সকল মেনু

প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা দেখালেন !

 হটনিউজ ডেস্ক : ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার একজন অভিযুক্ত সৈনিক এবং ফেনীর দরিদ্র অন্ধ রিকশাচালকের সহায়তায় এক অনন্য মহানুভবতা দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ২৯নং আসামী সাবেক ফ্লাইট সার্জেন্ট আবদুল জলিলের জন্য ৩০ লাখ টাকা এবং ফেনীর অন্ধ দরিদ্র রিকশাচালক মনির হোসেনের মেয়ের জন্য ২ লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এসাইনমেন্ট অফিসার শামীম মুশফিক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী দু’একদিনের মধ্যে এ অর্থ সহায়তার চেক আবদুল জলিল এবং মনির হোসেনের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। প্রসঙ্গত সংবাদপত্রে মনিরকে নিয়ে খবর প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকৃষ্ট হলে তিনি এ সাহায্য প্রদানের নির্দেশ দেন।
আবদুল জলিল আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অপর ৩৫ জনের সাথ অভিযুক্ত হওয়ায় পাকিস্তান সরকার তাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়। ১৯৬৮ সালের প্রথম দিকে এ মামলা হয়। ফ্লাইট সার্জেন্ট আবদুল জলিল পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানকে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন করার লক্ষ্যে বাঙালি সেনা সদস্যদের বিপ্লবী সংস্থায় যোগদান করান।
১৯৬৪ সালের শেষ দিকে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করাচিতে নিজ বাসায় স্বাধীনতা অর্জনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সদস্যদের জন্য অস্ত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেন। তিনি সেখানে হালকা অস্ত্র ও হ্যান্ড গ্রেনেডের প্রশিক্ষণ দিতেন। আগরতলা মামলায় তাকে আটক করার সময় পুলিশ প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হ্যান্ড গ্রেনেডটি মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করে। গ্রেনেডটি বর্তমানে ঢাকা সেনানিবাসের বিজয় কেতন মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
পাকিস্তান বিমান বাহিনী তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করায় তিনি মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করতে পারেননি। ৮০ বছর বয়স্ক জলিল বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতা ও আর্থিক অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে তিনি পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রয় করে জীবন ধারণ করছেন। রাজধানী ঢাকা অথবা অন্য কোন শহরে তার কোন জমি নেই। প্রধানমন্ত্রী তার জীবনের এ করুণ কাহিনী জেনে তাকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন।
একইভাবে ফেনীর অসহায় দরিদ্র মনির তার জীবিকা উপার্জনের জন্য একমাত্র রিকশা চালানো ছাড়া অন্য কিছু করতে পারেন না। তিনি তার ছোট মেয়ে আফরোজা ফারিয়ার সাহায্যে দিনে ভাড়া রিকশা চালিয়ে প্রায় ১৫০ টাকা আয় করেন। তিনি তার চোখের চিকিৎসার জন্য পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। তিনি দু’বছর বয়সে তার দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন। তার পরিবার এখন ফেনী সদর উপজেলায় অন্যের একটি জমিতে ছোট্ট একটি কুড়ে ঘরে বসবাস করেন। তার মেয়ে আফরোজা ফারিয়া স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুলে ক্লাস শেষে সে বেরিয়ে পড়ে বাবাকে নিয়ে। মাগরিবের নামাজের আগ পর্যন্ত ঘুরে তাদের রিকশার চাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top