সকল মেনু

আওয়ামী লীগের ‘ট্রাক র‌্যালি’

8c90372640147a21eda06a13b67dbcd6-5853e5ec3364cহটনিউজ২৪বিডি.কম : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্ধারিত বিজয় র‌্যালি যেন পরিণত হয়েছে ‘ট্রাক র‌্যালি’তে। অন্যান্যবার দলটির নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা পায়ে হেঁটে র‌্যালিতে অংশ নিলেও এবার তাদের অধিকাংশকেই পিক-আপ ট্রাকে চড়ে র‌্যালিতে অংশ নিতে দেখা গেছে। পায়ে হেঁটে র‌্যালিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীর সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। তাদের আনা পিক-আপ যানজটে আটকা পড়লে দেখা যায় পায়ে হেঁটে কিছুটা পথ পাড়ি দিয়েছেন তারা। র‌্যালিতে আসা অধিকাংশ মানুষই ট্রাকে চড়ে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে গিয়েছেন। মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং মহানগরীর বাইরের থানা ও ইউনিয়ন থেকে এমপি, প্রভাবশালী নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন ছিল পিকআপ ট্রাকগুলোতে। যাত্রাবাড়ী এলাকার এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার ব্যানার সম্বলিত র‌্যালিতে অংশ নেওয়া একটি পিক-আপ ট্রাকের সাউন্ড সিস্টেমে বাজতে শোনা গেছে ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’। গানটি বিএনপির দলীয় সঙ্গীত হিসাবেই পরিচিত।

বিজয় দিবসের পূর্ব নির্ধারিত বিজয় র‌্যালিতে অংশ নিতে বেলা ১২টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী নেতাদের অনুসারীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের গেটে সমবেত হয়। তাদের হাতে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানার ছবি সম্বলিত ব্যানার-পোস্টার। ছিল জাতীয় পতাকা, বেলুন, দলীয় পতাকা আর দলীয় প্রতীক নৌকাও। অনেকের পরনে ছিল জাতীয় পতাকা খচিত নানা রকমের পোশাক। বিশেষ করে নারীদের পরনে ছিল লাল-সবুজ শাড়ি। ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, বাদক দল ও বাদ্যযন্ত্র ছিল র‌্যালির বাড়তি আকর্ষণ। এছাড়া র‌্যালিতে থাকা পিক-আপ ভ্যানে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বাজে দেশাত্মবোধক গান, জয় বাংলা শ্লোগান, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা বিভিন্ন গান। বাদক দলের সুরের মূর্চ্ছনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট থেকে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়ির আশপাশের আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তোলে। র‌্যালির সাজ-সজ্জা ও সুরের মূর্চ্ছনা যানজটে আটকে থাকা সাধারণ মানুষ উৎসুক হয়ে উপভোগ করেন। অবশ্য যানজটে আটকে থাকায় অনেকের চেহারায় বিরক্তিও প্রকাশ পায়।

দুপুর গড়াতেই মানুষ আর পিক-আপ ট্রাক এক পর্যায়ে নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি করে। দেখা গেছে, এই যানজট এবার বেশি হয়েছে পায়ে হাঁটার বদলে ‘ট্রাক র‌্যালি’ করার কারণে। অসংখ্য পিক-আপ ট্রাকের কারণে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের আশপাশের এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। মৎস্য ভবন এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবারের যানজট একটু বেশি। কারণ অন্যান্যবার পায়ে হেঁটে র‌্যালি হলেও এবার এত বেশি পিক-আপ এসেছে যে র‌্যালিটি ট্রাক র‌্যালির মতো হয়ে গেছে। তাই যানজটের তীব্রতাও বেড়েছে।’

পায়ে হেঁটে র‌্যালিতে অংশ নেওয়ার বদলে ট্রাকে করে র‌্যালিতে অংশ নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিরক্তি প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফও বিরক্ত হন। তিনি হটনিউজ২৪বিডিকে বলেন, ‘খালি নেগেটিভ খোঁজেন কেন?’

বিকাল তিনটার পর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেটে ট্রাকমঞ্চ করে সেখানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ আয়োজিত র‌্যালিপূর্ব সমাবেশের আয়োজন করে। মহানগর আওয়ামী লীগের (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

এ সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিজয়কে সুসংহত করার পথে প্রধান অন্তরায় সাম্প্রদায়িকতা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতা প্রতিহত, প্রতিরোধ ও পরাজিত করে আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’ এরপর র‌্যালির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি অভিমুখে যাত্রা শুরু করে বিজয় র‌্যালি। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে র‌্যালির যাত্রা অব্যাহত ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top