সকল মেনু

ছড়িয়ে পড়া গ্যাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সার কারখানায় ছড়িয়ে পড়া গ্যাস নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সার কারখানায় ছড়িয়ে পড়া অ্যামোনিয়া গ্যাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। গ্যাসের তীব্রতায় অসুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন হাসপাতাল ছেড়েছেন। অন্যরা ভালোর দিকে।

গতকাল সোমবার রাত থেকে ফায়ার সার্ভিস ও ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানির কারিগরি দল রিজার্ভার থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এখনো রিজার্ভার থেকে কিছু কিছু গ্যাস বের হচ্ছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক জসিমউদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। এখন সামান্য পরিমাণ গ্যাস বের হচ্ছে। এটাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, ছড়িয়ে পড়া গ্যাস নিয়ন্ত্রণ এবং নতুন করে গ্যাস না ছড়ানোর জন্য কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থা। রাত থেকে তারা পানি ছিটিয়ে যাচ্ছে। সকালেও ফায়ার সার্ভিসের ১২টি গাড়ি কারখানার গ্যাসের উৎসমুখে পানি ছিটিয়ে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী আজ সকাল ১০টার দিকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার পর থেকে কোনো রোগী আর ভর্তি হয়নি। এর আগে ৬৭ জন ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে এখন ৪৭ জনের মতো রয়েছেন। সবাই আশঙ্কামুক্ত।

গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অ্যামোনিয়াম ফসফেটের রিজার্ভার দুর্ঘটনায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার পর অ্যামোনিয়া গ্যাসের তীব্রতায় অসুস্থ হয়ে পড়া বেশ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গার ১৫ নম্বর ঘাট এলাকার উল্টো দিকে কর্ণফুলী নদীর পূর্ব পাড়ে ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কারখানাটি ড্যাপ-১ কারখানা নামেও পরিচিত বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনার পর অ্যামোনিয়া গ্যাস নদীর পশ্চিম পাড়ে চট্টগ্রাম নগরের বন্দর ও হালিশহর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। রাতে এ দুর্ঘটনার পর শহরের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

অ্যামোনিয়াম ফসফেট বাতাসের সঙ্গে মিশে অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি করে বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ও পরিবেশ রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমন গাঙ্গুলী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গ্যাসের ঘন মাত্রার ওপর নির্ভর করে এর ক্ষতিকর প্রভাব। তবে এই গ্যাসের প্রভাবে চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

গতকাল রাত একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখতে যান জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন ও সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। এ সময় সিভিল সার্জন সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাস ছড়িয়ে পড়লেও আতঙ্কের কিছু নেই। যেসব এলাকায় গ্যাস ছড়িয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের মাস্ক না পরা এবং আগুন না জ্বালানোর পরামর্শ দেন তিনি।

দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যদের সকালে ওই কারখানা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top