সকল মেনু

ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ ও ফিটনেসহীন লঞ্চ

index

নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০৭ জুলাই : ঈদ সামনে রেখে নৌপথে যাত্রী পরিবহণের জন্য ঢাকার আশপাশের ডকইয়ার্ডগুলোতে প্রস্তুত হচ্ছে কয়েক শ’ ঝুঁকিপূর্ণ ও ফিটনেসহীন লঞ্চ। রং আর তুলির আঁচড়ে এসব লঞ্চকে নতুনের মতো করে সাজানো হচ্ছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে যাত্রী পরিবহণের জন্য। সরজমিনে দেখা গেছে, ফিটনেসহীন এবং চলাচলের অযোগ্য অনেক লঞ্চ মেরামত করা হচ্ছে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ২৫টিরও বেশি ছোট-বড় ডকে। এসব লঞ্চের মেরামত ও রং করার কাজ প্রায় শেষের পথে। এ ছাড়া সদরঘাটের বিপরীত দিকে বুড়িগঙ্গার তীরের ডকগুলোও ব্যস্ত। ঈদের আগ পর্যন্ত প্রত্যেকটি ডককেই এ কাজের জন্য বুকিং দেয়া হয়ে থাকে। ডকইয়ার্ডের শ্রমিকরা লঞ্চগুলো পানিতে ভাসানোর জন্য রাত-দিন মেরামত আর তাতে রং লাগানোর কাজ করছেন। চুক্তিতে লঞ্চ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘ঈদের আগে লঞ্চ মেরামতের কাজ বেড়ে যায়। ডক ভাড়া নেয়ার জন্য আগে থেকেই লঞ্চ মালিকরা যোগাযোগ করেন। আর লঞ্চের ফিটনেস থাকা না থাকা আমাদের বিষয় না। মালিকরা এখানে লঞ্চ পাঠায় আর আমরা তা মেরামত করে দিই। মালিকের মতামতের ভিত্তিতে আমরা লঞ্চ মেরামত করি। তবে অনেক পুরোনো লঞ্চও ঈদের সময় মেরামতের জন্য আসে এখানে।’ প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মানুষ ঝুঁকি নিয়েই এসব লঞ্চে বাড়ি ফিরবে। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দাবি করছে, কোনো ফিটনেসহীন লঞ্চ বা জাহাজ ঈদ উপলক্ষে চলাচল করতে পারবে না। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নিয়মকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন রুটে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় পুরোনো লঞ্চ জোড়াতালি দিয়ে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের পরিবহণের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া লঞ্চ মালিক সমিতির বর্তমান হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২০-৩০ বছরের পুরোনো লঞ্চও চলাচল করছে এসব রুটে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিশাল-ঢাকা রুটের এক লঞ্চ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুরোনো লঞ্চ চালানোর বিষয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। মালিকপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে আঁতাত করে প্রতিবছরই ফিটনেসহীন লঞ্চ নামায়। আমরা কর্মচারী। মালিকের চাকরি করি। আমাদের কিছু করার নাই। আমরা তো লঞ্চেই থাকি। যাত্রীদের যা হবে, আমাদেরও তা-ই হবে।’ অবশ্য নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান নৌযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, ‘আসন্ন ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের হয়রানি ও দুর্ভোগ বন্ধে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকার। কোনো ফিটনেসহীন লঞ্চ এবার চলতে দেয়া হবে না। এ ছাড়া এবার কারো বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ফিটনেসহীন লঞ্চের অভিযোগ পাওয়া গেলে এবং তার প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট লঞ্চমালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘নৌদুর্ঘটনা রোধে জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে। নৌপথকে অধিকতর নিরাপদ ও সেবামুখী করতে সরকার বদ্ধপরিকর। পরিবহণ খাতকে সেবামুখী করতে আসন্ন ঈদে বিআইডব্লিউটিএ বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু করবে। এ ছাড়া যাত্রী হয়রানি বন্ধে একাধিক মোবাইল কোর্ট কাজ করবে।’ এ ব্যাপারে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে, জানতে চাইলে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এম আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ফিটনেসহীন লঞ্চে যাত্রী পরিবহণের আসলে কোনো সুযোগ নেই। পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও বিষয়টি তদারকির জন্য মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করা হবে এবার।’ বিআইডব্লিউটিএর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচালক জানান, ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। যেসব লঞ্চের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে, শুধু তারাই অভ্যন্তরীণ নদীপথের বিভিন্ন রুটে লঞ্চ পরিচালনা করতে পারবে। সুতরাং ফিটনেসবিহীন লঞ্চ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top