সকল মেনু

কোটি টাকার হেরোইন ও ৫০ পিচ সোনার বারের হদিস নেই !

mail.google.comবিশেষ প্রতিনিধি,হটনিউজ২৪বিডি.কম: যশোরে অপহরণকারীদের সঙ্গে পুলিশের ‘গুলি বিনিময়ের’ ঘটনা ঘটেছে। এত কোতয়ালী থানার ওসিসহ ৪ পুলিশ সদস্য ও ৩ অপহরণকারী আহত হয়েছেন । গভীর রাতে আহত ৩‘অপহরণকারীকে’ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। আহত পুলিশ সদমস্যরা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ লুকোচুরি করায় বিভিন্ন মহলে এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে খবর রটে যে, যশোরের ঝিকরগাছা এলাকা থেকে এক ট্রাক ড্রাইভারকে অপহরণ করেছে এক দল দূর্বৃত্ত।
পুলিশ দাবি করে, ‘খবর পেয়ে ওই রাতেই অপহরণকারীদের পিছু ধাওয়া করেন যশোর কোতয়ালী থানার ওসি শিকদার আককাছ আলীসহ একদল ফোর্স। সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি এলাকায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তিন ‘অপহরণকারীকে’ ধরে ফেলে। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। পরে ‘গণপিটুনিতে অপহরণকারীরা’ আহত হন। পুলিশ হেফাজতে রাত দেড়টার দিকে আহতদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। আহত ওসিসহ সঙ্গীয় ফোসদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি কথিত তিন অপহরণকারী হলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কৃষ্ণনগর হাটযাদবপুর এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে আশরাফুল (৩২), দেববাড়ীয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে রহমত আলী (২৬) এবং হাটযাদবপুর উত্তরপাড়ার সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে জহুরুল ইসলাম।
ঘটনা আঁচ করতে পেরে এ প্রতিবেদক রাত দশটা  থেকে দীর্ঘসময়  কোতয়ালী থানায় ছিলেন। সে সময় কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলে থানার ওসি শিকদার আক্কাচ আলী বলেন, ‘আমি অপারেশনে আছি। পরে কথা হবে।’ কোতয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার মিজানুর রহমান মৃধা জানান, ওসি ফোর্স নিয়ে কোনো একটা অপারেশনে গেছেন। ফিরে না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।
এদিকে, রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোতয়ালী থানার ওসি পছন্দের কয়েকজন টিভি সাংবাদিককে ফোন করে জানান, তিনি আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। অপহরণকারীদের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে তিনিসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় তিন অপহরণকারীকে অস্ত্রসহ ধরে জনতা পিটিয়েছে। তাদেরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে চুড়ামনকাটি এলাকার বেশ কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে রাতে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা ওই এলাকায় গণপিটুনির কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান। কথিত অপহৃতের নামও পুলিশ জানায়নি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, কোতয়ালী থানার এসআই জামাল আহত তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তিনি জানান, এরা গণধোলাইয়ের শিকার।
কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসান শাহরিয়ার আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে নেন। তিনি জানান, আহতদের শরীরে আঘাতের কিছু চিহ্ন আছে। তবে তা গুরুতর নয় এবং গণপিটুনি বলে মনে হচ্ছে না।
এদিকে নির্ভরশীল একাধিক সূত্র বলছে, পুলিশের হাতে আটক ও কথিত আহতরা আন্ত:জেলা মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্য। তারা কোটি টাকার হেরোইনসহ ৫০পিচ সোনার বার পাচার করার জন্য সীমান্তমুখি যাচ্ছিল। খবর পেয়ে ওসি শিকদার আক্কাছ আলী সঙ্গীয় ফোর্সসহ তাদেরকে ধাওয়া করে যশোর চৌগাছা সড়কের আব্দুলপুর এলাকা থেকে আটক করে। পরে তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত সমুদয় হেরোইন ও সোনার বার হজম করে দিয়ে পুলিশ কথিত গুলিবিনিময়ের নাটক সাজাচ্ছেন। কারন হিসেবে সূত্র বলছে, অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা সমুদয় মাদকদ্রব্য ও ৫০পিচ সোনার বার ওই রাতেই হজম করে দিয়েছেন। যাতে এ নিয়ে কোন প্রশ্ন না ওঠে সে কারনে পুলিশ গুলিবিনিময় নাটক সাজিয়ে তা মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করিয়ে বাহবা নিতে চেষ্টা করছেন।
অপরদিকে আটককৃতদের ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কথিত ৩ অপহরণকারীর সাথে কোন মিডিয়াকর্মীকে কথা বলতে দিচ্ছেন না ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা। ফলে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে।
এদিকে এই বিষয়ে যোগাযোগ করলে ওসি শিকদার আক্কাছ আলী বলেন, ‘আটককৃতদের কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি উস্মা প্রকাশ করে বলেন, মাদক দ্রব্য বা অন্য কিছু উদ্ধার হলে তো জানতে পারতেন। এভাবে প্রশ্ন করলে কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে যায়। আপনার এই প্রশ্নে মনে কষ্ট পেলাম। ঘটনাটি আমার মনে থাকবে। জীবনের ঝুকি নিয়ে আসামী ধরলাম, গুলি খেলাম আর এসব আজে বাজে প্রশ্ন করে আপনারা আমাদেরকে বিব্রত করছেন। এভাবে চলতে থাকলে জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করা ছেড়ে দেব। তাতে আমার বেতন কমবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top