সকল মেনু

অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিল

Baikka Bil 03এম শাহজাহান আহমদ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : নীলাকাশে উড়ে বেড়ানো ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির কলরবে এখন মুখরিত মৌলভীবাজার জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হাইল হাওরের বাইক্কা বিল। বছরের এই সময়টা এলে শীত প্রধান অঞ্চল হিমালয়, সাইবেরিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত খেকে দল বেঁধে আসা নানা বর্ণের এসব অতিথি পাখি আসতে থাকে বাইক্কা বিলে। আবার শীত বিদায় নিতে শুরু করলে তারাও দল বেঁধে চলে যায় নিজ দেশে। এদিকে অতিথি পাখি আর হাওরের অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দেশ বিদেশের পর্যটকরা ছুটে যাচ্ছেন বাইক্কা বিলে।
মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে ১৮কি:মি: এবং পর্যটননগরী শ্রীমঙ্গল উপজেলা সদর থেকে ১২কি:মি: দূরে অবস্থিত হাইল হাওরের চাপড়া, মাগুরা, যাদুরিয়া বিল ও এর সংলগ্ন ডোবা এলাকা সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বাইক্কা বিল। সেখানে পাখি, জলজ উদ্ভিদ ও অন্যান্য প্রাণী সংরক্ষণ এবং বৃদ্ধির লক্ষে বাইক্কা বিলটিকে ২০০৩সালে সরকারী অভয়াশ্রম হিসাবে ঘোষনা করা হয়। বর্ষা মৌসুমে এই হাওরের আয়তন হয় প্রায় ১৪হাজার হেক্টর। আর শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৪হাজার হেক্টর। এদিকে প্রতিবছর শীত মৌসুম শুরু হলে দল বেধে সুদুর চীন, হীমালয়ান তিব্বত, সাইরেবিয়া থেকে এ বিলে আসতে শুরু করে পানকৈরী, কালোবক, সাদাবক, তিলা-ঘুঘু, পাতি-মাছরাঙ্গা, পাতি সড়ালি, রাজ সড়ালিসহ নানান প্রজাতির অতিথি পাখি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির বিচরণ, কিচির-মিচির শব্দ বাইক্কা বিলের রূপ-যৌবনকে বিমুগ্ধ করে তুলে। শীতের মাঝামাঝি সময় থেকে এ দৃশ্য দেখা যাবে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত। পুরো শীত এখানে কাটিয়ে এক সময় অতিথি পাখিরা পাড়ি দেবে নিজ গন্তব্যে। অথচ এই বাইক্কা বিল নিয়ে মাছ ও পাখি রায় যারা নিয়োজিত সেই রকরা উদাসীন। তারা নামকাওয়াস্তে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সরজমিনে না থাকার অভিযোগ রয়েছে। তারা প্রায়শ্বই দায়িত্ব অবহেলা ও নিজস্ব একটি চক্র সৃষ্টি করে লুটপাট করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে উদাসীনতায় দুঃস্কৃতিকারীরা বিষাক্ত ঔষধ ফেলে মাছ মেরেফেলে ছিল। এখন আবারো সেই চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে একটি সুত্রে জানা গেছে। সরকার এনিয়ে প্রয়োজনীয় প্রদপে গ্রহন করে ঐতিহ্যবায়ী এবিলটি রা করবেন এই দাবী করেন বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার মানুষেরা। এব্যাপারে স্থানীয় কেয়ার টেকার ও ক্যাইল নামীয় একটি সংস্থার অর্থায়নে নিয়োজিক বেসরকারী এর সাথে সরজমিনে গিয়ে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান- শীত মৌসুমের অপরূপ এই সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন বাইক্কাবিলে। অথচ এখানে পর্যটকদের জন্য নেই কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা। সুযোগ-সুবিধা করা হলে সরকারের রাজস্ব আয়সহ এলাকার উন্নয়ন হত।
এব্যাপারে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নারী/পুরুষ পর্যটকরা জানান- বাইক্কা বিলের মাঝামাঝি অংশে একটি তিনতলা বিশিষ্ট পাখি দর্শনাথী টাওয়ার এবং বিলের প্রবেশ পথে ইউএসএডির অর্থায়নে নির্মান করা হয়েছে একটি ইনফরমেশন সেন্টার কাম ভিজিটর সেন্টার। তবে বাইক্কা বিলে যাবার প্রায় ৩কিলোমিটার কাঁচা সড়কের বেহাল দশার কারনে দেশী বিদেশী দর্শনার্থীদের আনন্দ অনেকটাই ফিকে হয়ে যায়। এছাড়া সঠিক দিক নির্দেশনা,ট্যুর গাইডসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা না থাকায় পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ করলেও নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
এব্যাপরে জহিরুল ইসলাম,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক-মৌলভীবাজার জানান- বাইক্কা বিলের জীববৈচিত্র রা, খনন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।
অতিথি পাখির নিরাপদ এই অভয়াশ্রমকে পাখিদের উপযোগী করে সঠিক রক্ষনাবেক্ষন, পাখি শিকারীদের হাত থেকে অতিথি পাখিকে বাচিয়ে রাখা এবং বিলে যাতায়ত ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হলেও প্রতি বছর অতিথি পাখির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দেশী বিদেশী দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে । তাছাড়া এই সরকার বাইক্কা বিল রনা বেনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রদপে গ্রহন করে ঐতিহ্যবায়ী এবিলটি রা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার মানুষেরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top