সকল মেনু

রংপুরে ঈদ বাজারে উপচেপড়া ভিড়

RANGPUR PHOTO 07-07-15 ইকবাল হোসেন, রংপুর ব্যুরো: জমে উঠছে রংপুরে ঈদ বাজার। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২০ কোটি টাকার পণ্য। গত বছরের চেয়ে এবার জিনিসপত্রের দাম বেশি ও বিক্রি ভাল বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
রংপুর মহানগর দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব রেজাউল ইসলাম মিলন জানান, শহর ও আশপাশ এলাকায় ছোট বড় মিলে প্রায় ৩ হাজার পোষাক, জুতা ও কসমেটিকের দোকান রয়েছে। এসব দোকানের প্রতিটিতে গড়ে প্রতিদিন বিক্রি ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। এতে প্রতিদিন মোট বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। তিনি জানান, গত বছরের চেয়ে এবার পণ্যের দাম কিছুটা বেশি, তবে বিক্রিও ভাল। মিলন আরও জানান, এবার আইন শৃংখলাও অনেক ভাল। তাই ক্রেতারা মধ্যরাত অবধি কেনাকাটা করছে।
রংপুর শহরের বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে গভীর রাত অবধি চলছে বেচাকেনা। নজরকাড়া ডিজাইন ও রকমারী পোষাকে মার্কেটগুলোর দোকানপাট ঝলমল করছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা আর ভীড় বাড়ছে ক্রেতাদের। সকাল থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। জনসাধারণের ভিড়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে দোকানিদের। রংপুর বিভাগ ও সিটি করপোরেশন হওয়ার পর লোকজনের ভীড় ও  বিক্রি আরও বেড়ে গেছে। রংপুরের পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এবং গাইবান্ধাসহ জেলার ৮ উপজেলার মানুষ নতুন ডিজাইনের ভাল পোষাক কেনার আশায় ছুটে আসছেন রংপুর শহরে। ঈদকে ঘিরে রংপুর শহরের সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানী শপিং কমপেক্স, জেলা পরিষদ কমিউনিটি মার্কেট, রাজা রামমোহান কাব মার্কেট, গোল্ডেন টাওয়ার মার্কেট, মোস্তফা সুপার মার্কেট, মতিপ্লাজা, সিটি প্লাজা, ছালেক মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে ব্যাপক আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এছাড়া সেন্ট্রাল রোডে, জি এল রায় রোডে, হনুমান তলাসহ শহরের আশেপাশের মার্কেগুলোতেও ভীড় ল্য করা গেছে। ওইসব দোকানে নারী পুরুষদের বাহারি পোষাক শোভা পাচ্ছে। এবার প্রকারভেদে কাপড়ের দাম ৭ হাজার থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা । এছাড়া সুতি জামা ৩ হাজার থেকে ৪০০ টাকা। ছেলেদের জিন্স প্যান্ট ৩ হাজার থেকে ৮০০ টাকা, বিদেশী গেঞ্জি ২ হাজার থেকে ৫০০ টাকা, জামদানী শাড়ি ২০ হাজার থেকে ৪ হাজার, কারচুপি, রিচপারলোসহ অন্যান্য শাড়ি ৬ থেকে ৮ হাজার, শিমুল কাতান ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা, ছেলেদের সেরোয়ানী ও পাঞ্জাবী প্রকারভেদে ৮ হাজার থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জুতা সেন্ডেলের দোকানে বিভিন্ন রকমারী ডিজাইনের প্রকারভেদে ৯ হাজার থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এসব কেনা বেচার পাশাপাশি কসমেটিক্স ও জুয়েলারী দোকানেও ভীড় দেখা গেছে।
ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, বাজারে নানা রকমের পোষাক ও কাপড় এলেও দাম অস্বাভাবিক। এতে করে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষজন কেনাকাটা করতে পারলেও বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। এ ব্যাপারে নগরীর করমচা ও মোস্তফা ঘরের আসাদুল ইসলাম বলেন, আর্ন্তজাতিক বাজারে সুতার দাম বেড়ে যাওয়ায় কাপড়ের দাম এবার তুলনামূলক অনেক বেশী। তিনি জানান সব মিলে ঈদের বাজার ভালোই চলছে। এদিকে ঈদ উৎসবকে ঘিরে এখনও ভিড় জমে উঠেনি কসমেটিক্সের দোকানগুলোতে। এসব দোকানগুলোতে মেয়েদের জন্য ভারতীয় এমিটেশনের গহনার কদর বেশী। এসব মালা, নেকলেছ, কানের দুল, টপ, পাশা, আংটি, রুলি বালাসহ অনান্য গহনা প্রকারভেদে ৫ হাজার থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
রংপুর সুপার মার্কেটে বেগম রোকেয়া কলেজের শিার্থী লুবনা আক্তার ও তার বন্ধু পারভেজ  একটি পাঞ্জাবি ও একটি ত্রি-পিস কিনেছেন ৯ হাজার টাকায়। তারা জানান, গত বছর ওই একই রকমের পোষাক তারা ৭ হাজার টাকায় কিনেছিলেন। ওই মার্কেটের দোকানি আঙ্গুর মিয়া জানান, আমরা বেশি দামে পোষাক কিনছি তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপেক্সের কেনাকাটা করতে এসেছেন কলেজ শিকিা ইয়াসমিন আরা। তিনি স্বামী, শ্বাশুড়ি, ছেলে ও মেয়ের জন্য ঈদের পোষাক কিনেছেন ২০ হাজার টাকায়। তার জন্য কিছুই কিনেননি টাকা না থাকায়। যে বাজেট নিয়ে তিনি এসেছিলেন মার্কেটে তার চেয়ে অনেক বেশি লেগেছে বলে তিনি জানান। এবার গত বছরের চেয়ে কাপড়ের দাম ডাবল। গরীব মানুষদের কেনাকাটার মার্কেট হচ্ছে ছালেক মার্কেট। ওই মার্কেটে হারাগাছ বাজার থেকে এসেছেন কৃষক আক্কাস আলী। তিনি ছেলের জন্য শার্ট, প্যান্ট, মেয়ের জন্য থ্রি-পিস কিনেছেন। টাকার অভাবে স্ত্রীর জন্য একটি শাড়ি কিনতে পারেননি। তিনি বলেন, এবার কাপড়ের দাম অনেক বেশি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top