সকল মেনু

২২ রোজা আজ : ঢাকায় ইফতার ৬.৫৩ ও সেহরি শেষ ৩.৪২

ramadan-cal_18302হটনিউজ২৪বিডি.কম : আজ মঙ্গলবার, পবিত্র মাহে রমজানের ২২তম দিন। এই রোজার মাসটি বছরের অন্যান্য মাস অপেক্ষা অনেক বেশি গুণাবলির অধিকারী। যে কারণে অন্যান্য মাস অপেক্ষা এ মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। মহান আল্লাহ এ মাসেই পবিত্র কোর’আন মজিদ অবতীর্ণ করেছেন। আর এ মাসের একটি রজনীকে তিনি হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রজনী (শবে কদর) হিসেবে স্থান দিয়েছেন। যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলে পবিত্র কোর’আনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ মাসে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বান্দাদের ক্ষমা প্রার্থনার জন্য বিশেষ ছাড় দিয়েছেন। যার সদ্ব্যবহার করে মানুষ তার সব গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিতে সক্ষম।

এ মাসে অধিক কোর’আন তিলাওয়াত, অধিক ইবাদত ও আল্ল¬াহর অধিক জিকির করার মাধ্যমে একজন বান্দা তার প্রভুর নিকটবর্তী হতে পারে। আর যেহেতু এ মাসে মহান আল্লাহ তার পথে চলাচলকারী প্রকৃত বান্দাদের শয়তানের পাতা প্ররোচনার ফাঁদ ও তার মায়াজাল হতে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে, তাই এ মাসটিই হচ্ছে মানুষের আত্মশুদ্ধি সর্বোত্তম সুযোগ। আর প্রত্যেকটি বিবেকবান ব্যক্তির উচিত এ সুযোগের যথাযথ ব্যবহার করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে আল্লাহর রাস্তায় ধাবিত করা। যাতে সারা বছর শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

এখন চলছে নাজাত বা মুক্তির দশক। রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এটি। এ ১০ দিনে এমন কিছু উপলক্ষ রয়েছে যেগুলো যথাযথ উদযাপন করতে পারলে মুমিনের সাফল্য সুনিশ্চিত। শেষ ১০ দিনের সূচনা হয় ইতিকাফ দিয়ে। রমজানের পুরোপুরি সওগাত লাভের জন্য ইতিকাফের কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া পবিত্র লাইলাতুল কদরও এ ১০ দিনেরই যে কোনো বেজোড় রাতে পড়ে যেতে পারে। এ রাতের কারণেই পুরো রমজান তাৎপর্য ও ফজিলতপূর্ণ হয়েছে।

মহানবী হযরত রাসুলুল্ল¬াহ (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) রমজানের ৩য় ১০ দিনে এমন কঠোর পরিশ্রম করতেন যা অন্য সময় করতেন না। (মুসলিম)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল¬øাহ (সা.) প্রত্যেক রমজানে ১০দিন ইতিকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেছেন সে বছর ২০দিন ইতিকাফ করেছেন। (বুখারি)

জয়নব বিনতে উম্মে সালমা (রা.) বলেন, রমজানের যখন ১০দিন বাকি থাকত তখন রাসূলুল¬াহর (সা.) পরিবারের যে কেউ নামাজে দাঁড়াতে সক্ষম হলে তাকে তিনি নামাজে দাঁড় না করিয়ে ছাড়তেন না। (তিরমিজি)

মহানবী (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনে সারা বছরের তুলনায় অনেক বেশি ইবাদত করতেন, রাতভর নিজে ইবাদতের মধ্যে কাটাতেন এবং পরিবারবর্গকেও ইবাদতের প্রতি উৎসাহ দিতেন। রাসূল (সা.) রমজানের শেষ ১০দিনে জাহান্নাম থেকে বেশি বেশি মুক্তি কামনা করার কথা বলেছেন।

বস্তুত দোজখের আগুন একটি প্রলম্বিত ও অসহনীয় দহন যন্ত্রণার উৎস। কারও পক্ষে তা সহ্য করা সম্ভব হবে না। এ জন্য রাসূলুল¬øাহ (সা.) দোজখের আগুন থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। পাশাপাশি এ ১০দিনে মুমিনের স্থায়ী আবাসস্থল জান্নাত প্রার্থনার প্রতিও বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। পবিত্র মাহে রমজানের শেষ ১০ দিনের পূর্ণ ফজিলত অর্জনের জন্য ইতিকাফ হচ্ছে উৎকৃষ্ট উপায়। আল¬øাহর ঘরে সব সময় ধ্যান ও খেয়ালে যেমন থাকা যায় তেমনি মহাপবিত্র লাইলাতুল কদরের ফজিলত লাভেরও প্রত্যাশা থাকে।
মূলত শেষ ১০দিনের সমাপ্তির সাথেই রোজার পূর্ণতা নির্ভর করে। এ সময়ই নির্ণীত হয় রোজার কল্যাণ ও মঙ্গল কে কতটুকু অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সফল ও দুর্ভাগা চিহ্নিত হয়ে যায় এ ১০দিনে। যারা রমজানের সওগাত পুরোপুরি হাসিল করতে চায় তাদের শেষ ১০ দিনের ইবাদত ও উপলক্ষগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগী হতে হবে। এটাই হতে পারে কারও জীবনের শেষ রমজান। জীবনের শেষ রমজান মনে করে আসুন, এ ১০ দিনের পুরোপুরি ফায়দা লাভে সবাই সচেষ্ট হই। আমীন!!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top