সকল মেনু

১০ টাকা কেজির চালের কার্ড নিয়ে অনিয়ম: চাল বিক্রি স্থগিত

indexমেহেদী হাসান,কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:  কেশবপুরে সরকারের ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ, গরীবদের ভাগ্যে জোটেনি   জুটেছে  ধনীদের  শীর্ষক সংবাদ গত ৯ অক্টোবর বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ  প্রকাশের পর  টনক  নড়ে প্রশাসনের।  উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে কার্ডের চাল বিক্রি স্থগিত করেছে। পাশাপাশি  কার্ডধারীদের তালিকা যাচাই বাছাইয়ে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি কর্মকর্তা ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কেশবপুর উপজেলার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১২ হাজার ৯৮৪ টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজী চালের কার্ড বিতরণ করা হয়। যা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা  তালিকা প্রস্তুত করে। প্রতি কার্ডধারীকে ১০ টাকার বিনিময়ে ৩০ কেজি হারে এ চাল ২৪ জন ডিলারের মাধ্যমে বিক্রয়  করা শুরু হয়। চালের কার্ডধারীদের তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অধিকাংশ কার্ডধারী রাজনৈতিক বিবেচনা ও অবস্থাপন্ন ব্যক্তিরা স্থান পায়। অসচ্ছল, হতদরিদ্রদের মাঝে চাল বিক্রির কার্ড দেয়ার নিয়ম থাকলেও ইউপি মেম্বার সহ রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা কর্মী তালিকা প্রস্তুতের সময় ভোটের রাজনীতির ফাঁদে পড়ে অধিকাংশ দুঃস্থরা এ তালিকা থেকে বাদ পড়ে যান। সরেজিমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে জানা গেছে, গৌরীঘোনা ইউনিয়নের সন্ন্যাসগাছা গ্রামের প্রভাস দে, সুশান্ত দে, কৃষ্ণ চক্রবর্ত্তীর পাকা দালান বাড়ি। স্বচ্ছল এ পরিবারগুলোর নামে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড করা হয়েছে। অথচ ওই গ্রামের দুঃস্থ আছিয়া বেগমের কাছ থেকে ১‘শ টাকা নিয়েও তার নাম তালিকাভূক্ত হয়নি। ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের কোমরপোল গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে শাহীনুর রহমান গ্রীসে থাকেন। তারা প্রতিবছর জমি কেনেন। পাকা দালান বাড়ি। স্বচ্ছল এ পরিবারের নামে কার্ড করা হয়েছে।

অথচ এ গ্রামের দীন মজুর নুর ইসলাম, আলাউদ্দীন মোড়ল, আব্দুল হালিম, আব্দুল হাকিম, আজিজুর খাদের কাছ থেকে ২‘শ টাকা নিয়েও তাদের নাম তালিকাভূক্ত করা হয়নি। কেশবপুর সদর ইউনিয়নের নতুন মূলগ্রামের সোলাইমান হোসেনের দোতলা দালান বাড়ি, দোরমুটিয়া গ্রামের পাট ব্যবসায়ী রহমত আলী, মুদি দোকানদার আমজাদ হোসেনকেও তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। যখন হতদরিদ্ররা এ চালের কার্ড পাবার আশায় বিভিন্ন সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ফিরছে, তখন এসব ধর্ণাঢ্যরা এ চাল উত্তোলন করে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  শুধু এ তিন ইউনিয়নে নয়, এ উপজেলার সর্বত্রই এ চিত্র ফুটে উঠেছে। এ নিয়ে প্রকৃত দুঃস্থদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভিক্ষুক জালালউদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, তার থেকে গরীব লোক কোমরপোল গ্রামে নেই। তিনি ২ কপি ছবি ও আইডি কার্ডের ফটোকপি ওয়ার্ড (মেহিলা) মেম্বার লিপিকা ঘোষের কাছে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার নাম কেন তালিকাভূক্ত হয়নি তা তার জানা নেই।    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ রায়হান কবীর জানান, পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের কারনে তালিকা পুনঃ নিরীক্ষণে ট্যাগ অফিসার নিযুক্ত করে চাল বিক্রি স্থগিত করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top