সকল মেনু

‘খালেদাকে হুকুমের আসামি করা যৌক্তিক’

শেখ হাসিনানিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাা বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বাড়িঘর ছেড়ে অফিসে বসে হুমুক দিচ্ছেন। তার হুকুমেই মানুষ হত্যা শুরু করেছে, পেট্রোল ঢেলে মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। কাজেই হুকুমের আসামী হিসেবে তাকে আইনের আওতায় আনা যৌক্তিক। তবে আইন তার আপন গতিতে চলবে এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারি সংস্থা এটা যাছাই করে দেখবে এবং তারপর ব্যবস্থা নেবে।

সংসদে প্রশ্নোত্তরে বুধবার এবি এম তাজুল ইসলামের (বি-বাড়ীয়া-৬) এক সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

বর্তমান পরিস্থিতির জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা-তাজুল ইসলামের এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত দু:খজনক ব্যাপার ৫জানুয়ারির নির্বাচনের আগেও নির্বাচন বানচাল করার নামে একইভাবে ঠিক শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। সারা জীবনের জন্য অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। অনেক পরিবার আজকে ধবংসের মুখে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর পরিস্থিতির উন্নয়ন হয় এবং আমরা উন্নয়মুলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম।

দুর্ভাগ্য আমাদের এটাই, যখন বাংলাদেশের মানুষ একটু  শান্তির মুখ দেখতে শুরু করেছে, উন্নযন হচ্ছে, মুল্যস্ফীতি কমিয়ে ৬.১ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মানুষ যখন খেয়ে পরে, সুখে শান্তিতে আছে ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ কোন ইস্যু ছাড়া এই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা শুরু করেছে। ঠিক ২০১৩ সালে যে কাজ শুরু করে সেই একই কাজ  করে যাচ্ছে। কথা নেই, বার্তা নেই পেট্রোল ঢেলে মানুষ পুড়িয়ে দেয়া, পুড়িয়ে মানুষ মারা। উনি উনার ঘর বাড়ি ছেড়ে অফিসে থেকে হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যা করছেন। ৩০-৪০ জন মারা গেছে। এখনো অনেকে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

প্রধান মন্ত্রী বলেন, এটাই বড় প্রশ্ন কেন খালেদা জিয়া মানুষ হত্যায় নেেেমছে। কেন তিনি নিরীহ মানুষ, সাধারণ মানুষ, গরীব মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ যারা বসে ছড়ে, ট্রেনে ছড়ে তাদের ওপর এখন এ আক্রমণ চালাচ্ছে, এটা আমার বোধগম্য নয়।

শেখ হাসিনা বলেন, হ্যাঁ উনি (খালেদা) ওখানে বসে হুমুক দিচ্ছেন। তার হুকুমেই মানুষ এভাবে মৃত্যর ঢলে পড়ছে। অথবা পুড়ে অঙ্গার হচ্ছে। কাজেই হুকুমের আসামী হিসেবে তাকে আইনের আওতায় আনা এটাই হচ্ছে যুক্তি। তবে আইন তার আপন গতিতে চলবে এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারি সংস্থা তারা এটা যাছাই করে দেখবে এবং তারপর ব্যবস্থা  নেবে।

উন্নয়ন কর্মকান্ডে ভীত হয়ে অরাজকতা ও ও নৈরাজ্য:

এদিকে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে লিখিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী লিখিত জবাবে বলেন, বর্তমানে বিএনপি-জামায়াত সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে ভীত হয়ে দেশে নাশকতামুলক কাজ এবং অরাজকতা ও ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষের কোন সমর্থন না পেয়ে তারা আরো নাশকতামুলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, আমরা পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব এবং আনসার নিয়োগ করে  সন্ত্রাস ও নাশকতা দমনের প্রচেষ্টা করছি।

প্রধানমন্ত্রী জনগনের প্রতি আহবান জানিেেয় বলেন, এই সন্ত্রাসীদের  সেখানে পাবেন ধরে পুলিশে সেপর্দ করুন। আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীকে নাশকতার পুর্ব তথ্য সংগ্রহ করে জনগনের জানমালেল নিরাপত্তা বিধানে সহায়তা করারও আহবান জানান।

সরকারি দলের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর (চট্টগ্রাম-১৬)  প্রশ্নের জবাবে প্রধান মন্ত্রী  আরো বলেন, আপনারা জানেন বিএনপি-জামায়াত অত্যন্ত বিবেক বর্জিতভাবে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে, কোথাও যাত্রীবাহী গাড়ীতে গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। নারী শিশুসহ নিরীহ সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করছে। সম্প্রতি একজন গর্ববতী মহিলা তাদের নাশকতার শিকার হয়েছেন। তার শরীরের অধিকাংশ জায়গা পুড়ে গেছে এবং গর্ভের শিশুটি মারা গেছে। বিএনপি জামায়াতের এসব পৈশাচিক হত্যাকান্ড ১৯৭১সালের পাক হানাদার বাহিনীর নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে।  এটা কোন রাজনীতি? এরকম কাজে যারা লিপ্ত তারা কি মানুষ? জনগনের জানমাল রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব সরকারের। আমরা পুলিশ বিজিবি, র‌্যাব এবং আনসার নিয়োগ করে এসকল সন্ত্রাস ও নাশকতা দমনের প্রচেষ্টা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশ বিজিবির বিশেষ পাহারায়  বাস ও ট্রাক চালানো, রেললাইন পাহারা দেয়ার জন্য আনসার নিয়োগসহ নাশকতা মোকাবেলায় সর্বাত্মক চেষ্টা সরকার করছে। এতদসত্ত্বেও চোরাগোপ্তা নাশকতা চালানোর চেষ্টা বিএনপি জামায়াত করছে।  আমি এই মহান সংসদের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক জনগনকে আহবান করছি এই সন্ত্রাসীদেরকে যেখানে পাবেন ধরে পুলিশে সোপর্দ করুন। আপনারা আইন শৃংখলা বাহিনীকে নাশকতার পুর্ব তথ্য সরবরাহ করে জনগনের জানমাল নিরাপত্তা বিধানে সহায়তা করুন।

দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যথার্থ প্রশিক্ষিত পুলিশ বাহিনী প্রয়োজন মন্তব্য করে পুলিশ বাহিনীকে অধিকতর কাার্যকর করার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে তিনি  এই সরকারের গত মেয়াদে পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোত ৩১হাজার ৭৪৪টি নতুন পদ সৃষ্টি করা এবং পুলিশের আরো ৫০ হাজার জনবল বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার  জনগনের জানমালের বিষয়ে সর্বদা তৎপর রয়েছে। জনগনের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নতিই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তিনি বলেন, গত এক বছরে দেশে সুন্দরভাবে চলছে। সকল ক্ষেত্রে আশাতীত উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ পৃথিবীতে একটি রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই সময় আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশে এমডিজি বাস্তবায়নসহ সকল কাজে প্রশংসিত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top