হট নিউজ অফিস, ঠাকুরগাও : কোন রকম কারন দর্শানো ছাড়া কালের কন্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক (ঠাকুরগাও), আলী আহসান হাবিব, কে অব্যাহতি দিয়ে চিঠি দিয়েছে কালের কন্ঠ। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিক আলী আহসান হাবিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, তথ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব, নোয়াব, বিএফইউজে, ঢাকা জেলা জজ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বরাবরে অভিযোগ দাখিল করে। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কালের কন্ঠের কাছে অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়ে ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেত গত ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ (স্মারক নং-বাপ্রেকা/৩/৫৬৫/২০১৪/১৭৯-১৮৩) একটি চিঠি প্রদান করেছে।
সাংবাদিক হাবিব তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, বিচারপতি এবাদ উদ্দীন আহাম্মদকে প্রধান করে সংবাদপত্র মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ ও সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে অষ্টম রোয়েদাদ বোর্ড বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। সাংবাদিক হাবিব গত ২০০৯ সালে শিক্ষানবীশ নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কালের কন্ঠে যোগদান করে ও পরে ২০১১ সালে ক শ্রেনীভুক্ত পত্রিকার ৭ম ওয়েজ বোর্ডের ৩য় ধাপের নিজস্ব প্রতিবেদক (ঠাকুরগাও) হিসেবে তার চাকরী স্থায়ীকরন হয়।
২০১২ সালে ৭ম ওয়েজ বোর্ড রহিত করে অষ্টম রোয়েদাদ বোর্ড বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন মূল বেতনের শতকরা ৫০ ভাগ হারে মহার্ঘভাতা প্রদানে বাস্তবায়নের নির্দেশ করে তথ্য মন্ত্রনালয়। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখ থেকে ৮ম ওয়েজ বোর্ড কার্যকরী হয় এবং অন্যান্য ফ্রীজ ভাতা বর্ধিত করে তথ্য মন্ত্রনালয় তা বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতামূলকভাবে প্রজ্ঞাপন জারী করে।
সাংবাদিক হাবিবকে অব্যাহতি প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত এসব সুযোগ সুবিধার কোনটিই প্রদান করেনি কালের কন্ঠ। বরং সুচতুরভাবে অষ্টম রোয়েদাদ বাস্তবায়ন না করার প্রয়াসে তাকে চাকুরী থেকে কোন কারন দর্শানো ছাড়াই গত ২০ জানুয়ারি অব্যাহতি পত্র প্রদান করা হয়।
এক্ষেত্রে কালের কন্ঠ সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের ৮ম অধ্যায়ের ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ি অবৈধভাবে সুবিধা গ্রহণ করছে। তাছাড়া শ্রম আইনের সংশোধিত ২০১৩ অনুযায়ি “অব্যাহতি” কথাটি ব্যবহার করে সাংবাদিক হাবিবের প্রতি অন্যায় আচরন করা হয়েছে। এবং “অব্যাহতি” কথাটির যথাযথ কোন ব্যাখ্যা প্রদানে ব্যার্থ হয় কালের কন্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল মিলন।
কর্মরত স্থায়ী কোন সাংবাদিককে অব্যাহতি প্রদানের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট বিধান থাকলেও তার অপব্যবহার করা হয়েছে। কর্মক্ষম ও শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ একজন সাংবাদিককে কোন অবস্থাতেই অব্যাহতি প্রদান করা যায় না। তাছাড়া স্থায়ী কাউকে বরখাস্ত করা, ছাটাই করার পূর্বে কমপক্ষে ১২০ দিনের নোটিশ প্রদান করে কমপক্ষে ৭ দিনের সময় দিয়ে ব্যাখ্যা চাওয়ার বিষয়টি উপেক্ষা করেছে কালেরকন্ঠ।
