সকল মেনু

অপমৃত্যু হলো একটি সম্ভাবনার

BanVsSa1437809588রোমান শেখ, চট্টগ্রাম থেকে : বৃষ্টি না হলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে জয় পেত বাংলাদেশ! পাঁচ দিন মাঠে থেকে চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র করত স্বাগতিকরা! প্রথম তিন দিন দাপটের সঙ্গে লড়াই করা বাংলাদেশ শেষ দুদিনে প্রোটিয়াদের দাপটে থাকতে পারত না! এ রকম হাজারো সম্ভাবনা আর শঙ্কার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল চট্টগ্রাম টেস্ট। কিন্তু শেষ দুদিনে বৃষ্টি ‘অভিশাপে’ পণ্ড দুই দলের সাদা জার্সির লড়াই।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এবারই প্রথম কোনো টেস্ট ম্যাচ ড্র করল বাংলাদেশ। এর আগের আট টেস্টে যে দল আটটিতেই হেরেছিল সেই দলের জন্যে ‘ড্র’ অনেক বড় প্রাপ্তি। পরিসংখ্যানে হয়তো বাংলাদেশ আর দক্ষিণ আফ্রিকার নামের পাশে ‘ড্র’ লেখা থাকবে। কিন্তু এরকম ড্র কি চেয়েছিল বাংলাদেশ?

উত্তরটা- না।

আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই দলের বিপক্ষে প্রাপ্তির খাতায় ড্র অনেক বড় অর্জন। কিন্তু বদলে যাওয়া বাংলাদেশের এই ড্র অপ্রাপ্তিই বহন করে। কারণ এভাবে ড্র চাননি মুশফিকবাহিনী।

টেস্ট শুরুর আগে মুশফিক চেয়েছিলেন পাঁচদিন মাঠে থাকতে। কিন্তু বৃষ্টিবিঘ্নিত এই টেস্টে খেলা হয়েছে মোট ২২০ ওভার। যতটুকু খেলা হয়েছে তাতে এগিয়ে বাংলাদেশই। প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও দক্ষিণ আফ্রিকার রানের লাগাম ধরে রাখেন টাইগাররা।

সবকিছু বিবেচনা করে তাহলে চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের পাল্লা বাংলাদেশের পক্ষেই ছিল! এটা বলাবাহুল্য যে, ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। যেকোনো একটি দিন যেকোনো একটি সেশনে টাইগার গর্জনে কেঁপে উঠতেও পারত প্রোটিয়া শিবির। যদি বলা হয় ‘সম্ভবনার অপমৃত্যু’ হলো, তাহলেও হয়ত ভুল বলা হবে না! জয়-পরাজয় খেলারই অংশ। কিন্তু পাঁচ দিন মাঠে থেকে লড়াইয়ের মানসিকতা তৈরি হওয়াও কম কিসের!

চট্টগ্রাম টেস্টে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল টাইগার শিবির। নিজের অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন বিস্ময়বালক মুস্তাফিজুর রহমান। বিশ বছর বয়সি জুবায়ের হোসেন লিখনের লেগস্পিন জাদু ক্রিকেটপ্রেমিদের মুগ্ধ করেছেন। তামিম, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব ও লিটন দাসরা যেভাবে ব্যাটিং করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার।

তবে সবার থেকে আলাদা করে রাখতে হয় পেসার মোহাম্মদ শহীদকে। দূর্ভাগা বোলার শহীদ প্রোটিয়া শিবিরে আগুন ঝরিয়েছেন। উইকেট পাননি কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৪৮ রানে আটকে রাখতে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য| টানা ৫০ বল রানশূন্য রেখে প্রোটিয়াদের চাপে রেখেছিলেন তিনি। নিজের নামের পাশে টানা ৭ ওভার মেডেন যুক্ত করেছেন। প্রথম ইনিংসে তার বোলিং ফিগার ১৭-৯-৩৪-০।

চট্টগ্রাম টেস্টে রোমাঞ্চ তৈরী হয়েছিল। কিন্তু রোমাঞ্চের শেষটা মধুর হলো না বেরসিক বৃষ্টির অভিশাপে। তবু বাংলাদেশের পাশে যোগ হল আরেকটি ড্র। ড্র নম্বর ১৪। বৃষ্টিতে বাংলাদেশের ড্রয়ের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল আটে।

বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশের ড্র হওয়া টেস্টের তালিকা:

সাল                     প্রতিপক্ষ                 ভেন্যু
২০০১                  জিম্বাবুয়ে                 ঢাকা
২০০৪                  জিম্বাবুয়ে                 বুলাওয়ে
২০০৭                   ভারত                    চট্টগ্রাম
২০০৮                  নিউজিল্যান্ড             ঢাকা
২০১১                  ওয়েস্ট ইন্ডিজ           চট্টগ্রাম
২০১৩                  নিউজিল্যান্ড              ঢাকা
২০১৫                   ভারত                     ফতুল্লা
২০১৫                   দক্ষিণ আফ্রিকা          চট্টগ্রাম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top