যশোর থেকে আব্দুল ওয়াহাব মুকুল: ‘মুক্ত মনের আলোকে, আঁধার কাটুক পলকে’ বাধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস-আনন্দে আর বর্ণিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে যশোরে উদযাপিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ-পহেলা বৈশাখ। মঙ্গলবার ভোর থেকেই উৎসবপ্রিয় বাঙালির পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রাচীন এই জনপদ। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন শহরের মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করেছে নাচ-গান, মিষ্টিমুখ, ও পান্তা ইলিশের অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো যশোরের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হচ্ছে পৌর পার্কে। সকাল ৬টা ১ মিনিটে ‘মুক্ত মনের আলোকে, আঁধার কাটুক পলকে’ উদীচী যশোর এখানে শুরু করে বর্ষবরণ ও বর্ষবরণ আয়োজনের চার দশকের অনুষ্ঠানমালা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সভাপতি কামাল লোহানী, মনিরুল ইসলাম এম পি, জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি রতন বসু মজুমদার। অনুষ্ঠানে নারী আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য নারীনেত্রী হাবিবা শেফাকে সংবর্ধিত করা হয়। জেলা প্রশাসন ও চারুপীঠ যশোর যৌথভাবে সকাল ৮টায় শহরে বের করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর। কালেক্টরেট চত্বর থেকে বের হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল নামে। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
বিবর্তন যশোর ও সুরধুনী ভোরে নবকিশলয় বিদ্যালয় মাঠে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করে। নাচ, গান, আবৃত্তি ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে শিশুতোষ নাটক মঞ্চস্থ করা হয়।
সুরবিতান সংগীত অ্যাকাডেমি সকালে টাউন হল ময়দানে, মাইকেল সংগীত শিক্ষা কেন্দ্র দৈনিক কল্যাণ চত্তরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এছাড়া, শহরের অন্তত ২৫টি স্পটে পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।
এসব অনুষ্ঠানে বাহারি পোশাকে হাতে-মাথায় বৈশাখের শুভেচ্ছাসংবলিত রাখি ও মুকুট পরে হাজার হাজার নারী-পুরুষ-শিশু অংশ গ্রহণ করে। র্যালিতে ছিলো বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া ও গরুর গাড়ি। অংশ গ্রহণকারীরা কেউ জেলে, কেউ কুমোর আবার কেউ বাউল সেজে শহরবাসীকে আনন্দ যুগিয়েছে।
গভীর রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে এসব অনুষ্ঠান চলবে বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি হারুন অর রশিদ। জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।
এদিকে নববর্ষের এ ক্ষণে হানাহানিমুক্ত এক দেশের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষ ও সাস্কৃতিক কর্মীরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।