সকল মেনু

ক্রটিপূর্ণ ট্র্যাক ম্যানেজমেন্ট: রেলপথে ঘটছে দুর্ঘটনা

rail-acciনিজস্ব প্রতিবদেক : নাশকতার পরিমাণ কিছুটা কমে আসলেও ক্রটিপূর্ণ ট্র্যাক ম্যানেজমেন্টের কারণে রেলপথে দুর্ঘটনা ঘটছে। রেল পুলিশের দাবি, গত দেড় মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নরসিংদী পর্যন্ত রেলপথে প্যাডেল ক্লিপ এবং ফিশপ্লেটের নাট-বল্টু খুলে যাওয়ায় ৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, রেল কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারির অভাবেই রেলপথে নাশকতা হচ্ছে। এদিকে, ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ’ ৮০ কিলোমিটার রেলপথের ক্রুটি সারানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে বারবার নাশকতার কবলে পড়েছে রেলপথ। বিশেষ করে নাশকতাকারীরা ফিশপ্লেট খুলে নেয়ার পাশাপাশি রেললাইনও কেটে ফেলে। এ অবস্থায় আন্দোলন শুরুর দিকে রেল যোগাযোগ অনেকটা বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। কিন্তু পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নানা ব্যবস্থার মাঝেও ঘন ঘন ট্রেনের লাইনচ্যুতি রোধ করা যাচ্ছে না। রেলওয়ে পুলিশের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে ত্রুটিপূর্ণ ট্র্যাক ম্যানেজমেন্টের বিষয়টি। পুলিশের মতে, ত্রুটিপূর্ণ নানা সিস্টেমের কারণেই গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নরসিংদীর মধ্যে ৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নাশকতার কারণে কিছু রেল চাইনচ্যুত হয়েছে অথবা দুর্ঘটনায় পড়েছে। এর বাইরেও গত দুই মাসে দেখা গেছে প্রায় আট থেকে নয়টি দুর্ঘটনা ঘটেছে যা রেললাইনের ত্রুটির কারণে অথবা দুর্বল মেরামতের কারণে ঘটেছে। এছাড়া ভুল সিগন্যালের জন্যও দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।’

৮টি দুর্ঘটনার মধ্যে ৫টি হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে। তবে জেলার সদর উপজেলা জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, রেল কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে নাশকতার ঘটনা ঘটছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত বলেন, ‘দুর্ঘটনার পেছনে কারণ হিসেবে নাশকতা অবশ্যই রয়েছে পাশাপাশি রেলের দুর্বলতা ও প্রাচীন কাঠামো এর জন্য দায়ী। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে খুব একটা তৎপর নয়।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন মিঞা বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যদি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সব ঠিকঠাক করে রাখে তাহলে নাশকতাকারীরা অন্তত ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে রেলের উপর কোন আক্রমণ বা দুর্ঘটনা ঘটাতে পারবে না।’

এ অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রামের চিনকি আস্তানা থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত ১শ’ ৮০ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল) এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ট্র্যাক) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় রক্ষণাবেক্ষণ কাজ জোরদার করেছি। পাশাপাশি চিনকি আস্তানা থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১শ’ ৮০ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কারের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২০ কি.মি. কাজ সম্পূর্ণ শেষ করা হয়েছে।’

রেলওয়ে’র পূর্বাঞ্চলে প্রতিদিন যাত্রী এবং পণ্যবাহী অন্তত আড়াইশ ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে রয়েছে ৮টি আন্তঃনগরসহ ৫০টির বেশি ট্রেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top