সকল মেনু

ফিরে দেখা ২০১৫, ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ প্রাণহানি

SM3নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৭ ডিসেম্বর : বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১৫ সাল ফেনীর সড়কপথে দুর্ঘটনা বেশি হয়েছে। সড়কে ঝরেছে নারী-শিশুসহ ২৬টি তাজা প্রাণ। মূলত চালকের বেপরোয়া গতি, পথচারীদের অসচেতনতা এবং সড়কের বেহাল অবস্থাই এসব দুর্ঘটনার কারণ।
ঢাকা-চট্টগ্রামের ফেনী অংশ ও জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
ফেনীর মহিপাল হাইওয়ে ও বিভিন্ন থানার থেকে এসব তথ্যগুলো পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি ছাগলনাইয়ায় ট্রাকচাপায় হাফেজ শাহজাহান (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হন। পৌর শহরের স্টারলাইন বাস কাউন্টারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শাহজাহান উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে।
২৩ জানুয়ারি পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হন। তারা হলেন- রফিকুল ইসলাম (৩০) ও মফিজুর রহমান (৩০)। তাদের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মোহাম্মদ আলী এলাকা দিয়ে মোটরসাইকেলে করে রফিকুল ইসলাম যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রফিকুল ইসলামের মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে দিনগত রাত ১২টার দিকে ছাগলনাইয়ার কন্ট্রাকটার মসজিদ এলাকায় মফিজুর রহমান নামে অপর এক যুবক নিহত হন। নিহত মফিজুর রহমান উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মন্দিয়া গ্রামের কাজী আবদুর রহমানের ছেলে।
৩০ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর দেবীপুরের লক্ষ্মীয়ারা এলাকায় বাসচাপায় জুয়েল নামে ৭ম শ্রেণির স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়। জুয়েল লক্ষ্মীয়ারা হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ও লক্ষ্মীয়ারা বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
০১ এপ্রিল ফেনী সদর উপজেলার কাজিরবাগ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে পিক-আপ ভ্যান চাপায় আবদুল আউয়াল (৮) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হয়। নিহত আউয়াল একই গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
একই মাসে ছাগলনাইয়ায় বাসচাপায় সাইফুল ইসলাম (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হন। সাইফুল একটি ওষুধ কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার হিসেবে ছাগলনাইয়ায় কর্মরত ছিলেন।
১২ ডিসেম্বর জেলার ফুলগাজীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় জামিলুর রহমান সিফাত (১৪) নামে এক বাইসাইকেল আরোহী কিশোর নিহত হয়। ফেনী-ফুলগাজী সড়কের মুন্সীরহাটের ফতেহপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিফাত ফুলগাজীর মুন্সীর হাট এলাকার মিসবাউল করিমের ছেলে।
একইদিন ফেনী-সোনাগাজী সড়কের ডাকবাংলা এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চাপায় জাফর আহম্মদ (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন।
৩ ডিসেম্বর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ট্রাকচাপায় সাগর (৭) নামে এক মাদ্রাসাছাত্র নিহত হয়। উপজেলার ধান গবেষণা-সোনাগাজী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মাদ্রাসাছাত্র ওই এলাকার গোলাম মওলা চৌকিদারের ছেলে।
২ নভেম্বর জেলার বন্দুয়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স উল্টে আবুল কাশেম (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
৭ অক্টোবর ছাগলনাইয়া উপজেলায় ট্রাকচাপায় ফারিয়া আক্তার (১০) নামে এক স্কুলছাত্রী ও ০৩ অক্টোবর দাগনভূঞা উপজেলার পৃথকস্থানে ট্রাকচাপায় দুই শিশু নিহত হয়েছে। ফেনী-মাইজদী আঞ্চলিক মহাসড়কের সিলোনীয়া ও দুলামিয়া কটন মিল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
২৮ সেপ্টেম্বর দাগনভূঞা উপজেলায় বাসচাপায় একটি মোটরসাইকেলে থাকা তিন আরোহী নিহত হন। উপজেলার মাতুভূঞা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-  দাগনভূঞা পৌরসভার চাঁনপুর এলাকার বুলবুলের ছেলে ওমর ফারুক আমজাদ রকি (২৫), আবদুল গফুরের ছেলে ইমাম হোসেন সুজন ও একই এলাকার মেজাবাউল হক পন্নী।
২৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা গাইবান্ধাগামী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে জাহাঙ্গীর আলম (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এ সময় আহত হন আরো ১০ জন। সদর উপজেলার কসকা এলাকায় ঢাকা- চট্টগ্রাম মহসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর আলম গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দপুর উপজেলার বাসিন্দা।
২৪ আগস্ট জেলার পরশুরামে মিনিবাসের চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত ও তিন যাত্রী আহত হন। ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের চিথলিয়া স’মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হাজেরার বেগম (৪০) ও বকুল আক্তার (৩৮) নামে দু’জনের মৃত্যু হয়। নিহত হাজেরা চিথলিয়া ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী। আর বকুল আক্তার মধ্যম ধনীকুণ্ডা গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী।
একই মাসে জেলার দাগনভূঞায় পিকআপ ভ্যান-বাস মুখোমুখি সংঘর্ষে নুর মোহাম্মদ ফকির (২৫) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়। নিহত ফকির কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বান্দেরগোলা এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে।
২০ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মোহাম্মদ আলী এলাকায় ট্রাকচাপায় অজ্ঞাতপরিচয় (৩০) এক পথচারী নিহত হন। এছাড়াও মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৪/৫ জন নিহত হন।
বছরে একটি জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় এতোগুলো মানুষের প্রাণ যাওয়াকে উদ্বেগের বলে মনে করছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের ফেনী জেলা আহ্ববায়ক ডা. সাহেদুল ইসলাম কাউসার।
তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে চালকের অদক্ষতা আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর পথচারীদের অসাবধানতাও অনেকাংশে দায়ী।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top