সকল মেনু

পানির দেশে পানি সংকট

bsf1_2_433438726নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০২ সেপ্টেম্বর : বন্যার ‍পানিতে ডুবে রয়েছে ঘরের প্রায় অর্ধেক। বাড়ির সর্বত্রই থৈ থৈ করছে পানি। উঠানে, আশাপাশে সর্বত্রই বন্যার পানি। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পর্যন্ত। বাধ্য হয়ে ঘরের মেঝেতে বাঁশের মাচাং তৈরি করে বা খুঁটির ওপর চৌকি বা খাট উঁচু করে বসিয়ে বসবাস করছেন অনেকেই। পানিতে ভেসে গেছে পুকুর, খাল। প্লাবিত হয়েছে সবকিছু। তবুও পানির অভাবেই দিশেহারা পানিবন্দি হাজারো মানুষ। পানির মধ্যে বসবাস করেও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটে রয়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন। বন্যার পানিতে এলাকার বিভিন্ন টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় এ সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। সোমবার সকালে উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত এলাকার পানিবন্দি কয়েক পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। দুর্গতরা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গত রোববার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর শহড়াবাড়ি, দক্ষিণ শহড়াবাড়ি, শিমুলবাড়ি, রাধানগর, বৈশাখী, বথুয়ারভিটা, বানিয়াজান, কৈয়াগাড়ি, রঘুনাথপুর, ভুততবাড়ি, পুকুরিয়া ও মাধবডাঙ্গা গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে পানিনিবন্দি হয়ে পড়েন এসব গ্রামের প্রায় তিন হাজার পরিবার। বাধ্য হয়ে গ্রামের অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয় নেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। তবে বেশিরভাগ মানুষ ‍নিজের বাড়িতেই পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এতে তাদের প্রাকৃতিক কাজকর্মসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিটি বাড়ির গভীর নলকূপ তলিয়ে গেছে। এতে করে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি শিমুলবাড়ি গ্রামের হযরত আলী, বিলকিস খাতুন, রাবেয়া বেগম, হেলাল উদ্দিন জানান, এক সপ্তাহ ধরে বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। বাড়ির উঠানে বসানো নলকূপ তলিয়ে গেছে। ফলে বিশুদ্ধ পানি উত্তোলন করতে পারছেন না। প্রতিবেশীদেরও একই অবস্থা। তারা জানান, খাবার পানির জন্য তাদের বন্যার পানি মাড়িয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে বাঁধে যেতে হয়। এরপর বাঁধে বসানো নতুন নলকূপ থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহ করে ফিরতে হয়। এভাবেই প্রতিদিন সকাল-বিকেল পানি সংগ্রহ করে বাড়িতে বালতি, কলস কিংবা পাতিলে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে।
যমুনা পাড়ের পুকুরিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত জয়নব খাতুন, আবুল কাসেম, শেফালি খাতুন জানান, বানভাসী ১২টি গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বাঁধে। এসব মানুষের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যর অর্থায়নে বাঁধে ৬টি নলকূপ বসানো হয়েছে। সেখান থেকেই খাবার পানি সংগ্রহ করেন বাঁধে আশ্রিত লোকজন।
ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল জানান, বাঁধে ৬টি নলকূপ বসানো হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যেসব মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় নিজ বাড়িতে রয়েছেন তাদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মককর্তা (ইউএনও) হাফিজুর রহমান জানান, বর্তমানে বন্যার পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করেছে। দু’এক দিনের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সংকট কেটে যাবে। তারপরও জেলা প্রশাসকের কাছে নলকূপের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top