সকল মেনু

ভোলার তজুমদ্দিনে ভাঙ্গণের মুখে শত শত পরিবার

unnamed ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার মেঘনায় কাল বৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে নদী তীরে বসবাসরত শত শত পরিবার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গত বছরের নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধও রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। এছাড়া বাঁধ নির্মাণ কাজে ঠিকাদারদের অনিয়ম ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মাওলানা কান্দি, দালাল কান্দি, চৌমুহনী, মহেষখালী, হাজি গ্রাম, গুরিন্দা এলাকাসহ ৮টি গ্রামে গত এক সপ্তাহে ভাঙ্গনের তীব্রতা অনেক বেশি। এছাড়াও সোনাপুর ও চাঁচড়া ইউনিয়নের নদী তীরের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ নদী ভাঙ্গনের আতংকে রয়েছে।
শশীগঞ্জ লঞ্চঘাটের পল্টুনটি মেরামতের জন্য সরিয়ে নেয়ায় গত ৩ দিনে লঞ্চের চাপে ওই এলাকার নদী ভাঙ্গনের পরিমান অনেক বেশি। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে গত বছর নির্মিত মাওলানা কান্দি থেকে চৌমহুনী পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ প্রকল্প। মাওলানা কান্দি গ্রামের মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, ‘দুই বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছি। বর্তমানে ঝড়ের প্রভাবে নদী ভাঙ্গন বেড়ে গেছে। বেড়ি বাঁধ জোয়ারের চাঁপে হুমকির মুখে পড়েছে। নির্মাণ কাজে ঠিকাদারদের অনিয়ম ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় আমরা ভয়ের মধ্যে আছি।’
মহেষখালী গ্রামের মজিদ মিয়া, শফিক, রতন মাঝি, হারুন দালাল জানান, ‘এখান থেকেও ঘর দুয়ার সরিয়ে নিতে হবে। এ গ্রামের অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়বে।’
চাঁচড়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী সিরাজ, শাহে আলম ও জালাল আহম্মদ জানান, ‘প্রতিবছর বেড়ি বাঁধের সংস্কার কাজ সঠিক ভাবে না হওয়ায় বার বার নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়তে হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে আসন্ন বর্ষা মৌসূমে এ গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার ভাঙ্গনের কবলে পড়বে।’
উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদ উল্যাহ জসিম জানান, ‘গত কয়েক দিন ধরে ভাঙ্গনের মাত্রা বেড়ে গেছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। এখানকার ৪টি ইউনিয়ন দীর্ঘদিন নদী ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলোতে ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা জরুরী। তা নাহলে ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যেই উপজেলা সদর বিলীন হয়ে যেতে পারে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ভোলা পওর বিভাগ-২) নির্বাহি প্রকৌশলী কাইসার আলম জানান, ‘ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত জরুরী সংস্কারের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করা হবে। বরাদ্দ পেলে আমরা কাজ শুরু করতে পারবো। এছাড়া স্থায়ীভাবে শহর রক্ষার জন্য তজুমদ্দিন উপজেলার মহেষখালী থেকে গুরিন্দা বাজার এলাকা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার একটি ব্লক স্থাপনের প্রকল্প বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে আগামী অর্থ বছরের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনা কম।’
প্রসঙ্গত, তজুমদ্দিন উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ভোলা পওর বিভাগ-২) পোল্ডার নম্বর ৫৬/৫৭’র আওতায় চেইনেজ ৪৯.০০ থেকে ৬৮.০০ পর্যন্ত মোট ১৯ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে গত ২ অর্থ বছরে মোট ৬ হাজার ১শ’ মিটার নতুন বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হলেও একন পর্যন্ত মাত্র ৬৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাণ কাজে ঠিকাদারদের অনিয়ম ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top