সকল মেনু

প্রবাসীর বাড়িতে ৩ লাশ, আটক আরও ১

হটনিউজ ডেস্ক:

বরিশালের বানারীপাড়ায় একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও একজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার নাম জুয়েল হাওলাদার।

শনিবার রাত ৮টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব-৮।

এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে বানারীপাড়া উপজেলার শালিয়াবাকপুর এলাকা থেকে জাকির হোসেন নামক একজনকে আটক করে জেলা পুলিশ।

র‌্যাব ও পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।

শনিবার সকালে উপজেলার সলিয়াবাকপুরে প্রবাসী হাফেজ আবদুর রবের বাড়ি থেকে তার মা মরিয়ম বেগম (৭৫), ভগ্নিপতি শফিকুল আলম (৬০) ও খালাতো ভাই ভ্যানচালক ইউসুফ হোসেনের (৩২) লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবর পেয়ে বানারীপাড়া থানার ওসি শিশির কামার পাল ও ওসি (তদন্ত) মো. জাফর আহম্মদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে প্রবাসী রবের বাড়িতে যায়। বাড়ির ব্যালকনির মেঝে থেকে মরিয়ম বেগম ও পাশের কক্ষ থেকে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শফিকুল আলম এবং ইউসুফ হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওসি শিশির জানান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শনিবার বিকালে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রাজমিস্ত্রির সহকারী (শ্রমিক) জাকির হোসেনকে আটক করা হয়েছে। রবের বাড়ি নির্মাণের সময় জাকির রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেছে।

এছাড়া মাঝেমধ্যে সে ওই বাড়িতে যেত। সে বাড়ি পরিষ্কার ও ধোয়ামোছার কাজও করত।

হাফেজ রবের স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশু জানান, দুর্বৃত্তরা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে গেছে। তবে কী পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা খোয়া গেছে তা তিনি বলতে পারেননি।

রবের বড় বোন জাহানারা বেগম জানান, খবর পেয়ে চাখার এলাকা থেকে বাপের বাড়িতে ছুটে এসেছেন। তিনি জানান, একটি ঘরে তিনজন খুন হয়ে গেল আর কেউ সেটি টের পেল না, তা হতে পারে না।

তিনি বলেন, তার বৃদ্ধা মায়ের পাশে ঘুমিয়ে থাকা মেজ ভাই হারুনের মেয়ে আছিয়া খাতুনের ‘তো’ টের পাওয়ার কথা।

ইউপি সদস্য আলম হাওলাদার জানান, হাফেজ রব ও তার সেজ ভাই হাফেজ হাসান দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকেন। তার মেজ ভাই হারুন হাওলাদার বাড়িতে থেকেই কাপড়ের ব্যবসা করেন।

তিনি আরও বলেন, চাখার কলেজের ছাত্রী আছিয়া খাতুন ভোরে পাশের বাড়ি থেকে তার বাবা হারুনকে ডেকে আনেন। বাড়িতে এসে হারুন ব্যালকনিতে তার মায়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর অন্য কক্ষে শফিকুল আলম এবং পুকুরে ভাসমান অবস্থায় ইউসুফের লাশ দেখতে পান। এরপর তারা ইউসুফের লাশ ঘরে নিয়ে যান।

পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিহতদের শরীরে বড় ধরনের কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

তবে ফরেনসিক রিপোর্ট ছাড়া কিছুই বলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় পাশের আমগাছ ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।

বরিশালের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম এহসান উল্লাহ, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম (বিপিএম), পুলিশ সুপার মো. রকিব উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার সাঈদসহ পিবিআই ও সিআইডির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top