সকল মেনু

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক সম্ভাবময় অভিনেতা তানভীর তুহিন

e033db2a-940d-43ec-b8ca-8f48d8a61907 মো: কামরুল ইসলাম, বিনোদন ডেস্ক : তানভীর তুহিন। এক টগবগে যুবক। ফরিদপুর তথা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক সম্ভাবনাময় অভিনেতা। জন্ম ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায়। অভিনয়, নাট্যনির্দেশনা, লেখালেখি, উপস্থাপনাসহ সাংস্কৃতিক বিভিন্ন শাখাতেই রয়েছে তার স্বাচ্ছদ বিচরণ। মূলত মনের টানেই এ পথে আসা। হাঁটিহাঁটি পা পা করেই তার উত্থান। “বৃক্ষ তোমার নাম কি ? ফলে পরিচয়। তানভীর তুহিনের ক্ষেত্রেও কথাটি যেন শতভাগ মিলে যায়। মূলত কাজের প্রতি প্রগাঢ় নিষ্ঠাই তাকে দ্রুত উপরের দিকে তোলার সহযোগীতা করেছে। দু ভাইয়ের মধ্যে তিনিই বড়। খুব ছোটবেলা থেকে তিনি ছিলেন একটু ডানপিটের স্বাভাবের। দুরন্তপনাতেও ছিলেন এগিয়ে। সামনে কোন মানুষ বা জীবজন্তু দেখলেই তাদের চাল-চলন নকল করার চেষ্টা করতেন। শুধু কি তাই? বিভিন্ন অভিনেতার অভিনয় রপ্ত করার মনমানসিকতাও তার ছোটবেলাতেই ফুটে উঠে। মাত্র দশ বছর বয়স থেকে তিনি পা রাখেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। সবচাইতে আশ্চর্যের বিষয় হলো কোনরকম নাট্যপ্রশিক্ষণ ছাড়াই নিজের সৃষ্টিশীল দক্ষতায় ২০০৪ সাল থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে একক অভিনয় ও যৌথ অভিনয়ে অনেক পুরষ্কার ও সুধী জনের প্রশংসা কুড়ান। মূলত এখান থেকেই তার যাত্রা শুরু। এভাবে ধীরে ধীরে চারিদিকে তার নাম ছড়িয়ে পরতে থাকে। ২০১০ সালে এস.এস.সি পরীক্ষার জন্য ও পারিবারিক চাপের কারনে বেশ কিছুদিন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড থেকে তিনি বিরত ছিলেন। পরীক্ষা শেষ করে আবারও শুরুহয় তার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। এর পর কলেজ। কলেজে ভর্তির পর থেকেই তিনি নাটকে গভীর মনোনিবেশ করলেন। মূলত পড়াশোনা নয়, অভিনয়কেই তিনি ধ্যানজ্ঞান মনে করলেন। কলেজে পড়া অবস্থায় বিভিন্ন মঞ্চনাটকে অভিনয় করে কলেজের অধ্যক্ষসহ সুধী জনের প্রশংসা কুড়ালেন। ২০১১ সালে তিনি সেপটোস ফোর থিয়েটারের সাথে যুক্ত হলেন। তিনি নিজ থেকেই উপলদ্ধি করলেন- উঁচু মানের অভিনেতা হতে হলে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। তানভীর তুহিন মনে করেন আজকের এ পর্যায়ে আসার নেপথ্যে বিশেষ অবদান হাওলাদার শামীম

