সকল মেনু

শুরুটা হোক নতুন করে

1452024289লাইফস্টাইল ডেস্ক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ৬ জানুয়ারি : পুরোনো সব ব্যর্থতা, হতাশা, না পাওয়ার গ্লানি মন থেকে ঝেড়ে মুছে ফেলে জীবনযাপনে নতুন প্রত্যাশার আলো জ্বালাতে সবাই যার যার মতো প্রস্তুতি নিয়েছেন বছরের শেষ সময়ে। বছর শেষে নিজের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়েও মনে চলেছে নানা জল্পনা-কল্পনা। হিসেবের খাতায় হয়তো উঁকি দিয়েছে কিছু সাফল্য কিছু ব্যর্থতা। জানেন তো, হোঁচট খাওয়ার জায়গাটিই মানুষ বেশি মনে রাখে। তাই বছর শেষে নিজের হোঁচট খাওয়ার জায়গাগুলোকে সংশোধন করে নতুন চিন্তা, নতুন পরিকল্পনা করা জরুরি। পরিকল্পনাহীন জীবন থাকে এলোমেলো, বিশৃঙ্খল, লক্ষ্যহীন। একসময় সেই জীবন ব্যর্থতা আর বিপর্যয়ের করাল গ্রাসে হারিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে একঘেয়ে জীবনযাপনে অনেকেই হয়তো ক্লান্ত-বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। জীবনকে বড্ড পানসে, বিরক্তিকর, ক্লান্তিকর মনে হচ্ছে। নতুন বছরে জীবনকে বৈচিত্র্যের ছোঁয়ায় আনন্দময়, উপভোগ্য ও তাৎপর্যময় করে তোলার লক্ষ্যে আপনাকে নিজের সামর্থ্য ও সুযোগকে বিবেচনায় আনতে হবে প্রথমে। আমরা কেউই অসুন্দর, ব্যর্থ, বিপর্যস্ত জীবন চাই না। জীবনের সব ক্ষেত্রেই শতভাগ না হলেও বেশ ভালোভাবেই সফল হতে চাই। এক্ষেত্রে বছরের শুরুতেই বছরের রুটিন বা লক্ষ্য নির্ধারণ করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একজন সফল ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি স্তরে যথার্থ পরিকল্পনা নিয়ে সময়ের সদ্ব্যবহার করে জীবনকে সাজান। তাই বছরের শুরুতেই চাই সঠিক চিন্তা, উদ্দেশ্য নির্ধারণ ও কর্ম পরিকল্পনা। কোনো কাজ করার আগে কীভাবে সুন্দর, যথাযথ ও সঠিকভাবে, কম সময়ে শেষ করা যায় তা আগে থেকে চিন্তা করাই হলো পরিকল্পনা। আপনার বছর শুরুর এই সময়ে চাই একটি সুন্দর পরিকল্পনা। এ সময় আপনি আপনার ব্যক্তিগত ও সামাজিক চাহিদা, অবস্থান, সামর্থ্য ও রুচিবোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন। পরিকল্পনা করার সময় চারটি বিষয়ে নজর রাখা উচিত—যথাযথ লক্ষ্য অনুযায়ী সিদ্ধান্ত, সঠিক কাজ, সময় ও প্রচেষ্টা। সিদ্ধান্ত নিতে পারা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সঠিক সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করে জীবনের সাফল্য। কিন্তু শুধু সিদ্ধান্ত নিলেই হবে না, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের যথাযথ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে সবাই চায়। আর এক্ষেত্রে যদি প্রস্তুতি সঠিক হয়, তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারলে স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়া সম্ভব হয়। আর এটি নির্ভর করে আমাদের প্রচেষ্টা, ইচ্ছা, আগ্রহ ও প্রয়োজনীয় দক্ষতার ওপর। তবে এক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিগত সামর্থ্য, দক্ষতা, আগ্রহ, রুচি, উত্সাহ, মূল্যবোধ, স্বপ্ন ও গুণাবলিকে পরিকল্পনায় প্রাধান্য দিতে হবে।

