সকল মেনু

পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিলুপ্তির পথে মৃৎ শিল্প

মৃত শিল্পটাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলারয় প্লাস্টিক শিল্পের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে এবং আধুনিকতার যাঁতাকলে পরে মৃৎ শিল্প আজ বিলুপ্তি হতে চলেছে। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫ হাজার পাল পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। পৃষ্টপোষকতার অভাবে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেক পরিবারই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পরছে।
মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে অনেক পরিবারই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়িত হয়ে পরেছে। তাদের অভিযোগ মানুষ আগের মত এখন আর মাটির তৈরী জিনিসপত্র কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না ।
জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলা এক সময় মৃৎ শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। মৃৎ শিল্পের জন্য সমৃদ্ধ ছিল এই উপজেলার বাইমহাটি,পুষ্টকামুরি,আন্দরা, দেওহাটা কচুয়াপাড়া,বহুরিয়া,গোড়াই,ফতেপুর,ইচাইল, ভাদগ্রাম,পাকুল্লা, সাটিয়াচড়া, চুকুরিয়া, গুনটিয়া,মহেড়া,বানাইল, ওয়ার্শি,তরফপুরসহ ৩০/৩৫ টি গ্রাম ছিল মাটির তৈরী মৃৎ শিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানকার পাল সমপ্রদায়রা অত্যান- সু- নিপুন ভাবে তৈরী করতেন হাড়ি, পাতিল,বাসন, কলসি,বদনা,
পেয়ালা, দইয়ের পাতিল, ফুলের টব,মাটির ব্যাংক, মুড়ি ভাজার চালনি,পুতুলসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা সামগ্রী। হরিপদ পাল (৬০), প্রফুল্ল কুমার পাল (৫০) সহ কয়েকজন মৃৎ শিল্পী জানিয়েছেন মির্জাপুর উপজেলায় কম করে হলেও ১০/১২ হাজার পাল সমপ্রদায়ের বসবাস ছিল। প্লাস্টিক শিল্পের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে পাল সমপ্রদায়ের বেশীর ভাগ পরিবার বাপ দাদার পেশা ছেড়ে দিয়ে নানা পেশায় জড়িয়ে পরেছে। তারা জানিয়েছে মাটির তৈরীর তৈজসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে আ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরী তৈজসপত্র। গ্রামের বিভিন্ন মেলা ও উৎসবে সেই পুরনো দিনের ঐতিহ্য মৃৎ শিল্প আজ আর চোখে পরে না।
অপর দিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা ছাড়াও কালিহাতি,দেলদুয়ার, নাগরপুর , বাসাইল, সখীপুর, ভুয়াপুর, ঘাটাইল, মধুপুর ও ধনবাড়ি এলাকাতেও পাল সমপ্রদায়দের দুর্দিন বলে জানা গেছে ।
এলাকাবাসী ও মৃৎ শিল্পীরা জানিয়েছেন, মাটির দাম,পাটখড়ি ও রংয়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক পরিবার আর এ পেশায় টিকে থাকতে পারছে না । ফলে মৃৎ শিল্পের প্রতি সাধারন মানুষের তেমন আগ্রহ নেই। সরকারী ভাবে পৃষ্টপোষকতার অভাব এবং ব্যাংক ঋনের কোন সুবিধা না থাকায় মৃৎ শিল্পীরা এ পেশা ছেড়ে দিচেছ। মৃৎ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারী পৃষ্টপোষকতা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন বলে মৃৎ শিল্পীরা জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top