সকল মেনু

পার্বতীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম

index পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব আব্দুল হান্নান দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমপে¬ক্স ভবন দ্বিতীয়বারের মত পরিদর্শনে এসে দেখলেন নিম্নমানের নির্মান সামগ্রীর ব্যবহার ও অর্ধশতাধিক ক্রুটি। এর ফলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে কাজের ঠিকমত তদারকি না করায় এলজিইডি’র জেলা ও উপজেলা প্রকৌশলীদ্বয়কে তিরষ্কার করেন।
গত ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে সাড়ে ৬টার দিকে তিনি ওই ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম, এলজিইডি’র জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী (এক্সইএন) খলিলুর রহমান, পার্বতীপুর উপজেলা প্রকৌশলী এফএম রায়হানুল ইসলাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অ্যাড. আব্দুল হাই, কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ এন্টারপ্রাইজের স্বতাধিকারী আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
পার্বতীপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার অ্যাড. আব্দুল হাই বলেন- প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ২০১৫ সালের প্রথমার্ধে শহরের নতুন বাজারে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ভবনটি নির্মান করছে দিনাজপুর জেলা শহরের বিদ্যুৎ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কাজও হয়নি। অথচ অধিকাংশ টাকা তুলে নিয়েছে পার্বতীপুর উপজেলা প্রকৌশলী এফএম রায়হানুল ইসলামের যোগসাজসে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। তিনি আরও জানান, নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারসহ নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে কমপে¬ক্স ভবনটি নির্মান হচ্ছে। বিষয়টি বারবার বলার পরও রহস্যজনক কারণে উপজেলা প্রকৌশলী এফএম রায়হানুল ইসলাম গুরুত্ব দেননি। এমন কি তিনি মনিটরিং কমিটিতে থাকায় তার মনোনিত ঠিকাদারকে কাজ দিয়েছেন অভিযোগ তিনি। বাধ্য হয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে সচিব আব্দুল হান্নান সরজমিন পরিদর্শনে আসেন দুই বার। এদিকে মুক্তিযুদ্ধা কমপ্লেক্সের নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি হওয়ায় সংসদের সকল মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই সাথে সংশি¬ষ্ট ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের  দাবী জানান।
পরিদর্শনের সময় সচিব দেখতে পান ভবনের বিভিন্ন কক্ষের দরজাগুলোয় প্রসেসিং কাঠ ব্যবহারের পরিবর্তে লাগানো হয়েছে অপরিপক্ক ও অসার কাঠ। যেগুলো বছর ঘুরতে না ঘুরতে ঘুনে ধরে নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। মেঝের টাইলস অসমতল, জানালার গ্রীল-থাই গ্লাস, দরজা সবকিছুই নিম্নমানের। জানালার থাই-গ্লাস ভেদ করে কক্ষগুলোতে বৃষ্টির পানি ঢুকছে। অধিকাংশ পার্টিশন ওয়ালে ধরেছে নোনা। কমপ্লেক্স ভবনের মার্কেটের দোকানগুলোতে ২০ মিলিমিটার পে¬নসীটের পরিবর্তে ২৬ মিলি পে¬নসীট ব্যবহার করে সার্টার লাগানো হয়েছে। দরজা, জানালা ও টয়লেটগুলো নির্মাণ করা হয়েছে নকশা বহির্ভূতভাবে। সীমানা প্রাচীরের উচ্চতাও ২ ফুট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে অর্ধশতাধিক ক্রটি সচিব নিজেই চিহ্নিত করে তা পরিবর্তন ও পুনঃনির্মাণ করে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে।
এব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা প্রকৌশলী এফএম রায়হানুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি তার শ্বশুরের মৃত্যুর কারনে কথা বলতে রাজি হননি।
পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব আব্দুল হান্নান পার্বতীপুর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের অধিকাংশ পার্টিশন ওয়াল ভেঙ্গে ফেলে পুনরায় নির্মানসহ মেঝের টাইলস ও দরজার কাঠ পরিবর্তন করার নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top