আহমেদের। মূলত হাওলাদার শামীম আহমেদের মাধ্যমেই মঞ্চনাটক ও টেলিভিশন নাটকে তার হাতেখড়ি। সেজন্য অবশ্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেন না। তার মাধ্যমেই তিনি নাটকের বিভিন্ন কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। এভাবেই একের পর এক উন্নত কর্মশালার মাধ্যমেই তিনি ধীরে ধীরে দক্ষ হয়ে উঠেন। তিনি অভিনয় করেন অসংখ্য মঞ্চনাটকে। তার অভিনীত উলে¬খযোগ্য মঞ্চনাটক গুলোর মধ্যে রয়েছে অপসংস্কৃতিক, টেডেক বাবা, মৃত্যুর জ্বালা, সাধু বাবার পাঠশালা, পূর্ণ দৈর্ঘ বাংলা ছায়াছবি, টকশো, এ্যাকশান স্টোরি, স্টার জলসার যন্ত্রনা সহ বিভিন্ন নাটকের অভিনয় করে তিনি ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। তিনি মূলত মুক্ত নাট্যচর্চায় বিশ্বাসী। মঞ্চনাটকে অভিনয় ছাড়াও তার অভিনীত টেলিভিশন নাটকগুলো প্রচারিত হয় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য টেলিভিশন নাটক গুলোর মধ্যে রয়েছে- শূন্যতা, রহস্য, জিলাপি, বসন্তের ফিরে আসা, আম, সেনাপতি নিরুদ্দেশ, দিন বদলের আহ্বান, প্রেমের বাঁধন, অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রা, ধারাবাহিক দ্যা গোস্ট হাউস, ডি আর সোলায়মান ইত্যাদি। কিছুদিন আগে এটিএন বাংলায় প্রচারিত হওয়া ড্যানিশ মুনসুন ফিল্মস ট্যালেন্ট হান্ট রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করে একটি ক্যাটাগরি থেকে তিনি সেরা পাঁচ এ ছিলেন। এই রিয়েলিটি শোটি তাকে সারাদেশ ব্যাপী বিশেষ খ্যাতি এনে দিয়েছে। শিল্পের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে একরকম নেশার মত করেই মিডিয়ায় লেগে রয়েছেন। তিনি শুধু নাটকই নয় বিটিভির দুটি বিজ্ঞাপন ছাড়াও বেশ কিছু স্থানীয় বিজ্ঞাপনে তার স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। তার দৃষ্টির পরিসর জুড়ে অভিনয়ের রঙিন স্বপ্ন অবলীলায় ঢেউ খেলে যায়। তিনি যেন রঙের কৌটো নিয়ে হাঁটেন। অভিনয়ই স্বপ্ন, ধ্যান জ্ঞান। তবে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাটি আরও একধাপ এগিয়ে। অর্থাৎ অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ভালো একজন ডিরেক্টর হতে আগ্রহী। এরই মধ্যে তিনি বেশ কিছু নাটকের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। তার বিশ্বাস বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তথা বিশ্ব সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি একদিন সেরা স্থানটিই দখল করবেন। এবার ঈদে বৈশাখী টেলিভিশনে প্রচারিত হবে তার অভিনীত ছয় পর্বের বিশেষ ধারাবাহিক নাটক “ডি আর সোলায়মান”। এ নাটকে মূল চরিত্রে রয়েছে জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম ও মোনালিসা। নাটকটি রচনা ও
পরিচালনা করেছেন সাজিন আহমেদ বাবু। এছারাও খুব শিগ্রই কোন একটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হবে তার অভিনীত সুমন রেজার পরিচালনায় নাটক সেনাপতি নিরুদ্দেশ। এ নাটকে মূল চরিত্রে রয়েছে জনপ্রিয় অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান ও লাবন্য লিজা। নাটকে অভিনয় ছাড়াও তার অভিনীত বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জীবনী নিয়ে মোক্তাদির ইবনে ছালামের পরিচালনায় রঙ্গের দুনিয়া নামক চলচিত্রটি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এবার ঈদের পর তিনি কাজ করতে যাচ্ছেন একটি ধারাবাহিক নাটক, একটি টেলিফিল্ম ও একটি চলচিত্রে। সাংবাদিক কামরুল ইসলামের সাক্ষাৎকারে উঠতি অভিনেতা তানভির তুহিন এসব কথা আমাদের জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top