চিন্তা করুন, এমন একটি ব্যাংক, যেখান থেকে প্রতিদিন সকালে আপনাকে ৮৬,১৮৪ টাকা দেওয়া হয়। এ থেকে আপনি ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারবেন। কিন্তু শর্ত হলো, যা খরচ করতে পারবেন না, দিনশেষে তা ফিরিয়ে দিতে হবে। এ রকম হলে আপনি কী করতেন? নিশ্চয়ই পুরো টাকা কাজে লাগানোর জন্য উঠেপড়ে লাগতেন। ‘সময়’ নিয়ে কি আপনি এভাবে ভাবেন? অথচ সময় কিন্তু টাকার চেয়েও বেশি মূল্যবান। কারণ একটি দিনে আপনার জন্য বরাদ্দ থাকে মোট ৮৬,১৮৪ সেকেন্ড, যা আজকে চলে গেলে আর কোনোদিনই ফিরে পাবেন না। এ সময়ের তরুণরা মোটামুটি চার ধরনের কাজ করে সময় কাটান। ১. জরুরি (দরজা খোলা, ফোন ধরা বা কোনো অনিবার্য বাধাবিঘ্ন), ২. গুরুত্বপূর্ণ (ক্লাসের আগে পড়া, নোট তৈরি করা, পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতি, নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন, ৩. জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ (পরীক্ষার পড়া, বাড়ির কাজ, প্র্যাকটিকেল বা কোনো অ্যাসাইনমেন্টের কাজ), ৪. জরুরি না, আবার গুরুত্বপূর্ণও না (যেমন টিভি দেখা, কম্পিউটারে গেম খেলা, মোবাইলে কথা বলা, আড্ডা দেওয়া, বেড়ানো বা অসময়ে অতিরিক্ত ঘুমানো)। সাধারণত তরুণ-তরুণীদের বেশিরভাগ সময় কাটে ৩ ও ৪ নম্বর কাজ করে। কিন্তু একজন দুর্দান্ত তরুণ হিসেবে আপনাকে সবচেয়ে বেশি সময় দিতে হবে ২ ও ৩ নম্বর কাজে। ১ নম্বর কাজগুলো যাতে খুব বেশি সময় নিয়ে না নেয়, সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে এবং ৪ নম্বর কাজগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতে হবে।

মনে রাখুন

বাস্তববাদী হোন। নতুন পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে এমন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করবেন না, যা বাস্তবে অনুসরণ করতে পারবেন না। প্রথমদিকে হয়তো অভ্যাসজনিত কারণে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটু সময় লাগতে পারে। কিন্তু কয়েকদিন চেষ্টা করলেই এটি আপনি আয়ত্ত করতে পারবেন এবং অনুভব করবেন শৃঙ্খলার আনন্দ। দিনের শুরুটা করুন পরিকল্পিতভাবে। তাহলে সারাদিনই বজায় রাখতে পারবেন সুন্দর কর্মছন্দ। লক্ষ করুন, দিন-রাতের কোন সময়ে আপনি বেশি মনোযোগী ও সক্রিয় থাকেন। পরিকল্পনার কঠিন, অপছন্দনীয় ও একঘেয়ে বিষয়গুলোকে সেই সময়ে সাজান। পরিকল্পনায় একই ধরনের বিষয় পর পর না রেখে বৈচিত্র্য রাখুন। এতে মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে। পরিকল্পনা অনুসরণে কখনো ছেদ পড়লে হতাশ হবেন না। পরের ঘণ্টাগুলোর জন্য ফিরে আসুন পরিকল্পনায়। কারণ, পরিকল্পনার ৮০% অনুসরণ করতে পারলেও গড়পরতা অন্যদের চেয়ে আপনি এগিয়ে আছেন।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top