের সাথে একই গ্রামের মজিদ আকনের ছেলে সাহাবুদ্দিন আকনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই একাধিক বার সাহাবুদ্দিনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপর বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে মুর্শিদা। এরপরই খুন করা হয় তাকে। ঘটনার ১১ মাস পর তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান মিয়া জানান, সাহাবুদ্দিনের সাথে মুর্শিদার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই একাধিকবার তাদের দৈহিক মেলামেশা হয়। এরপর মুর্শিদা বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। পরে পরিকল্পনা করে সাহাবুদ্দিন একদিন মুর্শিদাকে নিজ বাড়িতে ডেকে এনে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য বাড়ির সেফটিক ট্যাংকে ফেলে কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে দেয়।
তিনি আরও জানান, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরেই গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মুর্শিদাকে বাড়ি থেকে চিকিৎসা করানোর কথা বলে নিয়ে যায়। এরপর নিখোঁজ থাকায় গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদার পরিবার ডাসার থানায় একটি জিডি করেন। এতে কোনো প্রতিকার না হওয়ায় গত বছরের ৪ মার্চ সাহাবুদ্দিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন মুর্শিদার মা মাহিনুর বেগম।

দীর্ঘদিন মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় মামলাটি মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তভার গ্রহণ করে। এরপর গত বৃহস্পতিবার মামলার আসামি সাহাবুদ্দিন আকন আদালতে আত্মসমর্পন করে। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই তারিকুল ইসলাম আসামি সাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

শনিবার বিকালে সাহাবুদ্দিন হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয় গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্বীকার করে এবং লাশ গুম করার কথাও জানায়। সাহাবুদ্দিনের দেয়া তথ্য মোতাবেক সন্ধ্যা ৮টার দিকে তার বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে মুর্শিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের মা মাহিনুর বেগম বলেন, আমার মেয়েকে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে নিয়ে যায় সাহাবুদ্দিন। তার সাথে বিয়ের কথাবার্তাও চলছিল। এরপর দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকায় পরে আমরা থানায় মামলা করি। সাহাবুদ্দিনকে আমরা যাতে সন্দেহ না করি এজন্য সে সবসময় আমার সাথে সাথেই থাকতো। জিডি করতেও আমার সাথে থানায় গিয়েছিলেন সাহাবুদ্দিন। সাহাবুদ্দিন ঠান্ডা মাথার খুনি। আমরা ওর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সাহাবুদ্দিনের মা হাসিনা বেগম নিজের ছেলের বিচার দাবি করে বলেন, ‘মুর্শিদা খুব ভালো মেয়ে ছিল। কেন খুন করেছে জানি না। তবে এই খুনের বিচার হওয়া উচিত। আমি চাই এই খুনের বিচার হোক। সে যেই হোক।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top