সকল মেনু

বি এন কলেজের প্রতিহিংসার শিকার পুলিশ কলেজে

unnamed হটনিউজ ডেস্ক:  বি এন কলেজের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে পুলিশ কলেজের প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা অনিশ্চয়তার মুখে।  মোঃ সোহেল,  শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এইচ এস সি 2016 পরীক্ষা দিয়েছে। তার রোল নং- 112437।স্বপ্ন ছিল বুয়েটে ভর্তি হয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে। কিন্তু এইচ এস সি ফলাফলের পর তার স্বপ্নে ভেঙ্গে হয়। বুয়েটসহ দেশের কোন ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সে পরীক্ষায়ই  বসতে পারবে না। সব কিছু ঠিকই ছিল সমস্যাটা বাধিয়েছে পদার্থ বিষয়। পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে দুই পত্র মিলিয়ে সে পেয়েছে ১৫৮ (একশত আটান্ন) মানে ৭৯% । পদার্থে  তার লিখিত পরীক্ষা নাম্বার ৪০ এর মধ্যে ৩৯ এবং নৈর্ব্যাত্তিকে ৩৫ এর মধ্যে ৩১। শুধুমাত্র ব্যাবহারিক পরীক্ষায় ২৫ এর মধ্যে ১৬ পাওয়ায় জিপিএ-৫এর  স্বপ্ন ছুতে পারে নি সে।

শুধু সোহেল না শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের এমন প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী শুধুমাত্র পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায়র কম নাম্বার পাওয়ায় দুই বা এক নাম্বার এর জন্য জিপিএ ৫ পায়নি। এদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় ৮৫% নাম্বার পেয়েও ব্যবহারিক পরীক্ষায় মাত্র (৩৬-৫০)% নাম্বার পেয়েছে।

শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অভিযোগ এইচ এস সি পরীক্ষার কেন্দ্র পার্শ্ববর্তী বি এন (বাংলাদেশ নেভী) কলেজ, ঢাকার কর্তৃপক্ষ হিংসার বশবর্তী হয়ে পুলিশ স্মৃতি কলেজের ছাত্রদের ব্যাবহারিক পরীক্ষায় নাম্বার কম দেয় । এর প্রতিবাদে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ কলেজের সামনে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। যার ফলে মিরপুর-14 থেকে মিরপুর-10 পযন্ত রাস্তা কাযত বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রাস্তার উভয় পাশে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকগণ রাস্তা থেকে তাদের অবস্থান কমসূচী সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

unnamed

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই বি এন কলেজের শিক্ষকরা তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করতে শুরু করে। পরীক্ষার হলে শিক্ষকরা পরিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রকম নিরুৎসাহমূলক কথা বলে, পুলিশ বাহিনীকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন মন্তব্য করে। পাশাপাশি হলের ইনভিজিলেটরগন বিভিন্ন সময় পরীক্ষার ওএমআর সিট, পরীক্ষার খাতা ছিড়ে ফেলাসহ চিৎকার চেঁচামেচি করে পরীক্ষার হলের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করেছে।

সোহেল নামক ওই শিক্ষার্থী জানায় ” আমি প্রতিটা ব্যবহারিক পরীক্ষা খুব ভালো দিয়েছি। পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষার দিন পরীক্ষক ভাইভা হলে ডেকে মোবাইলে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে যান। অনেক্ষণ ফোনে কথা বলার পর তিনি আমাকে যা যা প্রশ্ন করেছেন আমি সবগুলোই সঠিক উত্তর দিয়েছি। কিন্তু তারপরও তারা কেন এমন করল আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। আমার বুয়েটে ভর্তি হওয়া স্বপ্নই থেকে গেল “।

এ বিষয়ে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজে যোগাযোগ করা হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের “প্রথম পরীক্ষার পর শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অভিযোগ নিয়ে আমরা কয়েকবার বি এন কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তত্বীয় পরীক্ষা শেষে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেন যে , তারা ভীতিমুক্ত ও পরীক্ষা বান্ধব পরিবেশে ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহন করবেন। ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষেও তারা আমাদের জানায় প্রত্যেক পরিক্ষার্থী খুবই ভালো পরিক্ষা দিয়েছে। কিন্তু ১৮ আগস্ট ফলাফল প্রকাশের পর আমাদের শিক্ষার্থী -অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা সবাই হতবাক। কারন তত্বীয় পরীক্ষায় (৮০-১০০)% পাওয়া শিক্ষার্থীদেরকেও বি এন কলেজ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় মাত্র (৩৩-৫০)% করে নাম্বার প্রদান করেন যা নিতান্তই অমানবিক এবং শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথ সম্পূর্নরুপে বন্ধ করে দিয়েছে।”

শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ সূত্রে জানা যায় ২০১২ সালেও একবার বি এন কলেজ, শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের এইচ এস সি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল এবং সেই সময়েও অপ্রত্যাশিত ব্যবহার এবং ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় কম নাম্বার দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যানের বরাবর উক্ত কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহন না করার জন্য আবেদন করলে শিক্ষা বোর্ড থেকে শহীদ পুলিশ স্মৃতি  ও অন্য যেসকল কলেজের সাথে এমন হয়েছিল তাদের আশ্বস্ত করেন যে, পরীক্ষা উৎসবমুখর ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় এর পর কোন শিক্ষার্থী প্রতিহিংসার শিকার হবে না এবং সেই আশ্বাসেই এবার বি এন কলেজ কেন্দ্রে পুলিশ কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে কিন্তু অবস্থার এতটুকু উন্নতি হয় নি।

 
এ ব্যাপারে  বি এন কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ আক্কাস আলীর সাথে ০১৬৭৭৪৪০৩৭৪ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোনে বলেন,আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট, ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।তিনি অারো বলেন, সহিদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের ছাত্রদেরকে ভাইভায় ৫নাম্বারও নোটে ৩ এই নাম্বার অামি অধিকাংশ পরিক্ষার্থীকেই দিয়েছি। তবে এক্সপেরিমেন্টাল”র যে ১৭ নাম্বার সেগুলোতে যে যেমন করেছে আমি তাদেরকে সে ভাবেই নাম্বার দিয়েছি। তাদের যদি এতে কোন ধরণের সন্দেহ থাকে তাহলে তারা খাতা চ্যালেঞ্জ করতে পারে।

এমতাবস্থায়, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি তাদের সাথে বি এন কলেজ যে বিরূপ আচরণ করেছে তার জন্য তাদের ভবিষ্যৎ আজ অন্ধকারে নিমজ্জিত। ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন পূরণ করতে এ মুহূর্তে তারা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী  ও শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ ছাড়া অন্য কোন আশা দেখছেন না। তারা প্রত্যাশা করে, শিক্ষার্থীরা নিয়ম মেনে বোর্ডে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছে। বোড যাতে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষার অংশে পুনঃনিরীক্ষণ করে শিক্ষার্থীদের যথাপোযুক্ত নম্বর প্রদান করা হয় এজন্য তারা  প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী  ও শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top