এ কারনে সাংবাদিক হাবিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, তথ্য মন্ত্রনালয়, সাংবাদিক সংগঠন, জেলা জজ আদালত ও প্রধান বিচারপতি বরাবরে অষ্টম ওয়েজ রোয়েদাদ বোর্ডের ৮ম অনুচ্ছেদের ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ি মিথ্যা তথ্য প্রদান করে কালের কন্ঠ সরকারি সুবিধা গ্রহন করছে এবং “অব্যাহতি” কথাটি প্রয়োগ করে চরম আইন লংঘন করা হয়েছে এবং তার ক্যারিয়ারে আঘাত হানা হয়েছে যা উদ্দেশ্যপ্রনোদিত, এ মর্মে বিচার প্রার্থনা এবং যথাযথ নিয়ম অনুযায়ি সুযোগ সুবিধা প্রদান করে তথাকথিত এ “অব্যাহতি” ন্যয় বিচারের পরিপন্থি বলে সুষ্ঠ বিচারের আবেদন করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল কুমার কর্মকার কালের কন্ঠকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি প্রদান করেছেন।
উল্লেখ্য যে, কালের কন্ঠ অধিকাংশ জেলা প্রতিনিধিকেই অষ্টম এমনকি ৭ম ওয়েজ রোয়েদাদ ভুক্ত না করেই সামান্য কিছু ভাতা, লাইনেজ বিল ও ছবির বিলের শর্তে নিয়োগ প্রদান করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে লাইনেজ ও ছবির বিল প্রদান করেনি। এমনকি অধিকাংশ মফস্বল সাংবাদিককে রিটেইনার ভাতা সহ ৭ম বা ৮ম ওয়েজ অনুযায়ি কোন সুযোগ সুবিধা প্রদান না করে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে আসছে।অষ্টম ওয়েজ রোয়েদাদ বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচাররককে প্রধান করে ২০১২ সাল থেকে ১২ টি সভা করলেও কালের কন্ঠ তার আয় ব্যায়ের হিসাব প্রদান করেনি। তাছাড়া বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ি অষ্টম ওয়েজ রোয়েদাদ বোর্ড নীতিমালা বাস্তবায়ন না করে সরকারি ঘোষনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে কালের কন্ঠ। কালের কন্ঠের মিথ্যা তথ্য প্রদান করে সরকারি সুবিধা আদায়ের কারেন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের মত অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েছে এবং অন্যদিকে সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করে সাংবাদিকদের সরকারের বিরুদ্ধে উষ্কানীমূলক কর্মকান্ড সহ সরকারের আইনের প্রতি অবজ্ঞা করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।
এ সম্পর্কে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক নেতারা কালের কন্ঠের এমন কর্মকান্ডে নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন এবং আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিষটি সাধারন সভায় উপস্থাপন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের ব্যবস্থা করা হবে বলে সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা খায়রুজ্জামান কামাল মন্তব্য করে বলেন।
হাইকোর্টের ব্যারিষ্টার শাহরিয়ার আলম জয় বলেন, কোন অবস্থাতেই কোন স্থায়ী কর্মীকে অব্যাহতি দেবার বিধান নেই। তাছাড়া “অব্যাহতি” কথাটি প্রয়োগ করে চরম সম্মানহানী ঘটানো হয়েছে। তাছাড়া সরকার ঘোষিত মহার্ঘভাতা, অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন না করে চতুরতার আশ্রয় নেয়া হয়েছে এবং সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে ৮ম ওয়েজ বোর্ডের ৮ম অধ্যায়ের ক অনুচ্ছেদের শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি সুবিধা নেয়া, এবং কোন সরকারি নিয়ম লংঘন শুধু শ্রম আইনই নয়, ফৌজদারী দন্ডবিধি মোতাবেক অপরাধ করেছে। তাছাড়া “অব্যাহতি” কথাটির যথাযথ ব্যাখ্যা সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদককেই প্রদান করতে হবে, নইলে তিনি অবশ্যই ফৌজদারী দন্ডবিধি অনুযায়ি অপরাধে দন্ডপ্রাপ্ত হবেন। তাছাড়া শ্রম আইনের বিষয়টি আপাতত আসছে না, কারন অব্যাহতি কথাটির মাধ্যমে মানহানীর এবং একজন মানুষের স্থায়ী ক্ষতি করার অপপ্রয়াসের বিষয়টি বিচার্য্য হবে। এ বিষয়টির পরে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত মেনে নিলে নিয়ম অনুযায়ি শ্রম আইনের সমস্থ বিধান মেনে ক্ষতিপুরন পরিশোধ করতে বাধ্য।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।