সকল মেনু

বাংলাদেশে আশংকাজনক হারে বাড়ছে কিডনি রোগীর সংখ্যা

kidney-day-14153নিজস্ব প্রতিবদেক : কিডনি রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনমনে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য প্রতি বছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার পালন করা হয় ‘বিশ্ব কিডনি দিবস’। ‘সবার জন্য সুস্থ কিডনি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ বছর বিশ্বের ১৫৭ টি দেশ পালন করছে দিবসটি।

বাংলাদেশে প্রতিবছরই আশংকাজনক হারে বাড়ছে কিডনি রোগীর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞদের দেয়া তথ্য মতে, দেশে প্রতি ঘণ্টায় ৫ জন মারা যাচ্ছে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে। ব্যয়বহুল চিকিৎসার বিপরীতে গণসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি মরণোত্তর কিডনি দান করাকেও উৎসাহিত করার উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শরীরে রক্তকে পরিশোধিত করার জন্য দু’টি কিডনি থাকলেও, তা বিকল হয়ে যাওয়ায় পরিশোধনের এই কাজটি করছে ডায়ালাইসিসের এই যন্ত্রটি। আর এর জন্য গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা, যা বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশের অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। তাই কিডনি রোগে শুধু ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছে না, অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই রোগের চিকিৎসা করাতে পুরো পরিবারকেই ভোগ করতে হচ্ছে এর পরিণাম।

ডায়াবেটিক, উচ্চ-রক্তচাপ, নেফ্রাইটিস, অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনসহ নানান কারণে কিডনি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি-ক্যাম্পস’ এর দেয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটির বেশি লোক কোন না কোন ভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত হলেও এর ব্যয়ভার বহন করতে পারছেন মাত্র ৫ শতাংশ।

ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজীর পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী রফিকুল আবেদিন বলেন, ‘ডায়ালাইসিস সর্বোচ্চ ১০-১৫ শতাংশ আর ট্রান্সপ্লান্ট ২-৩ শতাংশ দিতে পারছি।’

কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, ‘ডায়ালাইসিস সেন্টার যেগুলো আছে সেগুলো বড় বড় শহর কেন্দ্রিক। সেজন্য সরকারের উচিত হবে অন্ততপক্ষে প্রত্যেক জেলা শহরে এবং সুযোগ থাকলে প্রত্যেক থানা পর্যায়ে ডায়ালাইসিসের সুবিধা নিয়ে যাওয়া।’

সমস্যা মোকাবেলায়, মরণোত্তর কিডনি দান এবং অঙ্গ দান বিষয়ক যে আইন বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে, সেটি হালনাগাদ করার পরিকল্পনার কথা জানালেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজী’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী রফিকুল আবেদিন।

কিডনি ফাউন্ডেশনের কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। ভারতে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন খুব ভাল হচ্ছে। আমাদের দেশেও চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারও এই বিষয়ে নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে।’

দেশে কিডনি বিকল রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ খুবই সীমিত বলে চিকিৎসা সেবা বাড়ানোর পাশাপাশি গণসচেতনতা তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top