সকল মেনু

কামালকে মাইরা ফেলছে, জলদি ফোর্স পাঠাও : শফিউল্লাহকে বঙ্গবন্ধু

কামরুল ইসলাম,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: পাখ–পাখালির আওয়াজে নয়, ওই দিন রাতের নীরবতা ভাঙে ঘাতকের মুহুর্মূহু গুলির শব্দে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বিপদগামী সেনাদের হাতে আক্রান্ত স্বাধীনতার স্থপতির ধানমন্ডির বাড়ি।

দিশেহারা তবুও স্থিরতায় অটুট থেকে বঙ্গবন্ধু টেলিফোন করলেন ওই সময়ের সেনা প্রধানকে। বললেন, ‘শফিউল্লাহ তোমার ফোর্স আমার বাড়ি এ্যাটাক করেছে । কামালকে বোধহয় মাইরা ফেলছে। তুমি জলদি ফোর্স পাঠাও ।’
১৯৮৭ এবং ১৯৯৩ সালে দুটি সাক্ষাৎকারে তৎকালীন (১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট)সেনাবাহিনী প্রধান শফিউল্লাহ এসব তথ্য উল্লেখ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অনুরোধের জবাবে সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ বলেছিলেন, ‘আমি কিছু একটা করার চেষ্টা করছি। পারলে আপনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।’

তবে বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধারের জন্য সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ সেনা পাঠানোর কোনো উদ্যোগ নেননি বলে প্রচার রয়েছে। যে কারণে ওইদিন সেনাপ্রধানের ভূমিকা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেও।

আজ ৫ আগস্ট। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৬৮তম জন্মদিন। ১৯৪৯ সালের এই দিনে শেখ কামাল তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে সপরিবারে নিহত হন তিনি।

যোগ্য সংগঠক আর বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী, তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন। বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনে শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি

 

তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তাঁর। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সেই সময়ের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীরও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।

শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়্যারকোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন।

তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং শাহাদাত বরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top