সকল মেনু

‘এ সংগ্রামে আমাদের অবশ্যই জয়ী হতে হবে’

imagesনিজস্ব প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না।’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে তার স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করি। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এ সংগ্রামে আমাদের অবশ্যই জয়ী হতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানব ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঘৃণ্য ঘাতকরা এই দিনে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, কৃষকনেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বেবী সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ, আব্দুল নঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ১৮ সদস্যকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিলও নিহত হন। ঘাতকদের কামানের গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন হতাহত হন এদিন।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শিতা, সাহসিকতা এবং ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। বাঙালি পেয়েছে স্বাধীন রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা ও জাতীয় সংগীত।

‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র জাতির পিতাকে হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে ফেলাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।

‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর থেকেই এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়।

‘জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। মার্শাল ল জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে। দূতাবাসে চাকরি দেয়। স্বধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেয়। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করে। পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের খুন, হত্যা, দুর্নীতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশের জনগণ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আগের সরকারগুলোর রেখে যাওয়া অচলাবস্থা এবং বিশ্বমন্দা কাটিয়ে আমরা ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে দেশকে দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাই। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা ও সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে দেশের জনগণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে পুনরায় আমাদের বিজয়ী করে। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গত সাড়ে ছয় বছর আমরা দেশের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। ইতিমধ্যে আমরা নিম্ন-মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করা।

‘আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী-মানবতাবিরোধীদের বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচারকাজ চলছে। আমরা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে সমুন্নত রেখেছি। কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ বাঙালি জাতির অন্তরে প্রোথিত হয়ে আছে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top