সকল মেনু

জামায়াতের নতুন আমির মকবুলের বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ

5878_unnamedনিজস্ব প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম:  কথা উঠেছিলো রাজাকার মুক্ত হবে জামায়াত। নতুন নেতৃত্ব আসবে যুদ্ধাপররাধ মুক্ত ,শেষ পর্যন্ত তা হলো না। এবার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে জামায়াতের নতুন আমির মকবুল আহমেদের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ উঠেছে তিনি হত্যা করেছিলেন ফেনীর ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ওয়াজউদ্দিনকে ,আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিলো বহু সংখ্যালঘু পরিবারের। এ অভিযোগ উঠেছে মকবুল আহমেদের নিজ জেলা ফেনী থেকে ,অভিযোগ তুলেছেন মুক্তযোদ্ধারা।
দাগনভূঁঞা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপজেলা কমান্ডার শরিয়ত উল্যাহ বাঙ্গালী বলেন, ‘মকবুল আহমাদের নির্দেশে দাগনভূঁঞা উপজেলার জয়লস্কর ইউনিয়নের লালপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ায় আগুন দিয়ে ১০ জনকে হত্যা করা হয়।’ তিনি তদন্তসাপেক্ষে এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় জামায়াত নেতা মকবুল আহমাদের বিচার দাবি করেন।
কেন্দ্রীয় ও ফেনী জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, মকবুল আহমাদের গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপূর ইউনিয়নের ওমরাবাদে। পেশায় তিনি স্কুল শিক্ষক ছিলেন। ফেনী মডেল হাইস্কুলের শিক্ষকতা থেকে অবসরের পরই জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই গ্রামের বাড়ি যাওয়া থেকে বিরত থাকেন তিনি। পারিবারিক জীবনে ৪ সন্তানের জনক মকবুল আহমাদ। রুকন থেকে পর্যায়ক্রমে দলটির অঞ্চলভিত্তিক পরিচালক, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও নায়েবে আমিরের দায়িত্ব পালন করেন।

জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী গ্রেফতারের পর বিগত প্রায় ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি দলটির ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় তিনি আত্মগোপনে থেকেই দল পরিচালনা করেছেন।

রাজনৈতিক জীবনে ফেনী ২ আসন থেকে ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান মকবুল আহমাদ। প্রচারণার আড়ালে থাকা জামায়াতের নতুন আমিরকে নিয়ে অন্যান্য দলের মধ্যেও আলোচনা কম। যদিও গত মাসে তার আমির হওয়ার খবর প্রকাশের পর তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি বলেছিলেন, মকবুল আহমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের চিত্র খতিয়ে দেখা হোক।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকে তার বিষয়ে তদন্ত করতেও আহ্বান জানিয়েছিলেন এমএ আউয়াল এমপি।

ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান অভিযোগ করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের কাজ চলমান থাকলেও ৭১-এর ঘাতক, তালিকাভুক্ত রাজাকার কেন্দ্রীয় জামায়াতের আমির মকবুলসহ ফেনীর দুই শতাধিক রাজাকার এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

জানা গেছে, গত বছরের মে মাসে ফেনী শহীদ মিনার চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতাবিরোধী ও রাজাকারদের তালিকাভুক্ত ২০০ জনের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়ে। ফেনী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছিলেন।

ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান মনে করেন, একাত্তরের মুক্তিকামী মানুষের রক্তের দাগে রঞ্জিত এমন একজনকে দলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বে বসিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের কলঙ্ককে অলঙ্কার হিসেবে ধরে রাখতে চাচ্ছে জামায়াত।

দাগনভূঁঞা উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের উপজেলা কমান্ডার শরিয়ত উল্যাহ বাঙ্গালী বলেন, মকবুল আহমাদের নির্দেশে রাজাকার মোশাররফ হোসেন মশা দাগনভূঁঞা উপজেলার খুশিপুর গ্রামের আহসান উল্লাহ নামে অন্য এক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন। রাজাকার মশা জীবিত আছেন। তার বাড়ি একই উপজেলার সাফুয়া গ্রামে।

জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয়নেতা মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন,এগুলো মিথ্যা প্রচারণা। ঘণ্টাখানেক আগেও এসব ছিল না। দায়িত্ব পাওয়ার পর এসব মিথ্য অভিযোগ উঠেছে। আমিরে জামায়াত ও জামায়াতের বিরুদ্ধে এগুলো ষড়যন্ত্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top