সকল মেনু

সহিংসতা দমনে নতুন কোন আইনের প্রয়োজন নেই।: প্রধানমন্ত্রী

 নিজস্ব প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। সহিংসতা দমনে নতুন কোন আইনেরও প্রয়োজন নেই। বুধবার দশম জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া লাশের ওপর পা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান। খালেদা জিয়া উন্মাদ হয়ে গেছেন, পাগল হয়ে গেছেন। নির্বোধের মতো পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন।’ তিনি বলেন, ‘আইন আছে তারপরও দেশের সাধারণ মানুষ এবং বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে এই জঙ্গিবাদ, খুন, আগুনে পুড়িয়ে মারার মত কার্যকলাপ বন্ধ করতে পাড়া মহল্লায় সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠন করতে হবে। এখনো জরুরি অবস্থা জারির সময় হয়নি। যে সন্ত্রাস চলছে তা বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঠেকানো হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেক সংসদ সদস্য তাদের নিজ নিজ এলাকায় কর্মীবাহিনী নিয়ে সন্ত্রাস মোকাবেলায় প্রস্তুত হন। যেখানে বিএনপি জামায়াত-সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবে, জঙ্গি হামলা করবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। খালেদা জিয়াকে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় যেতে দেব না।’ প্রসঙ্গত, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট গত ৫ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচন না দেওয়া পর্যন্ত অথবা বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই পেট্রোল বোমার আগুন ও বাসে লাগিয়ে দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে মঙ্গলবার কুমিল্লায় বাসের ওপর ছুড়ে মারা পেট্রোল বোমায় নিহত হয়েছেন সাতজন। বিএনপি-জামায়াত জোট দেশকে অস্থিতিশীল করে অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতায় আনার পথ করতে চাইছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই স্বপ্ন দেখে লাভ হবে না। অলীক স্বপ্ন যারা দেখছে, যারা দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চায়, আমাদের রক্ত থাকতে তা হতে দেব না।’

তিনি বলেন, ‘একটা কথা বিএনপি ভুলে যায়…। কেউ কেউ ফোন করে। এই হয়ে যাচ্ছে। ইমারজেন্সি হয়ে যাচ্ছে। ইমারজেন্সি লাগবে কেন? আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে। কিভাবে এ ধরনের সন্ত্রাস দমন করতে হয়, আমরা জানি। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।’

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সুশাসন কায়েম করতে পারি, অবস্থা নিজেরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি, জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারব।’

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, টক শোতে যারা ‘উসকানি’ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না?

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যারা টক শো করে, তাদের বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া কে দেবে? তাদের টার্গেট তো আমি। কিছু লোক আছে, গণতান্ত্রিক পন্থা তাদের ভালো লাগে না। অসাংবিধানিক পন্থা এলে তারা ভালো থাকে, তাদের গুরুত্ব বাড়ে। তারা ব্যস্ত থাকে অসাংবিধানিক পন্থা আনা যায় কি না।’

তিনি আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, ‘যারা এই সন্ত্রাসী  কর্মকাণ্ড করে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে তাদের জামিনের ব্যাপারে সহায়তা যেন না করেন। কারণ, ওরা জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও মানুষ পুড়িয়ে মারার খেলায় মেতে উঠছে। দেশের সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে, বাস পোড়াচ্ছে, দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। এটা যাতে না করতে পারে সেজন্য দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পেট্রোল বোমা দিয়ে যে ভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, কত মা সন্তান হারা হচ্ছে, কত বাবা পুত্র কন্যা হারাচ্ছে, কত বোন ভাই হারাচ্ছে, এটা বেগম জিয়া বোঝেন না।’

তিনি বলেন, ‘তারা ভুলে গেছেন, অসাংবিধানিক ভাবে ক্ষমতায় যাওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না। এমন করতে চাইলে ফৌজদারি অপরাধে জেলে যেতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যে ভাবে দেশের সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মারছেন তা মেনে নেওয়া যায় না। এটা কোন রাজনীতি নয়, এটা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। সাধারণ মানুষকে প্রতিপক্ষ করে তাদের হত্যা করা অপরাধ। এজন্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো। কোথা থেকে বোমা আসছে, বোতল আসছে, পেট্রোল আসছে তা আমরা খুঁজে খুঁজে ব্যবস্থা নেবো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত রাজনীতি করছে না, সন্ত্রাস করছে, জঙ্গিবাদী কার্যকলাপ করছে। কোন মুসলমান একজন মুসলমানকে পুড়য়ে মারতে পারে না। আমরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি। যে ভাবে হোক এই সন্ত্রাস ঠেকাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে প্রচলিত আইন আছে, এটা যথাযথভাবে প্রয়োগ করে এই সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ঠেকাতে হবে। কোন প্রকার ছাড় দেওয়া  হবে না। দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, হত্যাকাণ্ড, নৈরাজ্য বন্ধ করা হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top