সকল মেনু

পূর্বাচলে হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণ

images

নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০৫ আগস্ট : সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার বর্জ্য অপসারণ করতে ৪২০ কোটি ৩০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্পের আওতায় বেলারুশ থেকে এক্সাভেটর, ড্রিল, হাইড্রোলিক হ্যামার, বুলডোজারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজধানীর পূর্বাচল উপশহরের চার নম্বর সেক্টরে ২০ একর জায়গার ওপর একটি স্থায়ী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ নির্মাণের প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে। সভায় ৩ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট নয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৯৫৯ কোটি টাকা। আর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ৩২ কোটি টাকা।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার বর্জ্য অপসারণের জন্য বেলারুশ থেকে যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে যখন বেলারুশ সফরে যান, তখন এ বিষয়ে দুই সরকারের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছিল। আমদানি করা যন্ত্রপাতি বর্জ্য পরিবহন ও পরিষ্কার, ড্রেন নির্মাণ, মেরামত, রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতে ব্যবহৃত হবে। মন্ত্রী জানান, প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে বেলারুশ সরকার ঋণ দেবে ৩৩১ কোটি টাকা। আর বাকি ৮৯ কোটি টাকা সরকার দেবে। আগামী বছরের জুন নাগাদ যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে। পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার স্থায়ী স্থান নির্ধারণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রাজধানী আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পশ্চিম পাশে অস্থায়ীভাবে প্রতিবছর বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হয়। এতে অনেক টাকা অপচয় হয়। বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণ তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে চীন সরকার অনুদান দেবে ৬২৫ কোটি টাকা। এছাড়া সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৩৮ কোটি এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর নিজস্ব তহবিল থেকে ৩২ কোটি টাকা যোগান দেয়া হবে। ২০১৮ সাল নাগাদ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। দেশের মানুষ যাতে সারা বছর সব ধরনের ফল খেতে পারে এবং সে ফল যাতে বিষমুক্ত থাকে সেজন্য ১৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গতকাল অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে অব্যবহৃত জমি, অনাবাদি জমি এবং পাহাড়ি এলাকার জমি চিহ্নিত করে সেখানে সব ধরনের ফল উৎপাদন করা হবে। সেজন্য দুই লাখেরও বেশি কৃষককে প্রশিক্ষণ দেবে সরকার। গতকাল একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অগমেন্টেশন অব গ্যাস প্রোডাকশন আন্ডার ফাস্ট ট্র্যাক প্রোগ্রাম (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় তিতাসের ১৯, ২০, ২১, ২২ নম্বর কূপ খনন করা হবে। পাশাপাশি রশিদপুর আট নম্বর কূপ খনন করা হবে। গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর জন্যই সরকার সংশোধিত আকারে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া রয়েছে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পীরগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, ১১১ কোটি টাকা ব্যয়ে জামালপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণের মাধ্যমে সেচ দক্ষতা বাড়ানো, ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর এলাকায় পদ্মা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং ২১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প। এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী আরো জানান, সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে যুক্ত হওয়া বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের জন্য সবার আগে বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যেই যাতে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়, সে কথাও বলেছেন। বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার আগ পর্যন্ত বাসিন্দাদের সৌর বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে রাস্তাঘাট, কমিউনিটি ক্লিনিক, উপাসনালয় এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top