সকল মেনু

আজ ৩য় রোজা : ঢাকায় ইফতার ৬.৪৯ সেহরি শেষ ৩.৩৮

ramadhan2_14448হটনিউজ২৪বিডি.কম : আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র মাহে রমজানের ৩য় দিন। এ রমজান মাস মুসলমানের জন্য এক পবিত্র নেয়ামত। আর সে নিয়ামতের ভাগীদার আমরাই। রমজান অফুরন্ত রহমত, বরকত, মাগফিরাত, নাজাত ও ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। তাই এ মাসে মুসলিম নারী-পুরুষরা বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে তাদের নৈতিক মূল্যবোধকে উন্নত করে। আখেরাতের সঞ্চয়কে ম্ফীত করার চেষ্টা করে। রোজা মানুষকে স্বার্থপরতা, জাগতিক মন্দ চিন্তা-ভাবনা থেকে বিরত রাখে। প্রাথমিকভাবে রোজা হচ্ছে একটি আত্মিক অনুশাসন, শৃঙ্খলাপূর্ণ ইবাদত। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআ’লার সন্তুষ্টি অর্জন। যারা আল্লাহর হুকুমে পানাহার থেকে বিরত থাকেন, তার হুকুম পালন করেন তারাই প্রকৃত রোজাদার। তাই প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও! এ মাসের প্রতিরাতে আল্লাহ তাআ’লা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।
মুসলিম বিশ্ব এখন একযোগে সিয়াম পালন করছে। হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো নেক আমল দ্বারা আল্লাহর সান্নিধ্য কামনা করে, সে যেন অন্য সময়ে কোনো ফরজ আদায় করার মতো কাজ করল। এ মাসে যে ব্যক্তি কোনো ফরজ আদায় করে, সে যেন অন্য সময়ের ৭০টি ফরজ আদায়ের নেকি লাভ করার সমতুল্য কাজ করল। এটি সংযমের মাস। আর সংযমের ফল হচ্ছে জান্নাত (মিশকাত)।

রমজান গুনাহগুলোকে মুছে ফেলার এবং নেকিগুলোকে প্রস্ফুটিত করার মাস। রমজানের প্রথম রাতেই শয়তান এবং অবাধ্য জিনগুলোকে বন্দি করে রাখা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ রাখা হয়, পুরো রমজান মাসে তা খোলা হয় না। আর জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, বাকি রমজান তা আর বন্ধ হয় না।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এ মাসে একজন রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহগুলো মাফ হয়ে যাবে এবং দোজখের আগুন থেকে সে মুক্তি পাবে। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। বুখারি ও মুসলিম উপরিল্লিখিত হাদিস দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইবাদতের ক্ষেত্রে রোজার ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে গুরুত্ব দেয়া ও কাজে লাগানো প্রত্যেক বুদ্ধিমান মুমিন বান্দার জন্য অবশ্য কর্তব্য।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসে দিনে রোজা রাখতেন আর রাতে দীর্ঘক্ষণ ইবাদত-বন্দেগি করতেন। সাহাবায়ে কেরামও রমজান মাসকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। হাদিস শরিফে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে এবং এর রাত্রিগুলোতে পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও আত্মবিশ্লেষণের সাথে ইবাদত-বন্দেগি করে, সে মায়ের গর্ভ থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে যাবে। রমজানের রোজা মানুষকে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি দেয়, মানুষের তামাম কুপ্রবৃত্তি ধুয়ে-মুছে দেয় এবং আত্মাকে দহন করে ইমানের শাখা-প্রশাখা সঞ্জীবিত করে। সর্বোপরি আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি খুশি। এর একটি হলো তার ইফতারের সময়, আর অপরটি আল্লাহর সাথে তার সাক্ষাতের সময়।

বস্তুত রোজা আমাদের জন্য বরকত ও রহমত স্বরূপ। এর মধ্যে আল্লাহ তাআ’লার নিয়ামত, বরকত তথা মানুষের জন্য মুক্তি, শান্তি ও মঙ্গল নিহিত রয়েছে। রমজানের ফজিলত বেশি হওয়ায় এ মাসের হক যথাযথভাবে আদায় করা অবশ্যকর্তব্য। এ মাসে প্রতিটি নেক আমলের জন্য ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত নেকি দেয়া হয়। তবে রোজার সওয়াব আরও বেশি। কারণ রোজা একমাত্র আল্লাহর জন্য। তাই এর প্রতিফল আল্লাহ তাআ’লা নিজে প্রদান করবেন। তবে শর্ত হলো, নিজ অন্তরকে সব ধরনের পাপ-পঙ্কিলতা ও কুটিলতামুক্ত করতে হবে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন রোজা রাখে সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং অনর্থক শোরগোল না করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top