সকল মেনু

ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারে মার্সেল :চলতি বছর প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৪০ শতাংশ

unnamed অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পন্যের বাজারে শীর্ষস্থান পাওয়ার লক্ষ্যে বিপণণ কৌশলকে ঢেলে সাজিয়েছে দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেল। পণ্যের গুনগত উচ্চমান, সাশ্রয়ী মূল্য এবং সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিয়ে ক্রেতা আকর্ষণ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এরইমধ্যে দেশের বাজারের একটি বড় অংশ নিজেদের দখলে নিয়েছে মার্সেল ব্র্যান্ড। মার্কেট শেয়ার বাড়াতে নতুন ও বৈচিত্র্যময় মডেলের পণ্য নিয়ে এসেছে তারা। দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক পরিধি। চলতি বছর মাসের্লের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ শতাংশ। জানা গেছে, ব্যাপক ক্রেতা চাহিদা ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবার কারণে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারে দ্রুত উঠে উঠে এসেছে দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেল। ফ্রিজ, টিভি, এয়ারকন্ডিশনার, মোটরসাইকেল, জেনারেটর, হোম ও কিচেন এ্যাপ্লায়েন্সসহ মার্সেল ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সারাদেশে। ২০০৮ সালে যাত্রা শুরুর পর মাত্র কয়েক বছরে দেশের ইলেক্ট্রনিক্স বাজারের এক বড় অংশ দখলে নিয়েছে দেশীয় এই ব্র্র্যান্ডটি। সাশ্রয়ী দাম আর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মার্সেল পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা বাড়ছে। চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত মার্সেল ব্র্যান্ডে যুক্ত হচ্ছে নতুন মডেলের পণ্য। গত কয়েক বছর ধরে মার্সেলের প্রবৃদ্ধি ৩০  থেকে ৩৫ শতাংশ। আর এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় চলতি বছর ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ক্ষেত্রে আধুনিক বিপণন কৌশল একটি বিশেষ বিবেচ্য বিষয়। বাজার সম্প্রসারণ এবং মার্কেটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মার্সেল তাদের বিপণন কৌশল ঢেলে সাজিয়েছে। সম্প্রতি সারা দেশকে দুটি প্রধান (উত্তর ও দক্ষিণ) ভৌগলিক অংশে ভাগ করেছে কর্তৃপক্ষ। মার্সেলের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (উত্তর) মোশারফ হোসেন রাজীব বলেন, ২০০৮ সালে মাত্র ৭টি মডেলের ফ্র্রিজ নিয়ে যাত্রা শুরু করে মার্সেল। বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫ টি মডেলের ফ্রিজ  মার্সেল বাজারে ছেড়েছে। এলইডি ও সিআরটি টিভির মডেলের সংখ্যা ৪৫টি।  আর এসি রয়েছে ৩ মডেলের। তিনি জানান, এসিতে মার্সেল দিচ্ছে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। বাজারে মার্সেলের পৌনে এক টন, এক টন ও দেড় টনের এসি রয়েছে। ব্যাপক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বাজারে এয়ারকন্ডিশনারের কর্পোরেট সেল চালু করছেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি তিনটি নতুন মডেলের (৩১৭, ২৯৫ ও ২৫৪ লিটালের) রিফ্রিজারেটর বাজারে এনেছে মার্সেল। গত কয়েক বছর ধরে ইলেকট্রনিক্স গৃহস্থালি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যে কারণে, মার্সেলের ডিভিডি প্লেয়ার, ইলেকট্রিক কেতলি, ব্লেন্ডার, জুসার, আয়রণ, রাইস কুকার, মাইক্রোওয়েভ ওভেনসহ অন্যান্য পণ্যের মার্কেট শেয়ার বাড়ছে। এছাড়া ইলেকট্রিক্যাল সুইট, সকেট, এলইডি লাইট উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে মার্সেল।
