সকল মেনু

চাঁদপুরের হাইমচরে আ’লীগের দু’গ্রুপ মুখোমুখি

শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: জেisলার হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম আকার ধারন করেছে। ফলে মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও হয়ে পড়েছে দ্বিধাবিভক্ত। নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে মাঠে এখন উভয় পক্ষ। যে কোনো সময় সৃষ্টি হতে পারে অনাকাংখিত পরিস্থিতি।

উপজেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, ইউনিয়ন ও তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে জানা যায়, হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের গ্রুপিং দীর্ঘদিনের। তবে গত উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। উপজেলা নির্বাচনের পর ২/১ মাস না যেতেই আকস্মিক বিরোধ দেখা দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারীর। উপজেলা নির্বাচনের সময় দলীয় সিদ্ধান্ত এবং প্রার্থিতা নিশ্চিতের জন্য নূর হোসেন পাটওয়ারী দলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলেও নির্বাচনের পর তিনি স্বপদে বহাল থাকার ঘোষণা দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। এতে বাধ সাধেন সভাপতি এবং দলীয় ফোরামে নির্বাচিত ভারপ্রাপ্ত সধারণ সম্পাদক। ক্রমান্বয়ে এ দ্বন্দ্ব জটিল হতে থাকে। এরই মধ্যে সাধারণ সম্পাদকের পদকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অধিকাংশের উপস্থিতি এবং সম্মতিতে নূর হোসেন পাটওয়ারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে মোতালেব জমাদারকে অব্যাহতি দেন। এতে গ্রুপিং প্রকাশ্য রূপ নেয়। চলে উভয় গ্রুপের বিবৃতি, সভা ও দলীয় গ্রুপিং। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব জমাদার স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে স্থান, সময় ও সিদ্ধান্তের রূপরেখা জানিয়ে বিবৃতি দিয়ে জানান নূর হোসেন পাটওয়ারী এখন আর হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নন। উভয় গ্রুপের বিরোধ মীমাংসার জন্যে এগিয়ে আসেন সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তিনি বর্ধিত সভা আহ্বানের সিদ্ধান্ত দেন সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে। এক পক্ষের দাবি, বর্ধিত সভা আহ্বান করা হলেও জেলা প্রতিনিধি অনুপস্থিতির কারণ দেখিয়ে সভাপতি ওই সভা স্থগিত ঘোষণা করেন। এদিকে পরের দিন স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ হয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির। সভাপতি পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে তারও প্রতিবাদ করেন। কিন্তু উভয়ে উভয়ের অবস্থানে অনড় থাকেন। এরই মাঝে রমযান মাসে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়িতে বিশাল ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য ড. সামছুল হক ভূঁইয়া ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম দুলাল পাটওয়ারীসহ জেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হন ওই ইফতার পার্টিতে। একই দিন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর হোসেন পাটওয়ারী উপজেলা পরিষদে ইফতার পার্টি দেন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মানে। এতেও জেলা আওয়ামী লীগের কাছে বিরোধ স্পষ্ট হওয়ার কথা। কিন্তু এতো ঘটনার পরও হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন্ সিদ্ধান্তটি ঠিক বা কোনটি ঠিক নয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত বা বিবৃতি জেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রকাশ না পাওয়ায় হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিরোধ দিন দিনই সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে।

গত ১ আগস্ট নূর হোসেন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ১নং গাজীপুর ইউনিয়নে সম্মেলন করতে যান। এদিকে মোতালেব জমাদার গ্রুপ পাল্টা কর্মসূচি দেয়। একই দিন ২ গ্রুপের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সারাদিনই রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিলো আতঙ্ক। এখন দু’গ্রুপই রণ প্রস্তুতিতে রয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top