সকল মেনু

কালো কাগজ ঘষলেই ‘ডলার’

1470668464

তাদের প্রতারণার ধরনটা একটু ভিন্ন। নানা কৌশলে মানুষের কাছে বিক্রি করেন কালো কাগজ। সেই কাগজ কেমিক্যালের পানিতে ভিজিয়ে ঘষলেই বেরিয়ে আসে মার্কিন ডলার! অবশ্য ঘটনাটি জাদু নয়, বাস্তবেই বেরিয়ে আসে মার্কিন ডলার। তবে এর নেপথ্যে রয়েছে মহাপ্রতারণা। র‌্যাব বিদেশি এ প্রতারক চক্রের ১০ সদস্যকে আটক করেছে। তাদের নয়জনই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক। গত রোববার বিকেলে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় র‌্যাব-২-এর একটি দল এ অভিযান চালায়।

গতকাল সোমবার দুপুরে তাদের নিয়ে র‌্যাবের শেরেবাংলা নগরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে র‌্যাব-২-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, আটক বিদেশিদের মধ্যে ছয়জন ক্যামেরুন, দু’জন লেসেথো ও একজন কঙ্গোর নাগরিক। দুই নারীর একজন বাংলাদেশি। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি জাল নোট, জাল নোট তৈরির কেমিক্যাল, সরঞ্জাম, ইয়াবা, মোবাইল ফোন ও সিম জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বলেন, আটক আফ্রিকানরা জাল নোট তৈরির আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্য। এই চক্রটি বিভিন্ন লোককে মোবাইল মেসেজ ও ই-মেইল করত। এতে বলা হতো, তাদের কাছে প্রচুর অব্যবহৃত মার্কিন ডলার রয়েছে। বাংলাদেশে এই ডলার তারা বিনিয়োগ করতে চায়। এই ডলারের নোট কালো রঙ করে লুকিয়ে এ দেশে আনা হয়েছে। এভাবে প্রতারক চক্রটি বেশ কয়েকজনের সঙ্গে চুক্তি করেছে। তারা ডলারের নামে নোটের সাইজে কালো কাগজ, জাল ডলার ও কেমিক্যাল বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। এ ছাড়া মাদক ব্যবসায়ও এই চক্র জড়িত ছিল।

আটক বিদেশিদের কাছে কোনো পাসপোর্ট পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আটক বিদেশিদের মধ্যে অনেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। এখানে এসে তারা বাংলাদেশিদের বিয়ে করে বসবাস করছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আটক চক্রটির প্রতারণার ধরন জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তারা বলেন, কালো নোটের ওপর কেমিক্যাল-জাতীয় সাদা পাউডার মেশানো থাকত। একটি পাত্রে এই নোট রেখে তার সঙ্গে কেমিক্যাল-জাতীয় তরল পদার্থ মিশিয়ে হাত দিয়ে ঘষা দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ ঘষার পর নোটের কালো রঙ মুছে বেরিয়ে আসে আসল মার্কিন ডলারের নোট। এভাবে লোকজনকে তা দেখিয়ে কালো কাগজগুলো বিক্রি করা হতো।

আটক বিদেশিরা র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা আসল ডলারের কয়েকটি নোটে কালো রঙ লাগিয়ে প্রলোভনে পড়া লোকজনের সামনে তা ঘষে দেখাত। ফাঁদে যারা পা দিত, তাদের কাছে প্যাকেট করা কালো নোটের বান্ডিল ও পাউডার বিক্রি করা হতো। এসব নোট পরে ঘষা দিলে আর মার্কিন ডলার হতো না, তা থেকে সাদা কাগজ বেরিয়ে আসত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top