মোশারফ হোসেন রাজীব জানান, মার্সেল সব সময় ফোর পি অর্থ্যাৎ প্রোডাক্ট, প্রাইস,  প্লেস ও প্রমোশনের বিষয়টি মাথায় রাখে। বিশেষ করে  মার্সেল  দ্রুততার সঙ্গে আফটার সেলস সার্ভিস দিতে পারছে। তাদের রয়েছে ৭০টি সার্ভিস সেন্টার। খুচরা যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় সহজেই। বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং গ্রাহক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে দক্ষ প্রকৌশলী এবং অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে তৈরি হয় মার্সেল পণ্য। গাজীপুরে রয়েছে মার্সেলের নিজস্ব কারখানা।  গ্রাহকের চাহিদা মাথায় রেখে ফ্রিজের নতুন নতুন মডেল বাজারে আনছে মার্সেল। কর্তৃপক্ষের দাবি, একমাত্র মার্সেলই দিতে পারছে সিআরটি টিভির দামে এলইডি টিভি। মাসর্লের রয়েছে দেশব্যাপী ডিস্ট্রিবিউটর ও বিক্রয়োত্তর সেবা।
সারা দেশে মার্সেলের ৪৫০ জন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছে। মার্সেলের সার্ভিস সেন্টারের রয়েছে আইএসও সনদ ৯০০১:২০০৮। পণ্য সম্পর্কে যে কোনো অভিযোগ নিস্পত্তির জন্য রয়েছে হট লাইন।
কর্তৃপক্ষের দাবি, ফ্রিজ বিক্রির ক্ষেত্রে মার্সেল এখন দ্বিতীয় স্থানে। তাদের প্রত্যাশা দেশে বাজারজাতকারী সকল ব্র্যান্ডকে ছাড়িয়ে যাওয়া। আর এই লক্ষ্য অর্জনে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ফ্রিজের বাজার দখলে তারা গড়ে তুলেছে পণ্য গবেষণা কেন্দ্র। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
মার্সেলের বিপণন প্রধান (দক্ষিণ) মতিউর রহমানের প্রত্যাশা, খুব দ্রুততম সময়ে দেশের ইলেক্ট্রনিক্স বাজারের সিংহভাগ শেয়ার নিজেদের করে নিতে সক্ষম হবে মার্সেল। এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তারা। এছাড়াও  ক্রেতারা হাতের নাগালেই যেন মার্সেল পণ্য পান সেভাবেই বাজার সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গুণগত মান, দাম আর টার্গেট ক্রেতা-এই তিনটি বিষয়ে সমন্বয় রেখে মার্সেল এগিয়ে চলেছে। মার্সেল পণ্য যেমন গুনগত মানে সেরা তেমনি দামও মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্য বিত্তের হাতের নাগালে রয়েছে। বিশেষ করে এই শ্রেনীর ক্রেতারা রঙের বৈচিত্র্য চায়। এ কারণে একই মডেলের পণ্যের ভিন্নতা রয়েছে আমাদের। তিনি জানান, শিগগীরই তাদের প্রোডাক্ট লাইনে যুক্ত হচ্ছে আরো কিছু  ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য।
জানা গেছে, মার্সেল ফ্রিজে ডিইসিএস আলট্রাব্রিড ফোর-ডি প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রযুক্তির বিস্ময় এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ন্যানো পার্টিকেল ব্যবহার করার ফলে ফ্রিজে রক্ষিত খাবার দীর্ঘক্ষণ সতেজ, টাটকা ও জীবানুমুক্ত থাকছে। ৮০ শতাংশ এনার্জি সেভিং এলইডি বাল্ব ব্যবহার করায় বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে কম। শুধু ফ্রিজ নয়; টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও এগিয়ে রয়েছে মার্সেল। মার্সেল উৎপাদন করছে এলসিডি, এলইডি ও সিআরটি টেলিভিশন। উন্নত দেশের মতো সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে মেধাবী ও দক্ষ প্রকৌশলীদের মেধাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। মার্সেল ব্যবহার করছে বিশ্বের সেরা কেমিক্যাল, কাঁচামাল ও মেশিনারিজ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top